শীতকাল। বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখিরা আসছে এদেশে। একদিন মিজান মলিল্গক, পাখি শিকারি যুবক, বন্দুক হাতে চলে গেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
তিনটি বিদেশি পাখি শিকার করে সন্ধ্যায় বাড়ির পথে রওনা হলো মিজান। কিছুদূর আসার পর হঠাৎ ষণ্ডামার্কা এক লোক পথ আগলে দাঁড়িয়ে বলল, 'দাঁড়াও, আমি গোয়েন্দা সংস্থার লোক। খবর পেয়েছি তুমি অতিথি পাখি শিকার করে নিয়ে যাচ্ছ।'
'ঠিকই শুনেছেন।'
'তা, তোমার পাখি শিকারের লাইসেন্স আছে?'
'জি আছে,' বলে পকেট থেকে লাইসেন্স বের করে লোকটির চোখের সামনে ধরল মিজান।
লাইসেন্সটি হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করল লোকটি। না, আসলই। এবার মিজানের ব্যাগ থেকে মৃত পাখি তিনটি বের করল। প্রথম পাখিটির ঠোঁট দুটো ফাঁক করে বলল, 'এটা তো সাইবেরিয়া এলাকার পাখি। এই প্রজাতির পাখি শিকারের লাইসেন্স কি তোমার আছে?'
পকেট থেকে আরেকটি লাইসেন্স বের করে মিজান বলল, 'জি আছে, এই যে দেখুন।'
'ওকে,' বলেই দ্বিতীয় পাখিটির ঠোঁট দুটো ফাঁক করে লোকটি বলল, 'এটা দেখছি অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলের বেশ দামি পাখি। এটা শিকারের লাইসেন্স...?'
বিরক্ত হলেও পকেট থেকে অন্য একটি লাইসেন্স বের করে দেখাল মিজান। তাতেও সন্তুষ্ট হলো না লোকটি। তৃতীয় অর্থাৎ সর্বশেষ পাখিটির ঠোঁট দুটো ফাঁক করে মুখের ভেতরটা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে লোকটি বলল, 'হুম! নেপালের দুর্লভ প্রজাতির পাখি। এটার...'
লোকটিকে কথা শেষ করতে না দিয়ে অন্য একটি লাইসেন্স বের করে মিজান রুক্ষ্মস্বরে বলল, 'নিন, চেক করুন।'
লাইসেন্সটি চেক করে পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিল লোকটি। বিস্মিত কণ্ঠে বলল, 'তুমি তো দেখছি একেবারে জাত শিকারি হে! তা তোমার বাড়ি কোথায়?'
'এতক্ষণ আপনার কর্মকাণ্ড দেখে বোঝা গেল আপনি এ বিষয়ে বেশ অভিজ্ঞ..,' লোকটির চোখের সামনে গিয়ে মুখ হাঁ করে মিজান বলল, 'এবার আপনিই বলুন দেখি, আমি কোন এলাকার!'