somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী ও আমরা

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে রাখি নিম্নের লিখাগুলো আমার নয়। সমাজে নারীদের নিয়ে কিছু অপ্রিয় সত্য এখানে দেখানো হয়েছে। লিখেছেন জোনায়েদ ভাই। শেয়ার করলাম...আশা করি সবাই পড়ে দেখবেন।
.
আমি একটা মেয়ের কথা জানি, তার হঠাৎ একদিন
ঋতুস্রাব হয় স্কুল মাঠে।
পিটি স্যার সবাইকে দাঁড় করিয়ে লেফট রাইট
করাচ্ছেন, হঠাৎ মেয়েটি টের পায় কিছু একটা ঘটে
যাচ্ছে। বিব্রতকর অবস্থাটি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়
যখন তার সাদা কামিজের উপর থেকেই রক্ত দেখা
যাচ্ছে !
.
অন্য একটি মেয়ের কথা বলছি। শীতে গ্রামের বাড়ি
যাচ্ছে হঠাৎ গাড়িতে প্রথমবারের মত ঋতুস্রাব ঘটে
গেল ! তার পরনে ছিল নীল শর্ট স্কাট। বয়স ছিল ১৩।
.
প্রচণ্ড ভয় প্রচণ্ড কেঁদে ফেলার মত অস্বস্তিততা
নিয়ে সে চুপচাপ গাড়িতে বসে ছিল। মা' কে কিছু
না বলার পরেও মা বুঝে ফেলেছিলেন। তিনি গাড়ি
সাইড করে তার ওড়না দিয়ে মেয়েটিকে ঢেকে
রাখলেন। সবার সামনে কেমন লজ্জায় মরে যাবার
মত একটা বিশ্রী অভিজ্ঞতা হল - এটি মনে করে
এখনও তার শরীর কেঁপে উঠে !
.
একটি ছেলে হঠাৎ এরকম কোন ঘটনার সন্মুখিন হলে
অবশ্যই সে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিত।
মেয়েরা এরকম না। তারা আগলে রাখতে জানে।
ধৈর্য ধরতে জানে। কাউকে কিছু না জানিয়ে
নিজের কথা নিজেকে বলার এক অদ্ভুদ নিয়ম শিখে
ফেলে তারা !
.
...প্রত্যেকটি মেয়ের এরকম অসংখ্য ইতিকথা থাকে।
সব কথা বলে ফেলার পরও এরকম অসংখ্য কথা তারা
বলতে পারে না।
.
একটি জিনিস মাঝে মাঝে আমাকে খুব লজ্জায়
ফেলে দেয়। যে ব্যাপারটি নিয়ে মেয়েদের গর্ব
করার কথা ছিল - বুক চিতিয়ে বলবার কথা ছিল -
আমরা নারীরাই জন্ম দেই পুরুষদের ! সেই
ব্যাপারটিই কিনা তাদের লজ্জায় মেরে ফেলে !
.
ফার্মেসীতে ভিড়ের হেলায় এক গাঁদা পুরুষের
মাঝে একটি মেয়ে স্পষ্ট গলায় বলতে পারে না - সে
ন্যাপকিন কিনতে এসেছে। সে অপেক্ষা করে ; কখন
মানুষ কমবে। দোকানদার ( সবাই না ) যখন জানে সে
এই জিনিস কিনতে এসেছে তখন কেমন করে যেন
তাকায় ! কীভাবে যেন শুয়রের মত করে হাসে !
.
ঋতুস্রাবের মত সাধারণ একটি বিষয়কে আমরা খুব
নিষিদ্ধ মনে করি। বাংলাদেশের প্রায় মেয়েদের
রমজানে পিরিয়ড হবার পরেও সবার সাথে এক সাথে
বসে সেহেরী খেতে হয়। যেন কেউ বুঝতে না পারে।
রোজা রাখতে না পেরেও সারাদিন না খেয়ে
থাকে এরকম মেয়ের সংখ্যা প্রচুউউর !
.
এরপরেও মেয়েটিকে আমরা মুক্তি দেই না। 'রোজা
কয়টা রেখেছো' জাতীয় প্রশ্ন করে তাদের বিব্রত
করতে আমরা ছাড়ি না।
.
কী সাংঘাতিক একটি অপরাধ আমরা দিনের পর
দিন করে যাচ্ছি ভাবা যায় ? ঋতুস্রাব এখানে
নিষিদ্ধ ; খৎনা হলে কমিউনিটি সেন্টারে লোকজন
নিয়ে উৎসব করা হয়।
.
নুনুর অগ্রভাগের চামড়া কেটে ফেলার মত ঘটনা হয়
উৎসবের !! আর একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেবার
অংশবিশেষ ঋতুস্রাবের মত ঘটনার ভেতর দিয়ে
যাচ্ছে - সেটি হয় গোপন লজ্জাকর !
.
আমরা ভাবি ব্যাপারগুলো একান্ত মেয়েদের।
ছেলেদের না জানলেও চলবে। মেয়ের মা এক সময়
মেয়েকে আড়ালে ডেকে বুঝিয়ে বলবে। ব্যাস কাজ
শেষ। আসলে ব্যাপারটি এরকম না।
.
আপনার ছেলে কিংবা ছোট ভাইকেও এই ব্যাপারটি
বোঝাতে হবে। তা নাহলে তারা এই নিয়ে চুপিচুপি
কথা বলবে। এবং তারাই আশে পাশের কোন
মেয়েকে বিব্রত করতে ছাড়বে না।
.
তাকে জানাতে হবে - দেখো একটি মেয়েকে মা
হবার জন্য কত সংগ্রাম করে যেতে হয়। কোন মেয়ের
পিরিয়ড হয়েছে এটা জেনে যদি তোমার বন্ধুরা
হাসাহাসি করে তাহলে তুমি তোমার বন্ধুদের
জানিয়ে দিবে - তাদের মা দেরও মাসের একটি
সময় এরকম হয়।
.
মানসিক দিক দিয়ে কেউই নারী হয়ে জন্ম নেয় না -
অজস্র লজ্জা অজস্র বিব্রতবোধ আর সংকীর্ণতা
দিয়ে আমরা একটা মানুষকে নারী বানিয়ে ফেলি।
.
Anatomy is her destiny শরীরই তার নিয়তি।
.
.
লেখকঃ Zunayed Evan্
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×