somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গান শোনার বিড়ম্বনা

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গান শোনা এখন সহজ - মোবাইল,ল্যাপটপে যখন তখন ইচ্ছেমত গান শোনা যায়।তাইএই কালে আগের দিনের গান শোনার জন্য কত রকম সমস্যা,কত প্রতীক্ষা, সেসব কথা মনেপড়লে মনে হয় সে সব প্রাগৈতিহাসিক।তারই একটা ঘটনা-

এক কিশোর ছেলে ,এক রবিবারের দুপুরে অস্থির হয়ে আছে, কারণ একটু পরেই শুরু হবে আকাশবাণী কলকাতার 'অনুরোধের আসর' -কোথায় শুনবে ! চৈত্র মাসের দুপুর,বাইরে চড়া রোদ,এক ফালি মেঘও নেই,ঘন নীল আকাশের চিল গুলো ডাকছে কান্নার সুরে, আর ছেলেটি তখন দাদার সাইকেল চুপিসারে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলো- তার গান শোনার অভিযানে।

প্রথমে পাড়ার এক বন্ধুর বাসায়, যাদের এক বিশাল মারফি রেডিও আছে। কিন্তু ওখানে গিয়ে শোনে সে বাসায় নেই। তারপর এক পরিচিতের বাসায়,সেখানে সুবিধে হলো না । পরে গেল রুচিতা নামে, মফস্বল শহরের একটা রেস্টুরেন্টে, দুপুরবেলায় তাদের রেডিওতে বাজতো অনুরোধের আসর । কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখে সব সিনিয়র দাদাদের ভিড়,সবাই এসেছে একই উদ্দেশ্যে। তাদের কেউ কেউ আবার কাগজ পেনসিল নিয়ে গানের সিরিয়াল লেখার যোগাড় করছে। ওখানে তার আপন দাদাও থাকতে পারে ভেবে আর ভেতরে ঢোকেনি।

মন খারাপ করে সে যখন ফিরে আসছে, শহরের শেষ মাথায় ঘাগড়া নদীর কাঠের ব্রিজের পাশ দিয়ে, হঠাৎ শুনতে পেল রাস্তার গা ঘেঁষে একটি ঘরের জানলা দিয়ে সেই অনুরোধের আসর এর গান ভেসে আসছে ..'কাজল নদীর জলে, ভরা ঢেউ ছলছলে, প্রদীপ ভাসাও কারে স্মরিয়া,সোনার বরণী মেয়ে বল কার পথ চেয়ে,আঁখি দুটি ওঠে জলে ভরিয়া .. । মুহুর্তে সাইকেল থামিয়ে সে ওই জানলাটা পেরিয়ে দরজার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো । সেটা ছিল একটি বাসার বাইরের ঘর, একপাশে একটা দরজা, যা বন্ধ ছিল, তার সামনে বাইরের দিকে ঘরে ঢুকবার সিঁড়ির ধাপ,দু'পাশে সিমেন্ট বাঁধানো বসার জায়গা। সে তার পাশেই সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। তখন দুপুরের তীব্র রোদে মুখ পুড়ে যাচ্ছে,তবু ভ্রুক্ষেপ নেই। এমন মনোযোগ দিয়ে শুনছিল যে কখন দরজাটা খুলেছে টের পায়নি। একজন মাঝবয়সী লোক দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন_-
-কাকে চাই ? ছেলেটি হঠাৎ এই প্রশ্নে কি বলবে বুঝছিল না, কারণ তার মন ছিল গান শোনায় মশগুল। তাই মুখ দিয়ে শুধু সত্য কথাটাই বেরিয়ে গেল,
-‘গান শুনছি।
লোকটি উত্তর শুনে এতই অবাক হলো যে,প্রায় অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে ভ্রু কুঁচকে হেড়ে গলায় আবার জিজ্ঞেস করলেন, -'কি শুনছ ?'
উনার গলায় এমন একটা উষ্মা ছিল যে দ্বিতীয়বার একই কথা বলার সাহস হল না, তাই এবার আর কথা না বলে যে জানলা দিয়ে যে গানের সুর ভেসে আসছিল সেইটা দেখিয়ে বুঝিয়ে বলতে চাইল, ওই যে গান হচ্ছে, তাই শুনছি।

কিন্তু সে খেয়াল করেনি, সত্যি বলতে কি দেখেওনি, যে ওই জানলায় দাঁড়িয়ে ছিল একটি মেয়ে । হয়ত ওর দাঁড়াবার ঠিক পরেই এসেছে। ছেলেটি ছিল তার সমান্তরালে দরজার কাছে । লোকটা এগিয়ে জানলার দিকে তাকিয়েই ওর দিকে আবার ফিরে ক্রোধে কটমটিয়ে চাইল । তিনি ছেলেটার কথায় বিশ্বাস তো করলেনই না, বোধহয় উত্তম মধ্যমের জন্য হাতে প্রয়োজনীয় কিছু একটা খুঁজছিলেন । হাতের কাছে পেলে হয়ত কিছু ঘটেই যেত, তবে ছেলেটির ভাগ্য ভাল সেই মুহূর্তে কিছু পান নি। যাই হোক, একটা কিছু ঘটবার আগেই পেছন থেকে আরেকজন উঁকি দিলেন,
-কেরে সনু ?' বলতেবলতে যিনি ভেতর থেকে বেরিয়ে এলেন ,তিনি একজন বয়স্ক মহিলা, হাতের শাঁখা,কপালে সিদুর ।
-দেখ না,ওই ছোঁড়াটা জানলার দিকে হাত দিয়ে কি দেখাচ্চে আর বলছে গান শুনছি। হতচ্ছাড়া,বেহায়া' ।
উনার ভুলটা ধরিয়ে দিতে ছেলেটা দূর্বল স্বরে প্রতিবাদ করে বললো,'না আমি তো ’জানলা দিয়ে গানের যে আওয়াজ আসছিল সেই কথাটা বলেছি।‘ কিন্তু তিনি এবারও বিশ্বাস করলেন না। খপ করে ছেলেটার হাতটা ধরে টেনে ঘরে ঢুকালেন। ওর সাইকেলটা কাত হয়ে পড়ে গেল।

ইতিমধ্যে আরও কয়েকজনের কৌতুহলী ভীড় । কেউই বিশ্বাস করছে না যে ,ছেলেটা নেহাৎই ভেতরে বাজতে থাকা রেডিওর গান শুনতে দরজায় দাঁড়িয়েছে। মেয়েটার জানলায় দাঁড়ানোর ঘটনা ছিল কাকতালীয় ব্যাপার। তার সাথে কোন ওর সম্পর্ক নেই। এরমধ্যে ভেতর থেকে আরও কয়েকজন বেরিয়ে এল । সবাই মিলে বিষ্ময়ে দেখছে, একটা রোদপোড়া ছেলে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে গান শুনবার কথা বলে বদ মতলবে কিছু করছিল । সে যেন চিড়িয়াখানার এক অদ্ভুত জীব। সবাকার কৌতূহলী দৃষ্টি তার দিকে।
এবার সেই শাখা পড়া মহিলাটি বললেন-
- সনু, ওকে কিছু করিসনে,ছেড়ে দে। এদিকে নিয়ে আয় । গান শুনছিল বলছে, সত্যি হতেও তো পারে ।'
এবার সবাই বেশ মজা পেয়ে গেল। ছেলেটা একবার ভাবলো দৌড়ে পালাবে। পরে মনে হলো ,ওভাবে পালিয়ে গেলে সত্যি সত্যি যদি চোরটোর ভাবে,কি কেলেঙ্কারী না হবে । তখন আরও সমস্যা।
- তুমি গান শুনতে ভালবাস।
- হ্যাঁ।
-গান শিখ কোথাও ?
-না।
-বাসায় নিজে শিখ?
-না,শেখানোর কেউ নেই, হারমনিয়ম নেই।
-কোন গান ভালবাস, কোন শিল্পীর নাম জান ?
এমন করে সব জিজ্ঞেস করছেন যেন চোর ধরা পড়েছে বামাল সমেত, তার জেরা চলছে। ভয় পেয়ে কোন শিল্পীর নামও মনে আসছে না। গলা শুকিয়ে কাঠ। কোন মতে সে বলল-,
- মান্না দে' ।উত্তর শুনে একজন টিপ্পনি কাটলো
- ওই নাম তো সবাই জানে। অন্য দু একটা নাম বলো তাহলে বুঝব'।

ছেলেটি তো একটি নয়,দশটি নাম বলতে পারত। শুধু নাম নয়, কোন গান কোন সালের পূজোয় তার রেকর্ড বেরিয়েছে তাও জানত। ওর স্কুলের রাফ খাতায় সব টোকা থাকে। কিন্তু সেই মুহূর্তে ভয়ে সব গুলিয়ে ফেলছে। প্রাণপনে মনে করার চেষ্টা করে কোন মতে বললো- ,সতীনাথ মুখোপাধ্যায়,একটা বলেই এরপরই পর পর নাম মনে আসতে লাগলো, প্রতিমা বন্দোপাধ্যায়, সুবীর সেন, উৎপলা সেন, তরুণ ----
এবার সবাই একটু নড়ে চড়ে বসল। চোর হলে তার এই নামগুলো বলা একটু মুশকিল। গান নিয়মিত শোনে যারা,তারা ছাড়া এসব নাম জানার কথা না । একজন তবু বললো,
- যদি এতই গান শোনার নেশা তো নিশ্চয়ই গানও কিছু গাইতে জান। তাহলে একটা গান শোনাও, বুঝব ।সবাই তাতে সায় দিল।

এবার ছেলেটা বিপদে পড়ল। তার এই একটা সমস্যা গান শোনাতে বললে পারে না। কারণ সে তো গান জানেই না,আর পুরো কোন গান তো নয়ই । তাছাড়া কোনদিন গান তো শেখেনি। কোথাও গায়ও নি। এমনি বাড়ীতে মায়ের শাড়ী দিয়ে স্ক্রীন টাঙিয়ে ঘরের ভিতর গান গান খেলেছে । সে কি আর গান ,ওতো সেই খেলাই, বাইরে লোকের কাছে শোনানোর মত কিছু নয়?কিন্তু এদের হাত থেকে বহাল তবিয়তে ফিরতে হলে একটা গান শুনিয়ে প্রমান করতে হবে সে চোর নয় ,বা মেয়ে দেখতে আসে নি । অন্য কিছু করারও উদ্দেশ্য ছিল না।

ইতিমধ্যে সে ঘেমে নেয়ে উঠেছে,ঠোট শুকিয়ে গেছে জলের তেষ্টাও পেয়েছে,কিন্তু বলতে পারছে না। বাইরে, চৈত্রের কড়া রোদ ,ঘরে গুমোট গরম,। তবু এর মধ্যেই বাঁচবার খাতিরে গান গাইতেই হবে। একটা গান সে জানে। কিন্তু তা এই গ্রীষ্মের আবহাওয়ার বিপরীত । শীতকালের ওয়াজ গ্রীষ্মকালে দেবার মত । তবু মরিয়া হয়ে বর্ষার একটা গানই ধরলো,কারন এটিই একমাত্র গান যে সে পুরোটা জানে -'এলো বরষা যে সহসা মনে তাই, রিমঝিম রিমঝিম গান গেয়ে যাই'। - গলা দিয়ে স্বর ঠিকমত বেরুচ্ছে না,,তবু ওর মধ্যেই গেয়ে গেল-

এরপর হঠাৎ ,কি জানি একটা অলৌকিক ব্যাপার ঘটলো । সত্যি সত্যি কোত্থেকে পূবের বাতাস এসে ছড়িয়ে দিল একটা শীতল পরশ পুরো ঘরটায় । আসন্ন বৃষ্টির পূর্বাভাস। ইতিমধ্যে ঘরের পরিবেশটাও বদলে গেছে। গানটা কেমন হলো সেটা বলার দরকার নেই। যা হলো,তা গান বা বৃষ্টির কারণে যাই হোক ,পুরে ব্যাপারটায় একটা শান্তির প্রলেপ বুলিয়ে দিল । যেন 'বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি'।
ইতিমধ্যে অনুরোধের আসর কখন শেষ হয়ে জলহাওয়ার খবর হচ্ছে। চোরটা ঠিকঠাক চুরি করতে না পারায় উত্তেজনাটা অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়। অনেকেই এবার ঘর ছেড়ে চলে গেল। বয়স্ক মহিলাটিও উঠে কাকে যেন ডেকে জল দেবার কথা বলল। পরে কিশোরটির দিকে তাকিয়ে বললো, 'বাবা,তুমি কিছু মনে করো না। সনু টা এরকমই পাগল'। তারপর নিজের মনেই বললেন, ভর দুপুরে এরকম কেউ চুরি করতে আসে নাকি-

ঘরটা একটু ফাঁকা হতেই জলের গ্লাস আর সন্দেশ নিয়ে এল যে,সে ওই জানলার পাশে দাঁড়ান মেয়েটি । যাকে নিয়ে এত কান্ড, তাকে সে এই প্রথম দেখল । মেয়েটা তার দিকে জল দিতে এগিয়ে এসে হঠাৎ কেন জানি খুব কাছে এসে আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,-
'তুমি সত্যি আমাকে দেখতে পেয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলে ?'

এতক্ষণ সবার বিদ্রুপ,টিপ্পনি,জেরার পর এই প্রথম সলজ্জ সহানুভূতির কন্ঠ শুনে যেন বাইরের বর্ষার জল যেন ছেলেটার দু’চোখে ভর করলো। কিন্তু এবারও কি বলবে ভেবে না পেয়ে, শুধু ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে এই প্রথম একটা মিথ্যা বলে ফেলল : হ্যাঁ ।


সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:১২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×