somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি গল্প ও উপলব্ধির কিছু কথা ...... [রি-পোস্ট।। যারা পড়েননি তাদের জন্য]

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গৌতম বুদ্ধ তখন বেশ বৃদ্ধ। সে সময় তার শিষ্যত্ব গ্রহন করল এক ধূর্ত চালবাজ লোক। সে মনে মনে ভাবল, বুদ্ধ তো কয়েক বছর পরেই মারা যাবে। তার আগেই এই বেটার কাছ থকে কিছু জিনিষ শিখেটিখে নিয়ে বুদ্ধ মরার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বুদ্ধের অবতার বলে ঘোষণা করবে। আর ব্যাস, একবার লোকে অবতার ভাব্লেই তো কেল্লা ফতে। সারা জীবন পায়ের উপর পা তুলে শুইয়ে শুইয়ে কাটিয়ে দেয়া যাবে।

পরিকল্পনা মোতাবেক সে কাজ শুরু করল। সারাদিন বুদ্ধের সেবাযত্ন করে। বুদ্ধকে দেখায় যে সে খুবি ভালো নিবেদিত শিষ্য। কিন্তু বুদ্ধ তার ভণ্ডামি ধরে ফেলে। তারপরও তাকে কিছু বলে না।
এদিকে একে একে বছর পার হয় কিন্তু তার আধ্যাত্মিক শক্তি, ধ্যানের ক্ষমতা এসব কিছুই লাভ হয়না। ভণ্ড শিষ্য বুঝতে পারে যে তার নিয়ত ভালো নয় বলে সে এসব কিছুই লাভ করতে পারবেনা। এটা বুঝতে পেরে তো সে মহা ক্ষুদ্ধ হয়ে গেলো। রেগেমেগে আগুন । সিদ্ধান্ত নিল যে এটার প্রতিশোধ সে নিবেই নিবে।

একদিন সকালবেলা, বুদ্ধ তখন একা বসে ধ্যান করছেন। ভণ্ডশিষ্য গেলো তার কাছে। গিয়েই বুদ্ধকে প্রচণ্ড গালাগালি। বলছে, বেটা বুড়া এতদিন তোমার কাছে থাকলাম। কিছুই শিখতে পারলাম না। তুমিই বেটা ভণ্ড, প্রতারক ......... ইত্যাদি ইত্যাদি। বুদ্ধ চুপচাপ শুনছেন।

এদিকে গালাগালির স্টক কিন্তু অনেক কম। গালি দিতে দিতে গালির স্টক শেষ হয়ে গেলো। ভণ্ডশিষ্য যখন থামল এবার বুদ্ধ মুখ খুলেন এবং অত্যন্ত শান্ত গলায় বললেন, "আমি কি তোমাকে কোন প্রশ্ন করতে পারি?"। এদিকে তার মেজাজ তখন খারাপ। রাগি রাগি গলায় বলল, “কি বলবেন বলেন”। বুদ্ধ প্রশ্ন করলেন, “ধরো তোমার কিছু জিনিষ তুমি কাওকে দিতে চাচ্ছ, সে যদি সেটা না নেয় তাহলে জিনিসটা কার কাছে থাকল?” ক্ষ্যাপা শিষ্য জবাব দিল, “আরে এতদিন ধরে ধ্যান ফ্যান করছেন আর এটাই জানেননা? আমার জিনিষ আমি যাকে দিতে চাচ্ছি সে যদি না নেয় তাহলে জিনিসটা আমারি থাকবে।” বুদ্ধ আবার জিজ্ঞেশ করলেন, “তোমার জিনিষ তুমি যাকে দিতে চাচ্ছ সে না নিলে তোমারি থাকবে?” ভণ্ডশিষ্য উত্তর দিল, “হ্যাঁ, আমারি থাকবে”। এবার বুদ্ধ একটু হেসে বললেন, “তাহলে এতক্ষন তুমি আমাকে যা কিছু উপহার দিয়েছ (অর্থাৎ যা কিছু গালাগালি করল) তার কিছুই আমি নিলাম না।”

--------------------------------------------------

গল্পটা সংগৃহীত আর আমাদের কম বেশি সবারি জানা। তারপর আবারো সবাই কে আরেকবার মনে করিয়ে দেয়ার কারন আছে। ইদানিং আস্তিকতা আর নাস্তিকতা, ধর্ম, এসব নিয়ে অনেক জলঘোলা হচ্ছে। প্রত্যেকে একে অপরকে গালাগালি দিচ্ছি , তর্কে জড়িয়ে পড়ছি। আসলে এসব করে আমরা আমাদের বিশ্বাসটাকেই ঠুনকো করে ফেলছি। আমরা যেন নিজেদের বিশ্বাসটাকেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমরা তর্কে জড়িয়ে প্রমান করে দিচ্ছি যে আমাদের বিশ্বাসটা কত দুর্বল। তা না হলে অন্য কেউ আপনার আমার স্রষ্টা নিয়ে গালি দিলে বা ভুল কোন কিছু বললে এত রেগে যাবার কারন কি? আসলে উনি বললেও স্রষ্টা আছেন, না বললেও আছেন। আর যদি কেউ কিছু বলেও তাহলে উপরের গল্পের মত আপনি তার উপহার(!) গ্রহন না করলেই তো হল। আমাদের কাজ হউয়া উচিত প্রত্যেকের বিশ্বাসকে সম্মান দেখানো। নিজে যে ধর্মেরই হই না কেন অন্নের ধর্মে কে যেন গালি না দেই। থাকিনা যে যার বিশ্বাস নিয়ে!
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×