আকিব; দ্যা কিলার। ধারাবাহিক থ্রিলার
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
®
নাইন এমএম পিস্তলটা ভালো করে পরিষ্কার করে যায়গা মত রেখে দিল আকিব। বড় কোন এ্যসাইনমেন্ট এ যাওয়ার আগে মালটা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা তার রুটিন ওয়ার্ক। অবশ্য এই অ্যাসাইনমেন্টকে 'বড়' মনে হবার কারন নেই। তবু সতর্ক আকিব। জীবনের কোন মিশনে ভুল করেনি, করতেও চায় না।
®
হোটেল বয় পেপার দিয়ে গেলো। যাওয়ার সময় একটা শব্দ উচ্চারণ করেছে, ‘খবর জুড়াই যাইবো, গরম গরম পইড়া লন’। এটা একটা ম্যাসেজ, এর মানে পত্রিকার ভেতর একটা ছবি আছে। দেখে নেন।
পেপারটা হাতে নিলো আকিব। পঞ্চম পৃষ্ঠায় এ ফোর সাইজের একটা ছবি। স্যুট টাই পরা হাস্যোজ্জল এক ভদ্রলোক। আকিবের ঠোঁটের কনে বিদ্রূপের হাসি জমলো। আজকের সূর্যোদয় তোমার জীবনের শেষ মিস্টার...।
®
রাতে চিটাগাং এসেছে আকিব। কাঁধে ময়লা একটা টুরিস্ট ব্যাগ। দেখলেই যাতে বোঝা যায় সপ্তাহ খানেক হল ভ্রমন করছে সে। উঠেছে পার্টির ম্যাসেজ দেওয়া হোটেলে। এই অ্যাসাইনমেনটা অন্য সবগুলোর চেয়ে একটু অন্য রকম। একটা কাজ করছে কিন্তু সে নিজেও জানেনা পরের পদক্ষেপ কি হবে। কাজের ভেতরেই ম্যাসেজ পেয়ে যাচ্ছে পরের ধাপ সমন্ধে। এখন সে দুপুরের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে। লাস্ট মেসেজে তাই বলা হয়েছে। আবির ধারনা করছে দুপুরে সে সাবজেক্টের অ্যাড্রেস পাবে। এত শক্তিশালী ও সঙ্গবদ্ধ একটা চক্র কার পিছে লেগেছে, কেন লেগেছে, দোনিয়া ছাড়া করানোর জন্য তাকেই কেন ভাড়া করেছে একবার ভাবনায় এসে গিয়েছিলো। কিন্তু কাজের বাইরে এক চুল ও ভাবতে চায়না আকিব।
®
নেই কাজ তো খই ভাঁজ। এক ঘনটা জিমে কাটিয়ে শাওয়ার সেরে একটু রেস্ট নিচ্ছে। চোখ বুজে স্মৃতিতে ডুব দেওয়া যায়। কি নিয়ে ভাববো? আচ্ছা মিতু কি এখনো চিটাগাঙয়েই থাকে? দ্বিতীয় বারের মত চিটাগাঙয়ে এসেছে আকিব। প্রথম বার মিতুর সাথে এসেছিলো। প্রচণ্ড জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকছে মিতু। রুমমেট ডেকে নিয়ে বলল ভাইয়া মেয়েটাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন, মনে হয়না বাঁচবে। মরা মেরে খুনের দায়ে পরতে চাচ্ছিলো না কেও। ক্লাসের সবাই নানান অজুহাত দেখিয়ে সরে পরলে আকিবকেই শেষমেশ মিতুকে বইয়ে চিটাগাং নিয়ে আসতে হয়েছিলো। নির্জন ট্রেনের বগীতে মিতু আকিবের হাত ধরে ঘুমিয়েছিল সারা পথ। আকিবও হাত ছাড়ায় নি। মুত্র থলির উপর প্রচণ্ড চাপ গিয়েছিলো আকিবের। তবু হাত ছাড়েনি সে। কাঁপা গলায় কয়েকবার বলেছিল, 'মিতু আমার হাত ধরে থাকবি, সারাজীবন'? মিতু কোন কথা বলেনি। বলার অবস্থায় ছিল না সে।
®
ভেতর থেকে লক করা দরজা নিঃশব্দে খুলতে খুব একটা ঝাক্কি পোহাতে হল না আকিবের। এ সব কাজ সে নিখুদ ভাবে করে। দুপুরের খাবার মেন্যু কার্ডের সাথে সরবরাহ করা ঠিকানা মতই এসেছে একিব। পিছন পকেট থেকে সাইলেন্সার বের করে রিভাল্ভারের নলে সেট করে নিলো। পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন যেন কোন শব্দ না পায়। ডাইনিঙয়ের বাম পাশের রুমে শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে তার সাবজেক্ট। অফিস থেকে ফিরে সে দশ মিনিট শুয়ে থাকে। কর্পোরেট পলিটিক্সের কবলে পরে অল্প বয়সে সরে যেতে হচ্ছে চট্রগ্রামের উদীয়মান সফল এই ব্যাবসায়িকে। বিড়ালের মত নিঃশব্দে তার রুমে ধুকলো আকিব। ‘শুধু ব্যাবসায়িকেই মারতে হবে, বাড়ীর একটা মাকড়শারও যেন আঁচর না লাগে’ মেসেজটা পেয়েই বুঝেছিল খুব আপন কেও তাকে মারতে চাইছে। সম্ভবত শশুর পক্ষের কেও। ঘুমন্ত মানুষটার বুকে পিস্তক তাক করেছে আকিব। লেজার লাইটটা বুকের বাম সাইডে স্থির। ট্রিগার টানলেই হার্টটা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যাবে। চোয়াল শক্ত করেছে আকিব। আচমকা রুমের লাইট জলে উঠলো, ‘শর্ষে তেলের শিশিটা কিছুতেই খুলতে পারছিনা, খুলে দে—বে--’ বলে থমকে গেলো একটা নারী কণ্ঠ। অপ্রস্তুত আকিব দ্রুততার সাথে পিস্তল ঘোরালো নারী কণ্ঠকে লক্ষ্য করে। লেজার লাইট এবার নারী কণ্ঠের দুই চোখের মাঝ খানে। সময় যেন থমকে গেছে। পেশীতে ঢিল পড়েছে খুনির।কাঁপা কাঁপা গলায় আকিব বলল, 'মি-ম-মিতু... তুমি'?
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা
ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা
সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন