মিডিয়া জগতের বাইরেও রয়েছে তারকাদের ভিন্ন একটি জগৎ। নিজস্ব সেই জগতে আর দশজন সাধারণ মানুষের মতোই পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। পেশাদার মনোভাব নিয়ে তাদেরকেও কাজ করে যেতে হয় রুটিনমাফিক। মিডিয়ার কাজ এবং পেশাজীবনের কাজ সমানতালে করে যেতে হয় তাদেরকে। আমাদের দেশের উল্লেখযোগ্য ৬ তারকা তাদের সেই ভিন্ন জগতের কথা জানিয়েছেন গ্লিটজকে। সেসব নিয়েই এবারের গ্লিটজের এই আয়োজন।
পরিবার এবং অন্য সবকিছু ঠিক রাখতে পারছি: অপি করিম
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) এর শিক্ষক অপি করিম। এটাই অপি করিমের পেশাগত পরিচয়। তবে মিডিয়াতে অপি করিম অভিনেত্রী। মঞ্চে ও টিভি নাটকে কাজ করে তিনি এই অর্জনটা নিজের করে নিয়েছেন। দুটি জগতেই তিনি সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন। অপি করিম তাঁর দুই জগতে কাজ সম্পর্কে বলেন, ‘অফিস করতে হয় সময় মেনে। তবে অফিসের কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ফাঁক ফোঁকর বের করে শুটিং করা এখন আমার রুটিন ওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
অপি করিমের মতে কাজ দুই ধরনের হলেও, কাজের মজাটা দুই জগতে ভিন্ন মাত্রার। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার সপ্তাহে পাঁচ দিন ক্লাস নিতে হয়। খুব ভোরে চলে যাই আমার কর্মস্থলে। ফিরতে ফিরতে প্রায়ই রাত হয়ে যায়। মাঝে কিছুটা সময় অবসর পেলে বাসায় ফোন করে খোঁজ খবর নিই। এখন শিক্ষকতার জন্য অভিনয় খুব বেশি করতে পারি না। কিন্তু ভালো কোন কাজের প্রস্তাব পেলে, যে ভাবেই হোক সময় বের করে ফেলি। আমি আমার মূল পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছি। অভিনয়টা আসলে আমার একান্ত ভালোবাসার একটা জায়গা। এই কাজটাকে খুবই উপভোগ করি আমি। অফিসে অনেক কাজের চাপ থাকে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সময় কেটে যায়। তারপর অন্যান্য কাজের মধ্যে বাকী সময়টা কেটে যায়। তবে আমি গর্ব করেই বলতে পারি যে, শত ব্যস্ততা সত্তে¡ও আমার পেশা, অভিনয়, পরিবার এবং অন্য সবকিছু ঠিক রাখতে পারছি আমি। এটাই আমার সার্থকতা।’
অভিনয়টা একেবারেই শখের বশে করি: নোবেল
নোবেল মূলত বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেই পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। পাশাপাশি অভিনেতা হিসেবেও তিনি পরিচিতি পেয়েছেন। তবে এটাই তার একমাত্র জীবন নয়। তিনি ‘কোটস বাংলাদেশ’ এ মার্কেটিং সার্ভিসেস এর জেনারেল ম্যানেজার। বাজার ব্যবস্থাপনাই তার মূল পেশা। এই কাজে তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা অফিসেই কাটান। আর এই কাজটা তিনি দায়িত্বের সঙ্গে করে আসছেন অনেকদিন ধরেই। পেশাগত কাজের ফাঁকে অবসর সময়টাতেই কেবল তিনি নাটক ও বিজ্ঞাপনের কাজ করেন।
নোবেল তার পেশাজীবন সম্পর্কে বলেন, ‘একটি কর্পোরেট অফিসে কাজ করি আমি। সময় মেপে কাজ করতে হয়। কাজটা আমার বেশ ভালো লাগে। আর সে কারণেই এতোটা দিন এখানে কাটিয়ে দিলাম। আমি বরাবরই নিয়ম মেনে রুটিনমাফিক কাজ করার চেষ্টা করি। তাই কাজের ফাঁকে সময় বের করে অভিনয় অথবা পরিবারে সময় দেয়া আমার জন্য কোন ব্যাপারই না। তবে অফিসের পর বেশিরভাগ সময় আমি পরিবারকেই দিই। অভিনয়টা একেবারেই শখের বশে করি। আমি কখনোই অভিনয়কে পেশা বলে ভাবিনা।’
চাকরিটা আমার পেশা হলেও, গানটা আমার শখ: তপু
গায়ক হিসেবে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন তপু। পেশাজীবনে তিনি কাজ করছেন একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে। কম্পিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট তপুর শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে চাকরির যেমন কোন মিল নেই, তেমনি গানের সঙ্গেও মিল নেই তার পেশাজীবনের।
তপুর ভাষ্যমতে, ‘আমি তো টেলিকমে কাজ করি। এখানে একেবারে হিসেব করা সব কিছু। তবে চাকরিটা করতে আমি আনন্দ পাই। আর চাকরিটা তো আমার গানের কোন ক্ষতি করে না। বরং সাহায্যই করে। কাজ আর গান মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে আমার জীবনে। অভিনয়ের কাজ করতে গিয়ে বেশ কষ্টই হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক সামলে সময় বের করতে হয়েছে অভিনয়ের জন্য। এই মুহূর্তে নতুন একটি অ্যালবামের কাজ করছি। অফিস শেষে স্টুডিওতে বসি। প্র্যাকটিস করি। আবার যদি কোনদিন শো থাকে, তাহলে পারফর্ম করি। চাকরিটা আমার পেশা হলেও, গানটা আমার শখ। কাজ আর শখ দুটোই উপভোগ করি আমি।’
সফলভাবে দুই ভূবনেই থাকতে চাই: বাঁধন
লাক্স বিজয়ী বাঁধনের এখন যেন দম ফেলারও সময় নেই! কারণ প্রতিদিনই তার থাকে বিভিন্ন নাটকের সিডিউল। কিন্তু এর বাইরেও পেশাগত জীবনে একজন চিকিৎসক তিনি। তার ভাষায়, ‘ডাক্তারি করা হয় কম। অভিনয়টাই বেশি। তবে অভিনয় করতে আসার আগে আমার মূল স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। দর্শকদের একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে আমার ওপর। তাদের কথা মাথায় রেখেই মূলত অভিনয়ের কাজটা করি। একটা সময়ে স্বপ্ন দেখতাম, যদি তারকা হতে পারতাম! এখন সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আমার।’
বাঁধনের বাবা-মা’র স্বপ্ন ছিল তাদের মেয়ে ডাক্তার হবে তার ভাষায়, ‘সবার সব আশা পূরণ হয়না। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে যেন এর বিপরীত! যখন যা চেয়েছি তাই যেন পেয়েছি আমি! আর বাবা-মা’র স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরে আমি এখন মহাখুশি। এই মহূর্তে চাইছি, সব কিছুকে গুছিয়ে নিয়ে জীবনটাকে একটা ছকে বাঁধতে। কেননা এখন আমি মানুষ এক হলেও, আমার পেশা দুই। এই দুয়ের সমন্বয় করাই এখন আমার মূল দায়িত্ব। আমি সফলভাবে দুই ভূবনেই থাকতে চাই।’
গানটা আমার পেশা নয়: তুহিন
শিরোনামহীন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট তুহিন। গিটার, ড্রামস আর কি-বোর্ডের তালে গান গেয়ে দর্শক মাতান তিনি। মানুষ তাকে চেনে গানের লোক হিসেবেই। তবে ব্যান্ড শিল্পী তুহিনের মূল পেশা কিন্তু গান গাওয়া নয়। পেশায় তিনি একজন স্থপতি। একটি আর্কিটেক্ট ফার্মের কর্তা তিনি। সারাদিন নিজের গড়া ফার্মে বসেই কাজ করেন। এরপর সন্ধ্যায় অবসরে চলে গান তৈরি আর প্র্যাকটিসের কাজ।
তুহিন নিজের এই দ্বৈতসত্ত্বা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি আমার নিজের চাকরিই করি। অর্থাৎ নিজেরই একটা ফার্ম আছে আমার। ফলে কাজের ক্ষেত্রে বেশ স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারি আমি। আমার শিক্ষা, মেধা আর শ্রম সবটুকু দিয়ে আমি ফার্মটাকে এগিয়ে নিচ্ছি। এটাই আমার মূল পেশা। তবে আমার জীবনের আরেকটা অংশ হল গান করা। এই কাজের জন্য সময়টাও নির্দিষ্ট। অফিসের কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় নিয়মিতভাবে প্র্যাকটিসে বসি। আমাদের ব্যান্ডের সবাই যেহেতু সকাল-বিকাল কাজের মধ্যে থাকি, তাই প্র্যাকটিস সেশনে একটু রিলাক্স মুডেই থাকি। আসলে স্টুডিওতে গান করার পাশাপাশি আমরা সময়টাকে এনজয় করি।’ তুহিন নিজেকে পুরোদস্তুর একজন স্থপতি হিসেবেই ভাবেন। আর গানটা হল তার শখ। তিনি ছোটবেলা থেকেই গান করতেন। এটা করতেন অনেকটা শখের বসেই। তার ভাষায়, ‘গান গাই মূলত নিজের বা নিজেদের জন্য। গানটা আমার পেশা নয়।’
পার্লারের কাজটাই এখন আমার মূল পেশা: শারমিন শিলা
আগের তুলনায় একটু কমই কাজ করছেন মডেল, অভিনেত্রী ও অনুষ্ঠান উপস্থাপিকা শারমিন শিলা। এর পেছনের কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার খুব শখ ছিলো একটা বিউটি পার্লার শুরু করার। অনেক দিন থেকেই ভাবছিলাম এটা কীভাবে শুরু করা যায়। মাঝখানে অনেক ব্যস্ততা গেছে। তা ছাড়া অন্য কাজের চাপও ছিলো। অন্যদিকে, পরিবারেরও একটা চাপ ছিল। আমার মেয়েটাও ছোটো ছিল। সময় বের করার ক্ষেত্রে সেটাও একটা প্রতিবন্ধকতা ছিল।
এখন আমি কিছুটা গুছিয়ে নিয়েছি। তাই আর দেরি না করে বিউটি পার্লারের কাজ শুরু করে দিলাম। এখন বেশিরভাগ সময় আমি আমার পার্লারেই দিই। এরপর বাকি সময়টা দিই পরিবারের পেছনে। আর এজন্যই এখন মিডিয়ায় উপস্থিতিটা একটু কম আমার।’
তাহলে কী এই অভিনেত্রী মিডিয়া থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন বা নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন মিডিয়া থেকে? আশার কথা হলো, শিলা জানিয়েছেন, তিনি অভিনয়টা এখনই ছাড়ছেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সামনে ঈদের কিছু কাজ করছি। এখন তো খুব অল্প কাজ করি! একটু বেছে বেছেই অভিনয়টা করতে চাই। ভালো গল্প আর চরিত্র পেলেই কেবল কাজ করব। আর অভিনয়টা শখ থেকেই শুরু করেছিলাম। মাঝে অনেক বেশি কাজ করা হলেও, এখন শখের জায়গাটাতেই তাকে রাখতে চাই। আর পার্লারের কাজটাই এখন আমার মূল পেশা।’
আলোচিত ব্লগ
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…
১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন