somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নট আ রিভেঞ্জ! স্টোরি

১৬ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেরিতে আছি, গাড়ির ভেতরে না, বাইরে দাড়িয়ে কথা বলছি, মুঠোফোনে,
এ গাড়ি ও গাড়ি, বাইক ভ্যান এর ফাক গলে এলোমেলো হাটছি আর কথা বলছি
প্রেমিকার সাথে।

হকারের চিৎকার চেচামেচি, আখের রস বের করার ইঞ্জিন, মানুষের কোলাহল, ফেরীর ইঞ্জিন, পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ট্রলারের শব্দ, টিপটিপ বৃষ্টি, কানে প্রিয়তমার মধুর কন্ঠ, সব ছাপিয়ে মনোযোগ কেড়ে নেল একটা মুখ, খানিক চেনা মুখ।

চোখে চোখ পড়তেই দৃষ্টি সরিয়ে নিল, আমি না চিনলে ও আমাকে ঠিক চিনেছে বলে ভ্রম হোলো।

আমি একজন ব্যাংকার, পেশায়, ব্যক্তি জীবনে প্রচণ্ড অগোছালো একজন মানুষ, বন্ধুমহলে "অস্বাভাবিক" মানুষ হিসেবে বেশ সুনাম আছে, ওরা এলিট নামে ডাকে।

ফেরিতে ওঠলেই কিছু খাওয়ার ঝোক আসে, যেটাকে আমরা বলতাম আজে বাজে খাবার, যেমন বিভিন্ন ভাজা পোড়া, আমড়া চালতার আচার, এখন অবশ্য এটাকে আমরা স্ট্রিট ফুড নামেই চিনি, সে যাহোক, আমার কাছে সেরা ঐ আজে বাজে খাবার, যদি ও ডাক্তার নিষেধ করে, তার কাজ নিষেধ করা, আমার কাজ তার নিষেধ সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়ে অমান্য করা।

আর চা, মাস্ট!
না খেলে মরেই যাব, স্রেফ মরে যাব, ব্রিটিশদের ধন্যবাদ দিতেই হচ্ছে, এত সুন্দর একটা পানীয়র সাথে আমাদের পূর্বপুরুষদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।

ফেরী এপারে চলে এসেছে, গাড়ী ছেড়ে দিল, বাইকগুলো আগেই নেমে পরেছে ফেরি থেকে, আমার পরিচিত মুখ ও নিশ্চিত বাইকে সওয়ার হয়েছে, ফেরির একমাত্র বাসের যাত্রী আমি, এখানে সে যেহেতু নাই।

গাড়িতে উঠে কানে হেডফোন, মনে গান...

খানিক দূরে যেতেই আচমকা গাড়ি থেমে গেল, ছেদ পড়ে গেল গানে...

চোখ খুলে কান ফ্রি করে বুঝলাম এক্সিডেন্ট হয়েছে, এ রাস্তায় ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা আর বাইকাররা যেভাবে বাইক চালায়, তাতে দুর্ঘটনা হওয়াটা ই বরং অস্বাভাবিক।

জানালা গলে মাথা বের করে তাকালাম, সেই পরিচিত মুখ, খানিক, মুখটা আর ও বেশী অপরিচিত লাগছে...

বাস থেকে নামলাম, ধীর স্থির ...

কাছে গেলাম, খুব একটা লাগে নাই, দুই চার জায়গায় লেগেছে, ছিড়ে গেছে কনুই, হাটু, রক্তাক্ত খানিক, বাট লোকটা খুব ট্রমাটাইজড হয়ে গেছে, অতীব স্বাভাবিক, মটর বাইকের দুর্ঘটনা প্রানঘাতী, এ যাত্রায় হয়তো আসলেই বেচে গেছেন...

বাইকার ও রীতিমত কাপছে, ভয়ে আতংকে, বাইক চালানোর অবস্থা ওর নেই, ওর হাতে পায় জখম হয়েছে, বাজে ভাবে, যেন পুরাই সিদুর লাগানো হইছে, অতীব যত্ন করে!

নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলাম, পরিচয় দেয়ায় ডাক্তারেরা অতি দ্রুত আমাদের সেবা নিশ্চিত করলেন, ধন্যবাদ আমার এবং আহত ব্যক্তির পেশাকে, ধন্যবাদ, এ রাষ্ট্র যন্ত্রকে, সর্বাধিক ধন্যবাদ এ সমাজ ব্যবস্থাকে, যে সমাজ ব্যবস্থা কতিপয় পেশার জন্য নিশ্চিত করেছে বাড়তি সম্মান।

ফ্ল্যাশব্যাকঃ ১

ঃ আসসালামু আলাইকুম, জজ্ব সাহেব কি আছেন?
সহকারীঃ জ্বী আছেন।
ঃ তাকে বলুন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক এলিট তাকে সালাম দিয়েছেন।
সহকারী রুমে ঢুকে আবার বের হলেন।
সহকারীঃ জজ্ব সাহেব আপনাকে ডাকছেন।
ঃ আসসালামু আলাইকুম, আসতে পারি
ঃ জ্বী আসুন, বসুন।
ঃ আমি এলিট ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, সদ্য জয়েন করলাম এখানে, সবার সাথে পরিচিত হচ্ছি, আপনার সাথেও পরিচিত হতে এলাম।
ঃ ভালো, পরিচিত থাকা ভালো, আমি অবশ্য জবের কারণে ই খুব একটা কারো সাথে মিশি না, শুধুমাত্র কৃষি কর্মকর্তার সাথেই আমার খানিক মেশা হয়।
ঃ হুম আপনার জব আমাদের থেকে বেশ আলাদা, আর জবের কারণেই আমাদের মানুষের সাথে মিশতে হয়।
কফি এল, পান করলাম, কুশল বিনিময় করে বিদায় নিলাম।



একটা কল পেলাম মুঠোফোনে, প্রত্যাশিত, তবে একটু আর্লি।
ঃ আসসালামু আলাইকুম, আমি কি এলিট সাহেবের সাথে কথা বলছি?
ঃ ওয়া আলাইকুম আস সালাম, জ্বী জনাব, বলছি, আপনার জন্য আমি কি করতে পারি?
ঃ আসলে কিভাবে বলি, আপনার সাথে কিছু কথা ছিল, আমার অফিসে কি একবার আসবেন, এক কাপ চায়ে আমরা আলাপ করতে পারি।
ঃ আসলে, চা কিংবা আলাপ কোনটায় ই আমার আপত্তি নাই, বরং ভালোই লাগবে, তবে সেটা আপনার অফিসে না, হয় আমার অফিসে, অথবা এর বাইরে তৃতীয় কোন ও স্থানে...
ঃ আমার অফিসে সমস্যা কি?
খানিক বিরতি নিয়ে,
আচ্ছা, শহরের পাশেই একটা রেস্টুরেন্ট আছে, আমরা সেখানেই বসি...
ঃ আরেকটা শর্ত আছে
ঃ আবার কি শর্ত!
ঃ মেনু আপনার পছন্দের, ট্রিট আমার।
ঃ ওকে!



সময়, রাত ৯.৩০, স্থানঃ পায়রা রেস্তোরা, বাংলো টাইপ সাজসজ্জার প্রচেষ্টা, গ্রামে আজ লেগেছে শহুরে ছোয়া এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ, মালিক স্থানীয় চেয়ারম্যান, যদিও চলে তার বোনের তত্ত্বাবধানে ও মালিকানায়।

আলোকসজ্জা আছে বেশ, রংধনুর ৭ রঙ ই অনুমতি ছাড়া বসাই দিছে, পরিমিতিবোধ নাই, নাই রুচির ছোয়া।

বসে আছি আমি ও সেই পরিচিত মুখ, মুখোমুখি।
একটা হাল্কা টেনশন বিরাজ করছে,
আশেপাশের টেবিলগুলো ফাকা, ওদেরকে আগেই বলা আছে, এদিকে যাতে অন্য কাউকে না বসানো হয়।

টেবিলে একটা মেনু কার্ড, কালার কাগজ প্রিন্ট করে লেমিনেট করা আছে, এই মেনু কার্ড যে এখানে দড়ি দিয়ে বেধে রাখতে হয় নি, এটা ভেবে প্রীতবোধ করছি।

ওঃ হ্যা, আমার সামনে বসা পরিচিত লোকটার পরিচয় দেয়া হয় নি,
এই ভদ্রলোক পেশায় বিচারক, নাম সৈয়দ গাফফার।
এই টেবিলটা ও এখন এজলাস।

প্রতিটা টেবিল ই এজলাস, টেবিলে বসে বা না বসে, দাঁড়িয়ে থেকে বা হাটতে হাটতে আমরা জাজমেন্টাল, শুধুমাত্র উপযুক্ত সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়।

ঃ আসসালামু আলাইকুম...
কি অবস্থা, কেমন আছেন?
ঃ ভালো, আপনি কেমন আছেন?
ঃ ভালো, তা আপনাকে ভাই বলে সম্বোধন করব, নাকি স্যার?
ঃ অফিসিয়াল ডেকোরাম অনুযায়ী বলা ই কি ভালো না?
ঃ অফিসিয়াল প্রটোকল অনুযায়ী আপনি আমার বস বা উর্ধ্বতন না, যদিও আপনি আমার সিনিয়র।
ঃ এইটা প্র্যাক্টিস, আর প্র্যাক্টিস ও এক ধরণের আইন।
ঃ সে বটে, তবে স্যার সম্বোধন করেও অসম্মান করা যায়, আবার ভাই সম্বোধন ও সম্মানের সাথেই করা যায়। স্যার না বললে কাউকে ছোট করা হয় না, আবার ভাই বলে ও কাউকে অসম্মান করা হয় না।
ঃ আইনগত ভাবে আমাকে সম্বোধন করতে বাধ্য
ঃ সেটা স্যার না, বিজ্ঞ আদালত, এবং আপনি ও সম্বোধন করবেন প্রযোজ্য সম্মান প্রদর্শন পূর্বক এবং এটা আপনার এজলাসের আইনজীবি ও কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। যাক এসব বাদ দিন, আপনাকে স্যার বলেই সম্বোধন করব। দাওয়াতের হেতুটা জানাবেন কি?

চা এল, কফি পছন্দ করি না অতটা, চা বা কফি, এদের মধ্যে আমি চা ই বেছে নেব।
আর হ্যা চা, দুধ চা টা ও দারুণ হয়েছে, ক্রিম লেগে থাকে ঠোটে।

ঃ আপনি ঐ দিন আমাকে হেল্প করলেন, কেন?
ঃ করলাম, আপনার নিকট মহান সাজার জন্য, আপনার নিকট থেকে কিছু ফেবার পাবার আশায়। (চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম)
ঃ আপনার বলার ভংগিতে সেটা প্রকাশ পাচ্ছে না, কেন করেছেন, আমার স্থানে অন্য কেউ হলে করতেন কিনা?
ঃ হ্যা তা ঠিক, আপনি যতটা ইঞ্জুরড হয়েছেন, তাতে অন্য যে কেউই করত, আমি বরং চলে যেতাম, আমার পথে, আপনি আমার পরিচিত বলেই করলাম।
ঃ পরিচিত বলে আপনার ত আর ও খুশী হয়ে চলে যাবার কথা, গডস বিচার ভেবে; আমরা সাধারনত এভাবেই ভাবি।
ঃ হ্যা দুর্বল তার বিচারের ভার ওভাবেই ঈশ্বরের উপর অর্পন করে, ভাবে দুর্ঘটনা টা মূলত তার উপরে ঘটা অন্যায়ের প্রতিকার, ঈশ্বরের পক্ষ থেকে।
ঃ আসলেই কি আপনার উপর অন্যায় হয়েছে?
ঃ এইটা পার্স্পেক্টিভ অনুযায়ী ভিন্ন, আমার সাথে অন্যায় হয় নাই, যেটা হয়েছে সেটাকে বরং দুর্ব্যবহার বলা ভালো।
ঃ "দুর্ব্যবহার"! আপনার মাথা ঠিক আছে ত?
ঃ আপনি মাত্র পূর্বেকার আচরণ টা রিপিট করলেন...

খানিক নিরবতা, চায়ের কাপে চুমুক ছাড়া অন্য কোন ও শব্দ নেই

ঃ আচ্ছা, বলুন, কেন হেল্প করলেন?
ঃ বাদ দেন
ঃ I insist.
ঃ টু টেক রিভেঞ্জ!
ঃ হাউ ইজ দ্যাট?
মৃদু হাসলাম
ঃ ও! গট ইট, আমি আপনার এই হেল্প এর প্রতিদান দিতে পারব না... ভেবে
ঃ প্রতিদানের আশায় করি নাই
ঃ দ্যাটস দা পয়েন্ট; আপনি দেখাতে চেয়েছেন, আপনি খুব মহান, আপনার ভাষায় "দুর্ব্যবহার" পেয়ে ও আপনি আমাকে হেল্প করলেন; একটা বা দুই টা মাত্র ঘটনায় কাউকে জাজ করা যায় না, ইভেন প্রতিটা আলাদা ঘটনায় মানুষ আলাদাভাবে রিয়্যাক্ট করে। বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আপনাকে ভালো ভাবার কোন ও কারণ খুজে পাচ্ছি না।
ঃ ও! আপনার নিকট ভালো সাজতে ব্যর্থ হইলাম মনে হচ্ছে হাহাহা
আমাদের ফার্স্ট মিটাপের কথা আপনার মনে আছে নিশ্চয়ইঃ



চা শেষ, হাল্কা স্ন্যাক্স এল
ঃ আপনিই বলেছিলেন, আপনি মোটামুটি একা থাকেন, দুই একজনের সাথে ছাড়া খুব একটা মেশেন না।
ঃ অপ্রাসংগিক আলাপ নিয়ে আসছেন।
ঃ প্রাসংগিকতা সময়ের সাথে পালটায়
ঃ সরি টু সে, আপনাকে মানুষ হিসেবে ভালো বলতে পারছি না।
ঃ ডাজন'ট ম্যাটার।
ঃ ডাজন্ট ম্যাটার! আমার অপিনিয়নের কোন ও মূল্য নেই আপনার নিকট?
ঃ আপনার অপিনিয়ন টা আপনার ই কথা অনুযায়ী দুই চারটা ঘটনার বিচারে নেয়া
ঃ আমার সাথে পূর্বের ৩ টা সাক্ষাতের আলোকেই এই অপিনিয়ন।
ঃ আপনার সাথে প্রথম সাক্ষাতে জানতে চেয়েছিলাম আপনাকে ভাই নাকি স্যার বলে সম্বোধন করব, খুব সম্ভবত, আপনি আমার প্রশ্ন করায় বিরক্তবোধ করেছিলেন, যদিও ভদ্রতার খাতিরে প্রকাশ করতে পারেননি, আমরা সকলেই অবশ্য একটা ভদ্রতার মুখোশ পরে থাকি।
ঃ বিরক্ত হওয়ার মত কারণ আছে বৈকি, এটা জিজ্ঞেস করার মত কিছুই না
ঃ আপনার নিকট জানতে চাওয়াটা ই বরং যৌক্তিক, স্যার বলাটা এখানকার অফিস কালচার, কোন ও ল বা আইন না, কেউ আপনাকে নাম ধরে সম্বোধন করলেও সেটা অপরাধ হবে কি? তবে হ্যা, এজলাশে আপনাকে বিজ্ঞ আদালত বলে সম্বোধন করা ই সমীচিন।

ঃ আমি ২৪ ঘন্টা ই অন ডিউটি
ঃ সেটা আমি ও, আর হ্যা এখানে, ব্যক্তি আপনি ও চেয়ার হোল্ড করা আপনি একই ব্যক্তি হলেও দুইজনের আলাদা আইনগত স্বত্বা আছে।
ঃ এসব কালচার, সম্মান, আপনারা বুঝবেন কি?
ঃ উম, যা বলছিলাম, স্যার না ভাই জানতে চাওয়ার কয়েকদিন পরেই ব্যাডমিন্টন কোর্টে আপনাকে একজন ডাক্তার আপনাকে "ভাই" বলে সম্বোধন করেন, এতে আপনি তার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে যান বলে শুনেছি, আমার ক্ষোভ টা ই কি তার উপরে ঝাড়লেন?

ফ্ল্যাশব্যাক ২ঃ ২য় সাক্ষাৎ

ঃ আরে নজরুল ভাই যে, কোথায় যাচ্ছেন, এই তো সঞ্জিবনী ব্যাংকে গেছিলাম, কাজ শেষে বের হলাম, তা আপনি কোথায় যাচ্ছেন এই অসময়ে
ঃ আমার অফিসে ছোট একটা পার্টি থ্রো করছি, আপনাদের সকলকে নিয়ে, তারই দাওয়াত দিতে বের হলাম, আপনার অফিসে ও যেতাম, যাক ভালোই হল, দেখা হয়ে
ঃ এখন কৈ যাচ্ছেন, জজ্ব সাহেবের অফিসে, তা আপনার জরুরী কাজ আছে কোন ও?
ঃ ওরকম জরুরী কোন ও কাজ নেই
ঃ চলেন তবে আমার সাথে
ঃ চলেন, তা তারে পাবানে এখন?
ঃ এখন সম্ভবত এজলাস টাইম, পাওয়ার কথা, যাই তো আগে, দেখি পাই কিনা, না পেলে ফোন তো আছেই

এজলাসের বারান্দায় সিকিউরিটি পুলিশ দাঁড়ানো।
ঃ আসসালামু আলাইকুম
পুলিশ কন্সটেবলঃ এই এইই, আপনারা কারা, সরেন সরেন, এখানে কেন আসছেন (চাপা স্বরে)
ঃ আমি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক এলিট, আর ইনি মৎস্য কর্মকর্তা নজরুল, জজ্ব সাহেব কি আছেন?
ঃ আপনি যে ই হোন না কেন, যান যান এখান থেকে (ব্যাংকারকে হাত দিয়ে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে)
নজরুল সাহেবঃ সে সরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, আপনি তার সাথে এই আচরণ করতে পারেন না।
ঃ নজরুল ভাই আসেন, আমরা যাই, পরে আসবানে

বারান্দা থেকে নামার সময় কনস্টেবল ডাক দিল, এই আপনারা আসুন, আপনাদেরকে স্যার ডাকছেন

আমি ও নজরুল সাহেব কক্ষে প্রবেশ করলাম।
ঃ আসসালামু আলাইকুম
ঃ ওয়া আলাইকুম আস সালাম, এখানে কেন আসছেন?
নজরুল সাহেবঃ আসসালামু আলাইকুম স্যার
ঃ আমি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসছিলাম
ঃ এটা কি সাক্ষাতের জায়গা? এ লোকের তাড় ছিড়া নাকি!
ঃ আমরা তো এখানে আসিনি, আপনার প্রাইভেট চেম্বারে আসছিলাম (প্রাইভেট চেম্বার ও এজলাশ পাশাপাশি দুটো কক্ষ, দরজা ও লাগোয় প্রায়)
ঃ আরেহ, এই লোকের মাথার তাড় ছিড়া নাকি, বেরোন এখান থেকে, বেরোন
আর্দালিঃ বের হন, বের হোন (একযোগে)

আমরা বের হয়ে আসি
ঃ নজরুল ভাই, আমি রিয়েলি সরি, আমার সাথে এসেই আপনাকে এই রকম একটা বাজে পরিস্থিতিতে পরতে হল।
ঃ না ভাই, সরি হওয়ার কিছু নাই, উনি আমার পূর্ব পরিচিত, বাট উনি সেটা ও মনে রাখলেন না



ঃ এজলাশ কি কোন ও সাক্ষাতের জায়গা?
ঃ আমরা আপনার প্রাইভেট চেম্বারে গিয়েছিলাম, এজলাশে না, কোথায় যাওয়া যায় আর কোথায় যাওয়া যায় না, সেটুকুন সেন্স আমাদের ছিল এবং আছে
ঃ আপনারা এজলাশের বাইরে নয়েজ করছিলেন
ঃ আপনার কনস্টেবল আমাকে ধাক্কা দিল, আমি কিছুই বলমা না, নজরুল সাহেব, যিনি আপনার পূর্ব পরিচিত, সে কনস্টেবলকে বিহেভ করতে বলল
ঃ আপনাকে ধাক্কা দিয়েছে! কই বললেন না তো?
ঃ বলার সুযোগ কি দিয়েছেন, নাকি জানতে চেয়েছেন, আমরা কেন গিয়েছিলাম?

আপনি আমাকে যা বলেছেন, সে আমাকে বলতে পারেন কিনা? আমি নিজেও কিন্তু অন ডিউটিতেই ছিলাম, অফিসের পক্ষ থেকে ই দাওয়াত নিয়ে আসছিলাম...

আপনার পার্সোনাল ইগো সেটা নিতে পারল নাহ।

আপনি আপনার প্রি-এজাম্পশন থেকে রিয়্যাক্ট করেছেন, এবারে আপনিই বলুন, এইটা কি অন্যায় নাকি দুর্ব্যবহার?
আপনি নিজেই বলেছেন, আপনি সাধারনত হাতে গোনা দুই একজন মানুষের সাথে মেশেন, আমার ধারনা, মানে এইটা আমার একান্ত ধারণা, এই একা থাকা টা আপনার উপর একটু বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
ঃ কি বলতে চাচ্ছেন?
ঃ কুল, ম্যান কুউল!
দেখুন, আমরা অফিসে কাজ করি, অনেক প্যারা থাকে, বিবিধ প্যারা।
আমি পার্সোনালি এই প্যারা রিলিজ করি আড্ডায় গিয়ে।
আমার আশেপাশে যারা থাকে, এদের মধ্যে যাদেরকে আমি সেফ মনে করি, তাদের সাথে আড্ডা দেই, আর সেই আড্ডায় আমি ও আমরা মোটামুটিভাবে মন ও মুখ খুলে কথা বলি, এইটা আমার টেনশন রিলিজ করে।

আপনি মোটামুটি একা, যখন এইটা বুঝতে পারলাম, তখন থেকে আপনার উপর আমার কোন ও ক্ষোভ বা অসন্তোষ নেই।
ঃ তার মানে করুনা আছে!
ঃ লাভ কি করে! সো, সে ও নাই।
ঃ আপনাকে কে বলল, আমি একা...
ঃ কেউই বলেনি, পৃথিবীর প্রত্যেকটা পুরুষ একা, খুব একা, সূর্যের মত একা
আপনি একা, আমি ও, এই অনুভূতিটা একমাত্র একজন পুরুষ ই বুঝতে পারবে, অন্য কেউ না।

ভালো থাকবেন, শুভ রাত্রি
____________________________
রাত ১২.১০
১লা চৈত্র
১৫ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ
পাতারহাট, মেহেন্দীগঞ্জ, বরিশাল
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×