বেলা ১১ টায় মিরপুর এলাকায়।
বাচাঁও,বাচাঁও কেউ আমার মাকে
বাচাঁও। এই বলে চিৎকার করতে থাকে
সেলিম নামে এক যাত্রী। যে তার
মমূর্ষ মাকে নিয়ে, নওঁগা থেকে
এসেছে ঢাকায়। ভালো ডাক্তার
দেখাবে বলে। কিন্তু আমাদের
প্রানের রাজধানীর এমন বেহাল দশা
যে, রাস্তায় গাড়ী চলাছে না। চলবে
কি করে গাড়ী? এটা কি রাস্তা
নাকি পদ্মা নদীর একটি শাখা , তা
বোঝার কোন উপক্রম নেই। রাস্তায় থৈ
থৈ করছে পানি । এই দিকে সেলিমের
মার প্রান যায় যায় অবস্থা। সে যে
বাস থেকে নেমে তার মাকে নিয়ে
হেটে যাবে তাও সাধ্য নেই।ফুটফাত
গুলোতে বুক সমান পানি। তাই কন্নাই
একমাত্র সম্বল হয়েছে তার। সময় যত
যাচ্ছে, বৃষ্টির পানিতে রাস্তার
পানি তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেলিমের
মার দমও যেন তত পুড়িয়ে আসছে।
এভাবে কত মানুষ যে ভোগান্তির
শিকাড় হয়েছে,আর কান্নাকে সম্বল
করে নিয়েছে তা বলার অপেক্ষা
রাখে না। সকালে ভালো রাস্তায়
শিশু গুলো স্কুলে গিয়েছে। আর আসার
সময় বুক সমান পানি। এ দিকে
অভিবাবকরাও সন্তারদেরকে আনতে
যেতে পারছেনা। চিন্তায় যেন
কান্নার শেষ নেই। এত ভোগান্তি এত
কিছু এসব দেখার যেন কেউ নেই। বার
বার সুন্দর সুন্দর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানান
জন ক্ষমতায় আসছে। নির্বাচনের সময়
তাদের কথা গুলো শুনে মনে হতো, যাক
এখন থেকে মানুষের কষ্ট গুলো লাগব
হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নির্বাচন
শেষতো সব শেষ।
১৯৭১ সালে ঢাকা রাজধানী হওয়ার
পর। এখন এই ঢাকায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ
লোকের বাস। এই শহরটিতে রোজ ৪ লাখ
থেকে সাড়ে ৪লাখ যানবাহন চলাচল
করে। বাংলাদেশ সংবিধানের ৫(ক)
অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এটি বাংলাদেশের
অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক
জীবনের প্রধান কেন্দ্র। অথচ আপসোস
আমদের জন্য আমাদের প্রধান কেন্দ্র
ঢাকা একটু বৃষ্টি হলেই নদীতে পরিনত
হয়। বিশ^ব্যাপী নগরগুলোর
বসবাসযোগ্যতার মাপকাঠিতে কয়েক
বছর ধরেই ঢাকার অবস্থান সর্বনি¤েœ।
চলাচলের কোন উপায় থাকে না।
মানুষের কষ্টের যেন শেষ থাকে না।
ড্রেনের ময়লা গুলো উপরে এসে এমন
নাজুক অবস্থার সৃষ্টি করে যা কোন সভ্য
সমাজ মেনে নিতে পারে না। এর
থেকে পরিত্রান চাই। মানুষের কষ্ট
গুলোকে লাগব করার জন্য একটু ব্যবস্থা
চাই। আর যেন কোন ছেলেকে রাস্তায়
চিকিৎসার অভাবে তার মার মৃত্যু না
দেখতে হয়। আর যেন কোন শিশুকে
পাঠশালা থেকে আসতে কান্নায়
ভেঙ্গে না পড়তে হয়। এই আশায় বুক
পেতে আর কতদিন জানি থাকতে হবে
জানি না।