বর্তমান বাংলাদেশ আয়তনের দিক থেকে ছোট হলেও বৃহৎ জনসংখ্যার বসবাস এইদেশে । ভৌগলিক কারণ ছাড়াও নানা কারণে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন গুরত্বপুর্ণ রাষ্ট্রই বলা চলে । বৃহৎ জনসংখ্যার এদেশকে বর্তমানে আলোচনাসভায় , সেমিনারে কিংবা রাজনীতিবিদদের ভাষণে ডিজিটাল কিংবা উন্নয়নের রোল মডেল দাবি করা হলেও প্রকৃত চিত্র কিন্তূ আকাশপাতাল ব্যবধান । বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন করলেও সমস্যাও কিন্তূ কম বাড়েনি । বলতে গেলে গভীর সমস্যায় আমার স্বদেশ এখন ভয়াবহ পরিণয়ের দিকে ।
আমি এতসব সমস্যার বিশ্লেষণের জন্য নয় শুধুমাত্র দু একটা পরিচিত সমস্যার কথাই লিখতে চাইছি ।
আমি ক্ষুদ্র মানুষ সাজিয়ে গোছিয়ে লিখা আমার পক্ষে পুরোই অসম্ভব , তারও বেশী অসম্ভব হলো চিৎকার করে বলা । তবুও বলছি একটা দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার হলো সে দেশের তরুণ / যুব সমাজ । আজকের তরুণরাই যদি কালকে এ দেশের হাল ধরতে হয় তাহলে এইদেশের ভবিষ্যৎ তথা আমার এই দেশ আসলে কোনপথে এটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় । অনায়াশে বলায় যায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঘোরসঙ্কটে ।
প্রথমেই আমি বলব বর্তমানে প্রমাণিত সত্য এ দেশেরই কিছূ উচ্চশিক্ষিত তরুণ বিশ্বমানের আধুনিক শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন করিয়া এমনকি উচ্চবিত্ত পরিবারের আধুনিক পরিবেশে বড় হইয়াও জঙ্গী কার্যক্রমে লিপ্ত হইছে । তাদের সাথে রয়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানও ।
যদিও বাস্তবতা স্বীকার্য এদের সংখ্যা বর্তমানেও নির্মুলযোগ্য । কিন্তূ ভয়াবহব্যাপার হলো এদের ব্যাকআপ করা , অর্থনৈতিক সেল্টার , হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দাতা , প্রাথমিকভাবে উদ্ভুদ্ব্য করা , চুড়ান্ত মগজ ধোলাই করাসহ অনেক লোকেরই প্রয়োজন । আর তাই তারা সংখ্যায় একেবারেই নৃ এটা বলা ভুলই বটে বরং আমার ধারণা তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে দ্বিগুণ শ্রম ব্যয় করছে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য । যদিও গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলার পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী থেকে শুরু করে অনেকটাই নড়েচড়ে বসেছে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ । তথাপি সবশ্রেণীর মানুষের মনেই একটা ভয় স্কুল কলেজ , ভার্সিটি , মাদ্রাসা যেখানেই সন্তান পড়ালেখা করুক না কেন অভিভাবকরা আর নিশ্চিন্ত নয় । সন্তানকে মানুষের মত মানুষ হবার দৃড় প্রত্যাশা ও উজ্জল ভবিষ্যতের আশায়ই বাবা মা কষ্ট হলেও ভালোমানের স্কুল কলেজে পাঠান কিন্তূ ;
বর্তমান পরিস্থতি বলছে সেখানেও নেই মানুষ হবার মত শিক্ষাব্যবস্থা বরং অভিভাবকের চোখে এখন তুমুল হতাশা ।
এটা এখন কেবল ক্রসফায়ার করে আর টকশো কিংবা ব্যাপক ধরপাকড় করে সমাধানের চেষ্ঠা করলেই হবেনা বরং শিকড়ের সন্ধান করতে হবে এবং সমুলে উৎপাঠন করতে হবে । এর জন্য আমি ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে করি শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ব , মানবতাবোধ , ভালবাসা ও সহানুভুতি সৃষ্টি হওয়ার মত সাহিত্য সব মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জন্য আবশ্যিক পাঠ্যসুচিতে সংযোজন করা হোক । মানুষের মতআমত প্রকাশের জায়গা আরও উন্মোক্ত ও সহনশীল করা হোক । আরও গভীরে দৃষ্টিপাত করলে দেখবেন তরুণরাই যুগে যুগে দেশে দেশে মানুষের অধিকারের জন্য , দেশের জন্য বিপ্লব -বিদ্রোহ , প্রতিবাদ করেছে , জীবন দিয়েছে । তাই মানুষকে ধামাচাপা কিংবা ভয় দেখিয়ে নয় বরং যে কোন ক্ষেত্রেই মানুষের প্রতিবাদের জায়গা উন্মোক্ত রাখা উচিৎ ,পাশাপাশি একটা রাষ্ট্র তথা একটা গ্রাম কিংবা সমাজের সকল স্তরেই ন্যায়বিচার নিশ্চিৎ করা উচিৎ এবং করতে হবে , কেননা বিচারহীনতা সব শ্রেণীর মানুষ তথা তরুণদেরকে বিষণভাবে ক্ষুব্ধ করে । তাই ন্যায়বিচার ও মানুষের অধিকারের দিকে শাসকশ্রেণীর সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিৎ । পাশাপাশি প্রত্যেক বাবামা যেন শৈশব থেকেই সন্তানদের মানবিক মমত্ববোধ বিকাশ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পর্কে শিক্ষা দেন । কেননা তরুণদের জঙ্গী আকৃষ্টতা কেবল একটা পরিবারের সমস্যা নয় বরং এটা গোটাজাতি তথা আমাদের প্রাণের মাতৃভুমির উজ্জল ভবিষ্যতের পথে বিরাট অন্তরায় । তাই সকলেই সকলের প্রতি দম্ভ বা ক্ষমতার দাপট না উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন , ধর্ম -কর্ম , উচুনিচু , ধনীগরীব ও রাজনৈতিক ভেদাভেদ পরিহার করে সবাই মানুষ সবাই সমান সমাজে সাম্যের প্রতিষ্ঠা করুন । মানুষই সৃষ্টির সেরা জীব এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী ; চরিত্র গঠণে সন্তানকে মানবিক গুণে দীক্ষিত হতে উদ্ভূদ্ব্য করুন ।