somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ সুখের নোনা স্বাদ

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
সকালটা তার কাছে অধিকাংশ সময়ই একটা মিশ্র অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়। এর পেছনে ভূমিকা থাকে মূলতঃ ফেলে আসা রাতটার। ঝরঝরে একটা ভাবনাহীন রাতের ঘুমের পরের ভোরের আকাশটা কেমন যেন বাইরের পানে টেনে নিয়ে যায় সমীরকে – আজ তার ঠিক বিপরীত কিছু একটা টের পায় সে। ঘুম ভাঙার গানটা সাধারণতঃ সে টের পায়, খুব আলতো করে যখন পূর্বাকাশের ভোরের মৃদু সোনালী আভাটা দরজার ফাঁক দিয়ে চিকন হয়ে তার বেডরুমের ছাদ ছুঁয়ে যায়। টের পেতেই তার চিৎ হয়ে থাকা শরীরটাকে সে আস্তে করে ডান দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে কাত হয়ে শোয় বাম দিক হতে জানালার পর্দা ভেদ করে আসা আলোটাকে ফাঁকি দেয়ার জন্য। ছাদের বুকে লেপ্টে থাকা আলোর রেখাটার পশ্চিমের দেয়াল বেয়ে গড়িয়ে নীচের দিকে নামার তালে তাল মিলিয়ে ধীরে ধীরে তার ঘুমটা ক্রমাগত পাতলা হয়ে আসতে থাকলে চারপাশের জগৎটা তার কাছে ধরা দিতে থাকে। পার্থিব বিষয়গুলো তখন একটার পর একটা যেন ঘুমঘোর কাটাতে হাজির হতে থাকে – তার পাযের উপর ছড়িয়ে থাকা তার আদরের বউটির কেশহীন নিটোল বাঁ পায়ের উষ্নতা, ঠিক নীচটিতে কাঁধ বেয়ে নেমে আসা তার বাম হাতের চারটি আঙুলের স্পর্শ। জেগে থাকলে খুব মৃদুলয়ে সেতারের ছন্দে একটু একুট করে উঠে আর নামে, নামে আর উঠে, বুড়ো আঙুলটা খুব একটা কেমন যেন একাত্ন হতে পারে না পুরোটা; তবু একটু দূরে থেকেই তালে তাল মেলানোর চেষ্টা চালায় অবিরাম। তার নিঃশ্বাসের ভারি বাতাসটুকু কখনো কপাল, কখনো দু’চোখ, কখনো বা নাক-ঠোঁট ছুঁয়ে গলা পযর্ন্ত ধীরে ধীরে উষ্ঞতর হয় নাকি তার অনুভূতিটাই প্রগাঢ় হতে থাকে - তা নিয়ে নিঃসন্দেহ হতে পারে না সে। ঘুমঘোর ভাঙার এ মুহূর্তগুলো সব কিছুকে খুব কাছে টেনে নেবার, একান্ত স্বার্থপরের মতো নিজের করে পাবার আগ্রহে সুড়সুড়ি জাগিয়ে যায়। তার দু’হাতে সে বউটাকে টেনে নেয় আরো কাছে, গাল, গলা, বুক, পেট ছাড়িয়ে পায়ের আঙুলগুলোও একটা অন্যটার সাথে জড়াজড়ি করে ভালোবাসায় ডুব দিতে চায় তখন।

অন্যান্য দিনের মতো আজও সূর্যালোক ফাঁকি দেয়ার জন্য ওপাশ ফিরে শুতেই সে ব্যতিক্রমটুকু টের পেতে শুরু করে। তার মনে হয় আজ যেন সে অন্যদিনের মতো আলোটাকে ফাঁকি দিতে পারছে না, তার দু’চোখের পাতা জুড়ে আলোর রেশ খেলা করতে থাকে, যা সে টের পায় চোখ বন্ধ অবস্থাতেও। তবু সে চেষ্টা করতে থাকে আর কিছুক্ষণ যদি ঘুমিয়ে থাকা যায়। সে চেষ্টাতেই পা দু’খানা সামনের দিকে তুলে দেয়ার চেষ্টা করতেই টের পায় তার পা, ঘাড়, কোমর আজ কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা; তার সামনে কোন শরীর নেই, নেই সে মায়াবী মুখটুকু, বিশেষতঃ টের পায় গত দশ মাস ধরে ফুলে-ফেঁপে উঠা তার বউয়ের বিশাল পেট আর টানটান হয়ে উঠা পেটের চামড়ার উষ্নতাটুকুর অনুপস্থিতি। চট্ করে তার ঘুমটা কেটে যায়। চোখের সমানে তার সোফার একটি হাতল, হালকা বাদামী রঙের র‌্যাক্সিনে মোড়ানো। তার কুন্ডলীপাকানো শরীরের সামনের দিকটায় দু’টো হাঁটু আর পিছনের দিকে পিটটা একদম ঠেসে আছে। পা দু’টো নীচে নামিয়ে ঘুরে চিৎ হয়ে চোখ খুলতেই সে দেখতে পায় পুরো বারান্দা আর করিডোর জুড়ে তীব্র আলোর উপস্থিতি, নিজেকে সে দেখতে পায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ইউনিটের বারান্দার সোফার একটিতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায়। রাত্রে কখন যে নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়েছিল টের পায়নি সমীর!

ডাক্তারের পরামর্শেই গতকাল বিকেলেই মন্টিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে – ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ ধরে। সন্ধ্যার পর থেকেই একটু একটু ব্যথা শুরু হয় তার। ডাক্তার এসে দেখে গিয়েছিল রাত্রে, বলছিল সব ঠিকঠাক আছে, খুবই নরমাল; স্বাভাবিক ডেলিভারি আশা করা যায়, ‘এই মেয়ে, উল্টাপাল্টা করবে না কিন্তু, কান্নাকাটি করলে আমি সোজা আপারেশন করে ফেলব’ হাসতে হাসতে একটু ধমকের সুরেই বলছিলেন তিনি। রাত যত গভীর হচ্ছিল, সাথে সাথে ব্যথার তীব্রতা বাড়ছিল সমানে পাল্লা দিয়ে। সব দেখে ডাক্তাররা তাকে কেবিন থেকে নিয়ে আসে অপারেশন থিয়েটারে – জরুরী কিছু দরকার হলে যেন তৎক্ষণাৎ করা যায়। যদিও ডাক্তার বারবার করে বলছিল যে অপারেশন করতে হয় সেফ ডেলিভারি নিশ্চিত করার জন্য, তবু সমীর আর মন্টির উদ্বেগ কাটে না শেষ অবধি, শেষ ভিজিটের সময়ও দু’জনে খুব করে অনুরোধ করছিল ডাক্তারকে যেন স্বাভাবিক ডেলিভারির চেষ্টা করে। একটা সময় ছিল যখন সমীর এ ধরণের বিষয়ে খুব উৎসাহী ছিল, অন্যদেরকে খুব করে ইনফ্লুয়েন্স করে যে কোন বিষয় নিজের মত করে করানোর চেষ্টা করত; কিন্তু এখন সে মেনে নেয় - কোন বিষয় হাতের মুঠোয় না থাকলে সেগুলো নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই; তাতে বরং অন্যকে বিব্রত করা হয়, কোন কোন সময় বিরক্তিকর হিসেবেও নিজেকে উপস্থাপন করা হয় অন্যের কাছে। মন্টিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবার পর মূলতঃ কোন কাজ থাকে না সমীরের। রাত সাড়ে তিনটা হতে এখানে বাইরে অপেক্ষা করছিল সে, খুব ইমারজেন্সি কিছু হলে তাকে জানানো হবে বলে জানায় তারা। হাসপাতালের থিয়েটার ইউনিটের সামনের প্রশস্ত এ বারান্দাটি বোধহয় জেগে থাকে চব্বিশটি ঘন্টাই – লোকজনের দ্রুত আসা-যাওয়া, অস্থির পায়চারি আর উদ্বিগ্ন ব্যথিত মুখগুলো নিয়ে। দু’পাশের ক্রীম কালারের দেয়াল জুড়ে ফাঁকে ফাঁকে স্থিরচিত্রগুলো ঝুলছে, তার উপর স্পট লাইটের আলোগুলো তীব্রভাবে ছড়িয়ে আছে। হাঁটাহাঁটি আর অস্থির দাঁড়িয়ে থেকে সময় কাটানোর একটা পর্যায়ে ভোরের দিকে কোনার দিকে খালি হওয়া একটা সোফায় জায়গা হয় তার – গা এলিয়ে দিতেই উদ্বেগ আর ক্লান্তির কাছে হার মানে সমীর।

২.
দু’হাতের বুড়ো আঙুলের পিঠের ঠিক মাঝখানের অংশটি দিয়ে দু’চোখের পাতা ঘষতে ঘষতে সে সোফা ছেড়ে এসে অপারেশন থিয়েটারের সামনের ডেস্কে বসা লোকটির দিকে এগিয়ে যায়। কাঠ রঙের ডেস্কগুলো জুড়ে অদ্ভূত একটা শীতলতা; তার উপর দু’হাত রেখে সামনের দিকে একুট ঝুঁকে নীচে রাখা রোগীদের তালিকায় চোখ বুলাতে বুলাতে সে ভেতরে বসা লোকটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে – এর মধ্যেই সকালের শিফটে যোগ দিয়েছে চকোলেট রঙের পোশাক পরা লোকটি। দু’জন মিলেও মন্টির নামটি রোগীদের তালিকায় উদ্ধার করতে না পেরে ভেতরে ফোন দিয়ে নার্সের সাথে কথা বলে তারা। তার বুক জুড়ে একটা ঠান্ডা অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে যখন সে জানতে পারে যে ভেতরে মন্টির অপারেশন চলছে। এখনো পযর্ন্ত সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে বলে তাকে জানানো হয়, কিন্তু তবু তার ভেতরে একটা ভয় কাজ করতে শুরু করে, যদি কিছু হয়। হাসপাতালের উজ্জ্বল আলোর বারান্দাটুকু তার কাছে হঠাৎই কেমন যেন ভীষণ বিষণ্ন আর ক্লান্তিকর মনে হয়। সমীর একটু একটু করে ঘামতে শুরু করে, সে টের পায় এসি’র তীব্র ঠান্ডা বাতাসের মধ্যেও তার শার্টের নীচটা ভিজে উঠছে খুব দ্রুত, বুকের ভেতরটা ধুপ ধুপ শব্দে একটানা কাঁপছে – একটু একটু করে গুলিয়ে উঠতে থাকে ভেতরটা। দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে অস্থির পায়চারির কয়েকটা মুহুর্ত পার হতেই সে তার তলপেটের নীচে চাপ টের পায়, সাথে পেটটাও কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠে – সে দ্রুতপায়ে ওয়াশ রুমের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

রাতের ঘুমের অভাবে মুখে পানির ঝাপটা দিতেই জলের ছোঁয়ায় চোখ দু’টো জ্বালা করে উঠে খুব তার। চোখে মুখে অনেকক্ষণ ধরে পানি দিয়ে ভেজা হাতটা সে বুকের ভেতরে চালান করে দেয়, ঠান্ডা পানিতে ঘামটুকু মুছে নিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পায় সমীর। ঘাড়, গলা, বুক, পেট – সব পানিতে মুছে নিয়ে পানির ট্যাপটি বন্ধ করে দিয়ে সামনের আয়নায় নিজেকে দেখে স্থির হয়ে যায় সে। দু’হাত বেসিনের উপর রেখে একটু সামনের দিকে ঝুঁকে আয়নায় নিজের চোখে চোখ রাখে সমীর – আজ এমন লাগছে কেন তার? অনেকবারই তো সে হাসপাতালে এরকম সময় কাটিয়েছে – বাবা, মা, ভাই-বোন এমনকি আত্নীয়-স্বজন অনেককে নিয়েই; দিনের পর দিন, রাতের পর রাত তার কেটেছে অনেক উদ্বেগ, উৎকন্ঠা নিয়ে। আনন্দ-বেদনার সন্ধিক্ষণের অনেক লগ্নই তো গেছে তার, কখনো তো এমন অনুভূতি হয়নি। আজ মন্টি’র অপারেশনের কথা শুনেই কি এমনটি হতে শুরু করল তার? একি মন্টি’র জন্যই শুধু, নাকি তার যে অনাগত ভবিষ্যৎ এখানে জড়িয়ে রয়েছে তার জন্য – সে তার চোখের দিকে খু্ব গভীরভাবে তাকিয়ে উত্তর খুঁজতে থাকে। ভাবতেই কেমন যেন অবাক লাগে বাবা হতে চলেছে সমীর। দশটি মাস ধরে সে কি ব্যাকুল প্রতীক্ষা তাদের! গত এ তিনশতটি দিনে কেমন যেন ধীরে ধীরে সমস্ত কিছুই পাল্টে গেছে তাদের দু’জনের, নিজেদের যেন কোন অস্তিত্ব নেই আর, যা কিছু ভাবনা চিন্তা, কথাবার্তা সমস্ত কিছু তাদের সেই অনাগত ভবিষ্যৎকে নিয়ে – উত্তরাধিকারটা কি এমনই? খুব করে বাবা-মার কথা মনে পড়তে থাকে সমীরের। সে চোখ বুজে বাব-মার কথা ভাবতে চেষ্টা করে; কিন্তু চোখের পাতা দু’টো বন্ধ করলেই কেন জানি মন্টিই তার সামনে এসে দাঁড়ায়। যতবারই সে চেষ্টা করে ততবারই ঠিক একই ঘটনা ঘটতে থাকে – মন্টির হাসিমাখা মুখ - তার কোলজুড়ে একটি অবয়ব, হাত-পা ছুঁড়ে চিৎকার করে কান্না জুড়েছে অবিরাম।

বাইরে এসে ইনফরমেশন ডেস্কের সামনে আবার খবর নেয়ার চেষ্টা করলে সে জানতে পারে অপারেশন প্রায় শেষের দিকে, একটু পরেই তাকে ভেতরে ডাকা হবে, বেবিকে দেখানো হবে। ‘প্যাশেন্ট-এর কী অবস্থা’ জিজ্ঞেস করতে না করতেই ওপাশ থেকে ঝট্ করে ফোন রেখে দেয়ার শব্দ শুনতে পায় সে। রিসিভারটা সে রাখতে চায় না, ইচ্ছে হয় আবার কল্ করে জিজ্ঞেস করে কিন্তু কেন যেন সেটা আপনিই ঝুলে পড়ে যায় তার হাত থেকে। কোনরকমে রিসিভারটা ফোনসেটের উপর রেখে ডেস্ক ছেড়ে সমীর সোজা হয়ে দাঁড়ায় - তার নার্ভ-এর গতি আবার একটু একটু করে দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে থাকে – সে টের পায়। কাঁধের ছোট্ট ব্যাকপ্যাকটাকে পিঠ থেকে খুলে কোলে নিয়ে সে বসে পড়ে বারান্দার কোনার একটা সোফায়। তার পাশাপাশি আরো অনেকগুলো সিঙ্গেল আর ডাবল সোফা একটার সাথে অন্যটা জুড়ে লাগানো লম্বা করে, তার সামনেই আরেকটা সারি স্টিলের চেয়ার – সবগুলোতে লোকজন ভর্তি, শুয়ে বসে সময় কাটাচ্ছে। ইনফরমেশন ডেস্কের সামনের ভীড়টা তেমনই লেগে আছে – সবারই চেহারায় দুশ্চিন্তার ছাপ, যদি কোন খবর আসে তার এই ভেবে। সমীর সোফায় এসে বসলেও সেদিক থেকে চোখ ফেরাতে পারে না - মন্টির অপারেশন শেষ হচ্ছে, তাকে ডাকা হবে একটু পরেই। সোফাটায় খুব নিশ্চিন্ত হয়েও বসতে পারে না সে, অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে – সমস্ত উত্তেজনা যেন তার দু’পা বেয়ে হাঁটু ছাড়িয়ে থাইয়ের উপর লম্বভাবে রাখা হাতের কনুই বেয়ে কব্জি ছাড়িয়ে আঙুল হয়ে ঠোঁট আর নাকের ডগায় এসে কপালে গিয়ে ঠেকছে আর একই ধারায় পুণরায় নীচের দিকে নামছে। হাতের বুড়ো আঙুল দু’টো যুথবদ্ধ হয়ে গ্রীবার নিচে ছড়িয়ে আছে; মধ্যমা, অনামিকা আর কনিষ্ঠারা মুখোমুখি হয়ে একে অন্যের কষ্টটা ভাগাভাগি করে নিতে চাইছে যেন। তর্জনীজোড়া কখনো নাকের উপর, কখনো দু’পাটি দাঁতের ফাঁকে নিজেদের সমর্পন করে মুক্তি চাইছে এ ক্রান্তি থেকে। প্রতীক্ষার প্রতিটি মুহূর্ত সে গুনতে থাকে অবিরাম, নিঃশ্বাসের প্রতিটা ধারা সে টের পায় খুব স্পষ্ট করে, ধীরে ধীরে ভারি হচ্ছে সেটা আর ছড়িয়ে পড়ছে তার আটটি আঙুলের ফাঁকে। হঠাৎ করেই ‘মন্টি চৌধুরী’ শব্দটি কানে ভেসে আসতেই সে তড়াক করে লাফিয়ে উঠে পড়ে, কতক্ষণ ওভাবে কেটেছিল তার নিজেই বুঝে উঠতে পারে না। অপারেশন থিয়েটার ইউনিটের রিভলবিং ডোরের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা মাথায় স্টেরাইল ক্যাপ জড়ানো নার্সের মুখটাকে তার মানুষের বলে মনে হয় না, বোধ হয় স্বর্গের কোন দেবী যেন তার জন্য দাঁড়িয়ে। এক দৌড়ে সমীর চলে যায় অপারেশন থিয়েটারের দরজায়, ‘আপনি ওনার হাজব্যান্ড?’ মাথা নেড়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ে সে পলকেই।

৩.
সমীরের ভাবনায় ছিল ঢুকেই সে দেখতে পাবে সাদা পোশাক পরা নার্স দাঁড়িয়ে আছে – কোলে তার ফুটফুটে, তুলতুলে বাচ্চাটা – তুলে দেবে তার হাতে। কিন্তু তা হয় না, এই ব্যতিক্রমটুকু নিয়ে ভাবার মতো সময়ও হয় না তার - নার্সের পেছন পেছন হাঁটা শুরু করে সে এক বুক উৎকন্ঠা নিয়ে। তাকে অনুসরণ করে কয়েক পা এগুতেই সেই চকোলেট কালারের উর্দি পরা একজন সাপোর্ট স্টাফ দৌড়ে আসে হায় হায় করে, রীতিমত জোর করে থামিয়ে দেয় পুরো করিডোরজুড়ে আড়াআড়ি টানা একটা লাল রেখার ওপারে, ‘আপনার ড্রেস কই, ড্রেস না পরে তো আপনি ভেতরে যেতে পারবেন না’ সমীর কিছু বুঝে উঠতে পারে না দেখে পেছন ফিরে এগিয়ে আসে নার্সটি, ‘আপনি ভিজিটর্স ড্রেস নেন নাই, না?’ অসম্মতির মাথা নাড়ে সে, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, এখানে ইমার্জেন্সি স্টক থেকে একটা দিয়ে দেন ওনাকে, আর্জেন্ট’ সাপোর্ট স্টাফকে উদ্দেশ্য করে বলে এগিয়ে যায় নার্সটি। সাপোর্ট স্টাফটি তাকে সহযোগিতা করে হালকা নীল রঙের পাতলা পোশাকটি পরে নিতে কিন্তু সমীরের চোখ পড়ে থাকে নার্সটির দিকে কোন দিকে যাচ্ছেন সেটা দেখে নেয়ার জন্য। পায়ের জুতো খুলে পাশের র্যা কে রাখা এক জোড়া স্যান্ডেল পাল্টে নিয়ে সে দ্রুত হাঁটা দেয় ভেতরের দিকে। করিডোরের দু’পাশে মাঝে মাঝে অনেকগুলো বেড রাখা – কয়েকটা খালি, কয়েকটাতে নিঃসাড় রোগীগুলো পড়ে আছে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার অপেক্ষায়। ক্রমশ সামনে এগিয়ে যায় সে আশেপাশে অনেকগুলো বেড পেছনে ফেলে। কী হয়েছে মন্টির, কী হয়েছে তাদের বেবিটার – ভাবতে ভাবতে আরেকটি সুইং ডোর ঠেলে সে এসে পড়ে মূল অপারেশন সেলটিতে। সামনে সার্জিক্যাল লাইটের উজ্জ্বল আলোর নীচে সার্জিক্যাল টেবিলে নির্জীব শুয়ে থাকা হালকা সাদা কাপড়ে গলা ঢাকা মন্টি’র মুখটা - রক্তহীন ফ্যাকাশে। ও সুস্থ আছে তো, কিছু হয়নি তো মন্টির? সমীরের উথাল-পাতাল ভাবনা তাকে অস্থির করে তোলে। ঠিক তার ওপারেই একই রকমের অ্যাপ্রন, মুখে মাস্ক, মাথায় ক্যাপ, হাতে গ্লাভস পরা চার-পাঁচজন মানুষের একটা বৃত্ত; সেখান থেকে একজনের নির্দেশ অনুসরণ করে অপারেশন ইউনিটের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে সে। তার চোখ মনে মনে সেই নার্সটিকে খুঁজে কিন্তু এদের মধ্যে কাউকে আলাদা করতে পারে না সে।

অপারেশন সেলের চারপাশটা ঝাপসা অন্ধকার, একটা ভূতুড়ে পরিবেশ যেন ভর করে আছে। মন্টির মাথার দিকটায় সার্জিক্যাল টেবিলটা উপরের দিকে উঠানো, সাদা বেডশিটে ঢাকা টানটান বিছানাটায় তার পুরো শরীরজুড়ে আরেকটি সাদা হালকা চাদর – শুধু মুখখানা দেখা যায় মাঝখানে সার্জিক্যাল লাইটের উজ্জ্বল আলোর বন্যায় – নাক আর মুখজুড়ে অক্সিজেন মাস্ক পরানো, তার ভিতরে ঠোঁট দু’টো হালকা হা হয়ে আছে। নীরব, নিথর মন্টির চেহারাখানা দেখে ভীষণ কষ্ট হতে থাকে সমীরের। সে নির্বাক তাকিয়ে রয় মন্টির দিকে। এর মাঝেই পাশের সেই বৃত্ত ভেঙে একটি বিন্দু ক্রমে এগিয়ে আসে তার দিকে, কাঁধে হাত রাখে, ‘কনগ্র্যাচুলেশন্স, আপনি একটি মেয়ের বাবা হয়েছেন, মা-মেয়ে দু’জনেই ভালো আছে, সুস্থ আছে, শুধু বেবি’র একটু সমস্যা হচ্ছে – অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করেও এখনো কোন শব্দ পাচ্ছি না আমরা। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে, আমরা ভাবলাম আপনার থাকা দরকার, এনিওয়ে, নো ওরি, উই আর ট্রাইং আওয়ার বেস্ট, ওয়েট অ্যান্ড সি। লেট’স ক্যারি অন’ ডাক্তারের কথা অনুসরণ করে তার চোখ চলে যায় সার্জিক্যাল টেবিলটার ওপারে – ডাক্তার আর নার্সরা দাঁড়িয়ে আছে সেখানে – পাশেই স্বচ্ছ একটি ইনফ্যান্ট ইনকিউবেটর - তাদের সব ক’টি হাত যেন সমানেই ব্যস্ত সামনের টেবিলে রাখা সদ্যজাত বেবিটোকে নিয়ে। আশেপাশে অন্য কোন প্যাশেন্ট নেই – বুঝতে তার সময় লাগে না, এ তাদেরই সন্তান, মন্টি’র নাড়ীছেঁড়া ধন।

‘অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করেও এখনো কোন শব্দ পাচ্ছি না আমরা’ কথাগুলো তার কানে বাজতে থাকে, সমীরকে কেমন যেন অসহায় দেখায় খুব। চুলভর্তি মাথা আর খালি গায়ের লালচে চকচকে শরীরের তার বেবিটার বাম পায়ের গোড়ালির উপর হাসপাতালের একটি আইডি স্টিকার লাগানো – হাত, পা সব বারেবারে বুকের দিকে গুটিয়ে রাখতে চাইছে সে। ডাক্তারদের কেউ তার দু’পায়ের পাতার তালুতে আঙুল দিয়ে অনবরত ঘষে যাচ্ছে খুব দ্রুত, কেউ আঙুলগুলো ধরে টানছে, কেউ বা হাতের তালুতে আঙুল বুলোচ্ছে, জোরে জোরে টানছে কচি কচি আঙুলগুলো; অন্য কেউ হাতের তালু দিয়ে খুব দ্রুতলয়ে ঘষছে তার বুক আর পেট। বেবির গায়ে তাদের প্রতিটি স্পর্শ সমীরকে ছুঁয়ে যায় – সে টের পায় কেউ যেন তার আঙুল ধরে টানছে, তার হাত-পায়ের তালুতে ঘষা দিচ্ছে, বুক আর পেটের প্রতিটি চাপে সে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে থাকে; বেবি’র প্রতিটা মুহূর্তের কষ্ট ভর করে তার মাঝে, তার দাঁতের দু’পাটি নীচের ঠোঁটটিকে কামড়ে ধরে ব্যাকুলভাবে আর এর মাঝেই একটা বোবা কান্না যেন গলা বেয়ে উঠে এসে বিড়বিড় করতে থাকে ‘তুই শব্দ কর, অন্তঃত একটা আওয়াজ তোল’।

নিঃশব্দ, নিষ্প্রাণ এ থিয়েটারটিতে সে কি ব্যাকুল প্রচেষ্টা বেবিটিকে নিয়ে এ ক’টি মানুষের - কেবলমাত্র একটি শব্দের জন্য, একটি কান্নার জন্য। প্রতিটি মুহূর্তেই তার মনে হয় এই বুঝি কেঁদে উঠবে তার বেবীটি। সমীর টের পায় একটা শিরশির অনুভূতি - তার গলা হতে বুক ছাড়িয়ে নাভীমূল পযর্ন্ত উপর থেকে নীচে নামছে, আবার নীচ থেকে উপরে উঠে আসছে ক্রমশ। পায়ের দশটি আঙুল পেছনের দিকটায় গুটিয়ে এসে স্যান্ডেলটাকে খামচে ধরে আছে তার আর সে টের পেতে থাকে ধীরে ধীরে হাত-পায়ের অবশ হয়ে আসাটা। কতক্ষণ এভাবে কেটে যায় বুঝে উঠতে পারে না সমীর, মনে হচ্ছিল অনন্তকাল যেন তাকে একটি বোবা কান্না নিয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বেবিটি’র কান্না শোনার জন্য, কিন্তু তবু সে কোন শব্দ করবে না। এর মাঝেই ডাক্তারদের একজন বেবিটির পা দু’টো জোড় করে ধরে উপুড় করে শুইয়ে দেয়, সমীরের মনে হয় কেউ বুঝি তার হৃৎপিন্ডটাই বুঝি হঠাৎ ঝুলিয়ে দিয়েছে উল্টো করে, তার শরীরটা থরথর করে কাঁপতে শুরু করে, দাঁতে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে সে টের পায় তার চোখ-মুখ, মাথা যেন একটু একটু করে টলছে। ঐ অবস্থায় রেখে ডাক্তার তার বেবি’র পিটে মেরুদন্ড বরাবর হালকা করে থাপড় দিতে থাকে। এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ, ক্রমশ দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে থাকা ডাক্তারের হাতটি আর চোখে পড়ে না সমীরের, সে চোখ বুঝে ফেলে। সে কেবল টের পায় নরম মাংসের থালে হাতের তালুর থপ্থপ থপ্থপ অবিরাম একটা শব্দের উঠানামা আর তার মাঝেই হঠাৎ করে ভেসে আসা একটি কান্নার আওয়াজ। সে কি স্বপ্ন দেখছে, নাহ্, সমীর চোখ খুলতেই দেখতে পায় সামনের সেই বৃত্তের জ্যাটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে উপরের দিকে লাফিয়ে উঠল ‘ইয়েস’ বলে। নিমেষেই চিৎকার করে উঠা ডাক্তারদের উল্লাসকে চাপা দিয়ে পুরো অপারেশন থিয়েটারটিকেই কাঁপিয়ে তুলে বেবিটির কান্নার রোল। সমীর এসবের আর কিছুই যেন টের পায় না। তার বুক বেয়ে উপর-নীচ উঠানামা করতে থাকা শিরশির অনুভূতিটা ক্রমাগত উপরের দিকে উঠে আসতে থাকে – গলা, চিবুক, নাক, কান ছাপিয়ে সমস্ত শক্তি নিয়ে তার দু’চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় বাইরে ফেটে পড়তে থাকে – তার দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। মাথাটাকে পেছনের দেয়ালে ঠেকিয়ে দিয়ে সোজা ছাদের দিকে চোখ রাখে সে - চোখের জলের রেখা তার মুখ বেয়ে ঠোঁটের কোনা হয়ে গড়িয়ে কন্ঠনালী পযর্ন্ত পৌঁছে যায়, তাকে ভাসিয়ে দেয় সুখের নোনা স্বাদে – মনভরে সে কাঁদতে থাকে বাচ্চার কান্নাধ্বনির তালে তাল মিলিয়ে।

‘টেক ইউর বেবি ম্যান, হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং, ইনজয় ম্যান, ইউর বেবি ইজ ওকে’, বলে তার কাঁধে হালকা চাপড় দিয়ে বেবিটাকে তার কাছে তুলে ধরে ডাক্তার – এর মাঝেই নার্সরা তার বেবিটাকে একটা বেবিড্রেস পরিয়ে দিয়েছে – তার হাত, পা, মাথা, শরীর সব হাসপাতালের নামাংকিত পোশাকটিতে ভরা, শুধু মুখটুকু দেখা যায়, চোখ দু’টো পিটপিট করছে, জিহ্বার আগায় ঠোঁট দু’টো চেটে নিচ্ছে সে বারবার। দু’হাত বাড়িয়ে তাকে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে সমীর, গালে গাল ঠেকায়; নোনা জলে ভেজা ঝাপসা চোখে সে শিশুটির পানে তাকায় – তার শিরশির সেই অনুভূতিটা ধীরে ধীরে রূপ নেয় আনন্দহিল্লোলে – তার বুকটা ভেসে যেতে থাকে সুখের জোয়ারে, তার চিৎকার করতে ইচ্ছে হয় পরম আনন্দে। ‘ওর কী অবস্থা, ডক্টর?’ মন্টিকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করে সে, ‘সি ইজ কোয়াইট ওকে’। নার্সের হাতে বেবিকে ফিরিয়ে দিয়ে সে বাইরের দিকে এগিয়ে যায়, তার পা দু’টো যেন আর মাটিতে পড়ে না, সে উড়ে উড়ে ভেসে যেতে থাকে হাওয়ায় - সবাইকে ফোন দিতে হবে, জানাতে হবে তাদের খবরটি। দরজা ঠেলে বাইরে আসতেই তার মাকে দেখতে পেয়ে আনন্দটা উপচে পড়ে আরো, তার বোবা কান্নাটা আবার ফিরে আসতে থাকে দু’চোখ ছাপিয়ে। এক দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে তার কাঁধে মুখটা গুজে দেয় সমীর আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে ছোট্ট শিশুর মত - তার চরম উদ্বেগ, উৎকন্ঠার পর এতোক্ষণে সে বুঝি একটু প্রশান্তির ছোঁয়া পেল। তার মা শক্ত করে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে, পিঠে আর মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে জানতে চায়, ‘বাবা তুই কাঁদছিস কেন, কী হয়েছে তোর’ তার মায়ের ভেজা কন্ঠস্বর টের পায় সে, ‘মা আমি কাঁদছি, ভেতরে যে আমার মেয়ে কাঁদছে তাই’ বলে মায়ের কাঁধ থেকে মাথাটা তুলে এনে সোজা হয়ে দাঁড়ায় সে; দু’হাতের তালুতে তার মায়ের কান্নাভেজা মুখখানা নিজের মুখের সামনে তুলে ধরে সমীর, দু’হাতের বুড়ো আঙুলে তার চোখের জল মুছে দেয়, ‘তুমি কেন কাঁদছো মা’? নিজেকে এবারে আর সামলাতে পারে না সমীরের মা, সশব্দে কেঁদে উঠেন তিনি, ‘তুই যে কাঁদছিস বাবা, তুইতো আমার ছেলে’।

আশীষ বড়ুয়া
০১.০৮.২০১৫
ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×