ডি.কে ব্রাঞ্চের সিনিয়র অফিসার বাহাস কটকটিয়াকে বেশ ভালো লাগে মিস. পম্পার। তিনি বসের মেয়ে এবং ক্যাশ অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন। বাহাস সবসময় দূরত্ব রেখে চলে। বাহাসের রিলিজিয়নের ঘরে লেখা আননেমড্। শুধু এটুকু জেনে গেলেই ভালোবাসতে বাঁধা থাকে না পম্পার। সুযোগ হয় না, তাছাড়া বাহাসের এখানে কোন বন্ধুও নেই তাই কোন খবর নেয়া সম্ভব নয়।
একদিন একটা সুযোগ এসে গেলো, বাহাস আর মিস. পম্পা বেড়িয়েছে একটা কাজে, পথেই মন্দির দেখে, পম্পা পার্সটা বাহাসের হাতে দিয়ে বললো, দাঁড়াও আমি প্রণাম টা সেরে আসি। গাড়ি থেকে নেমে লোভাতুর পূণ্যার্থীদের পাশে অনেকটা না ভালোলাগা ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রইলো বাহাস কটকটিয়া। ফিরে এসে পম্পা বললো, তুমি ভগবান-টগবান বিশ্বাস করো? বাহাস নাক ঘষে বললো সঠিক বলতে পারবো না।
গাড়ি ছেড়ে একটু দূরে দাড়িয়ে পম্পা বলে উঠলো, আচ্ছা তুমি কোন জাতের মানুষ গো?
-আমি কু-জাতের মানুষ।
-এটা আবার ক্যামন?
-সব থেকে ভিন্ন।
-ও সেজন্যই তুমি কখনো ঈদ এলে ছুটি নাও না। পূজো এলেও বাড়ি যাও না। বৌদ্ধ পূর্ণিমাতে ও অফিসেই থাকো। শুধু এক ‘বড়দিন’ এলে তোমাকে পাওয়া যায় না। তখন অফিস ছুটি এবং তুমি নিরুদ্দেশ। এই সব ভেবে নিলে মানে দাঁড়ায়, তুমি ক্রিশ্চিয়ান। তাছাড়া তোমার নামের টাইটেল টা ও অদ্ভুত ‘কটকটিয়া’।
- না ম্যাম, ‘বড়দিন’এ নিরুদ্দেশ থাকা মানে ক্রিশ্চিয়ান হয়ে যাওয়া নয়। ধর্মকে অবমাননা করি না, আবার ধর্মের কাছেও থাকি না। শুধু বিপদে বা স্বার্থের জন্য কিংবা স্বর্গ লাভের আশায় কল্পিত ঈশ্বরের সামনে নতজানু ভান ধরে দাড়িয়েও থাকি না।
-সে তুমি যাই বলো- বাহাস কটকটিয়া। যেহেতু তুমি ডিসেম্বরের ২৫ থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যাও সেহেতু তুমি ব্যাপ্টিস্ট নয়তো ক্যাথলিক। ওদের কথা ফুরোবার আগেই মোবাইল রিং এসে গেলো। বাহাস অন্য ব্রাঞ্চে যাবে। অগ্যতা পম্পা একাই গাড়িতে উঠে বসলো। জানালার সামনে দাড়িয়ে বাহাস বললো আপনি তো চলে যাচ্ছেন একটা কথা বলবো?
-বলে ফেলো কটকটিয়া।
-আমি ক্রিশ্চিয়ান নই, পঁচিশ তারিখটা আমার জন্ম তারিখ আর সেজন্যই নিরুদ্দেশ থাকি।
গাড়ি যখন ফুল স্পিডে এগিয়ে যাচ্ছিল, পম্পা ভাবছিল, ধর্ম ধুয়ে তো আর পানি খাবো না। এ চিন্তার জলে ডুবে না গিয়ে বাহাসকে ভালোবেসেই ফেলি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮