দৃশ্য-১
চরিত্র- অনিক, কয়েকজন পিকেটার, অবরোধ বিরোধী শান্তি পূর্ণ মিছিলকারী, পুলিশ।
( স্কুল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ভয়ে ভয়ে হাঁটছে অনিক। পিকেটিং চলছে, অবরোধ বিরোধী মিছিল চলছে, পুলিশ সতর্ক। পিকেটার, পুলিশ ও শান্তিপূর্ণ মিছিল কারীদের ভেতর দুই মুখি সংঘর্ষ শুরু হল কয়েকটা ককটেল ফাটার মধ্য দিয়ে। দিগবিদিক ছুটে পালাচ্ছে সবাই, ছুটে পালাচ্ছে অনিক। একটা পেট্রোল বোমা এসে ঝলসে দিলো অনিক কে।)
দৃশ্য-২
চরিত্র-অনিক, বাবা মা, নার্স, ডাক্তার
স্থান- বার্ন ইউনিট, ঢামেক।
(অনিকের চোখ দুটি নষ্ট হয়ে গেছে)
অনিক- বাবা, আমার বইগুলো ঠিক আছে? পুড়ে গেলে কিন্তু নতুন এক সেট কিনে দিতে হবে?
বাবা- কান্না
অনিক-ডাক্তার আমার চোখ ভালো হবে না? আমি পরীক্ষা দিতে পারবো?
ডাক্তার- কান্না।
অনিক- মা আমার চোখ ভালো হবে? আমি কি অ্যাংরি বার্ড খেলতে পারবো?
মা- কান্না।
দৃশ্য-৩
চরিত্র- দেশ নেত্রী, জন্য নেত্রী, ডাক্তার, অনিকের বাবা-মা।
স্থান-অপারেশন থিয়েটার
জন নেত্রী- আমি ক্ষমতা থেকে নেমে গেলে অরাজকতা সৃষ্টি হত না, পেট্রোল ফুটতো না, অনিকের চোখ নষ্ট হত না। আমার চোখ দুটি নিয়ে অনিকের চোখে লাগিয়ে দেন ডাক্তার।
দেশ নেত্রী- আমি আন্দোলনের ডাক না দিলে পিকেটিং হত না, পেট্রোল ফুটতো না, অনিকের চোখ নষ্ট হত না। নিজেকে কি ভাবেন অবৈধ প্রধান মন্ত্রী? দেশ আপনার একার? অনিক আপনার একার? এ দায় আপনার একার ? আমার কি শুধুই বালির ট্রাক? ডাক্তার সাহেব, আমার চোখ দুটি নিয়ে অনিকের চোখে লাগিয়ে দেন। অনিক পরীক্ষা দিক। গেইমস খেলুক। স্বপ্ন দেখুক।
জন নেত্রী- বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু দেশ নেত্রী? বেশি ঝামেলা পাকালে ফখরুলকেও আটকাবো। রিজভিও পালিয়ে পার পাবেনা। ডাক্তার, আমার চোখ নেন। হারি আপ।
দেশ নেত্রী- মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে আমাকে চক্ষু দান থেকে সরাতে পারবেন না এনশাল্লাহ! খাবার বন্ধ করে দিয়েছেন, বিবেক বন্ধ করতে পারেন নাই। ডাক্তার, আমার চোখ না নিলে ক্ষমতায় এসে আনাকে রাঙ্গুনিয়ায় পাথ্যে দেব বেয়াদপ কোথাকার।
ডাক্তার- ম্যামস একটা কাজ করলে কেমন হয়? আপনারা দুজন একটা একটা করে দুইটা চোখ দিলেন? আপনারাও রাজনীতি করতে পারবেন আনিকও আলো ফিরে পাবে?
দৃশ্য-৪
চরিত্র-অনিক, বাবা মা, ডাক্তার, দেশ নেত্রী, জন নেত্রী।
স্থান-হাসপাতাল।
ব্যান্ডেজ খোলা হল অনিকের।
ডাক্তার- এই যে মাস্টার অনিক, ধীরে ধীরে চোখ খোল তো বাবা।
অনিক প্রচণ্ড কষ্টে চোখ খোলার চেষ্টা করে ব্যার্থ হল। কপাল ভাঁজ হয়ে গেলো তার। চোখ বন্ধ করে আবার চেষ্টা করলো ধীরে ধীরে...
গাড় অন্ধকার ধীরে ধীরে দূর হচ্ছে। সামনে তাকিয়ে অনিক আবছা আবছা দেখতে পাচ্ছে একজন গোলাপি শাড়ি আরেকজন রঙিন জামদানি শাড়ির উপর চাদর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
দাঁড়ানো দুজনের চোখে মুখে উৎকণ্ঠা। দুজনেরই এক চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে থুতুনিতে ঠেকেছে, আরেক চোখে ব্যান্ডেজ......।
(ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে, পুর্ব দিগন্থে সূর্য উঠেছে...)
(রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়েছি অনেক আগেই। এটা নন রাজনৈতিক একটা শর্ট ফিল্মের স্ক্রিপ্ট। কেও চাইলে বানিয়ে নিতে পারেন অথবা স্পন্সর পেলে আমিই বানাবো)