somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাম্পত্য জীবন, বিয়ের পরে (পর্ব-১)

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুন! মনে আছে সেই সময় গুলোর কথা? আমরা দুজন এস.এম.এস. আদান প্রদান করতাম। প্রতিদিন-প্রিতিক্ষণ-প্রতি মুহূর্ত দু’জন দু’জনে বিভোর থাকতাম। প্রতিক্ষায় থাকতাম, এই বুঝি আমার মুন আমাকে আর একটি এস.এম.এস. পাঠালো! মনের মধ্যে সারাক্ষন তোমার প্রেম নিয়েই আমার জীবন কাঁটতো। আজও তা সেই সময়ের মতোই বর্তমানে এসেও সত্য।

আমরা দু’জনে কতো কি বলতাম! কতো কতো স্বপ্ন যে আমাদের ছিলো। কতো আশা, কতো ইচ্ছা, কতো শান্তিময় ছিলো সেই সময়। কে জানতো তখন, পৃথিবী এতো নিষ্ঠুর? জানলে তো আমি তখনই তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম। এতো ঝামেলার থেকে তখন পালিয়ে যাওয়াটা সহজ ছিলো। আমি তা করিনি মুন! আমি সবসময় তোমার সর্বোচ্চ সম্মান বাঁচাতে চেয়েছিলাম। আজও আমি তোমার সম্মানের সাথে আপোষ করি না। আমাকে তুমি যত বড় পাগল ভাবো, ভাবতে পারো আমি কিন্তু তোমাকে একটু ভালোরাখবার জন্যই এতো বেশি মরিয়া হয়ে উঠে এসেছি।

বলতে পারো মুন কত টাকা হলে প্রেমিক প্রেমিকা সাংসারিক জীবনে সুখি হয়? আমি তো দেখি জীবনে সুখি হবার জন্য কোনো টাকারই দরকার হয় না। শুধু নিজেদের সামান্য পরিশ্রমই দুজনকে প্রেম ও সম্মান নিয়ে বাঁচাতে পারে। সবার সামনে মাথা উচু করে দাঁড়াতে অতবেশি অর্থ কড়ির দরকার হয় না। একটি বড় মন থাকলেই পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে বাঁচা যায়। তার আর বেশিকিছু দরকার হয় না। আমি তোমাকে ওমন একটি মন উপহার দিতে চেয়েছিলাম। যার মধ্যেই তোমার আমার সকল চাওয়া ও পাওয়া ছিলো। নভোথিয়েটারে মানুষ টাকা পয়সা খরচ করে গ্রহ-নক্ষত্র-তারকারাজি দেখে আনন্দ পায়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যে এতো বেশি নিহারিকা-তারা-গ্রহ-নক্ষত্র-ধুমকেতু-উপগ্রহ আমাদের মাথার উপর সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন, তা মানুষ খেয়াল করতে ভুলে গেছে। ঐ আসমান দেখতে কোনো টিকিটি কাটতে হয় না। তোমার আমার প্রেম টিকিটহীন আসমানের মতো বড় ও সুন্দর। এজন্যই আজ আমাদের প্রেম অনেক মানুষকে তাঁদের আসল পথ বলে দিবে।

তুমি আমার কাছে এলেনা কিন্তু অন্যরা যাতে সুখে শান্তিতে প্রেম নিয়ে হাসি আনন্দে থাকতে পারে, সেই চেষ্টা করা কি অপরাধ? আমার মুনকে আমার কাছে চাওয়া ও প্রবল বেগে পাগলের মতো ভালোবাসা যদি রাষ্ট্রবিদ্রহ হয় আমি সেই দায় নিতেও রাজি আছি তবুও আমার মুনকে আমি কষ্ট পেতে দেবো না।

তুমি আমাকে বার বার এস.এম.এস. এ রিকোয়েস্ট করতে আফটার ওয়েডিং এর কথা। বিয়ের পরে কি হবে না হবে তাই। আমিও হাসি মুখে ও তোমার ভালোবাসায় ডুবে তোমাকে বলে যেতাম। আমার কাজই ছিলো তোমাকে আনন্দ দেয়া প্রিয়তম।

আজ দেখো মুন! তোমার আমার দুজনেরই আফটার ওয়েডিং এসেছে কিন্তু সেখানে আমরা দুজন আলাদা হয়ে গেলাম। আমার সাথে একটি আর তোমার সাথে একটি অপরিচিত ক্যারেকটার এই সুন্দর প্রেমের মধ্যে কলঙ্ক হয়ে উঠে এলো। তাই বলে আমাদের স্বপ্ন হারাবে কেনো? আল্লাহ্ চাইলে সব কিছু করে দেখাতে পারে। এজন্যই আমার প্রেম কে আর আল্লাহ্ ভরসাকে আমি এক সুতোয় গেঁথে রেখেছি। আমি জানি মুন তুমি আসবেই। মুন ভালোবাসার মতো ভালোবাসা কখনও কলঙ্ক দেয় না। আমাদের প্রেম পবিত্র। আমরা দু’জন নিষ্পাপ। আমাদের আর কলঙ্ক মেনে নিতে হবে না। আমরা দু’জন মিলেই সংসার গড়বো। সেই সংসার হবে দুনিয়ার সব থেকে আদর্শ সংসার।

সিনেমার শেষ দৃশ্যে নায়ক-নাইকার মিল হয়। আমি ঐ দৃশ্য দেখে কখনও আনন্দিত হইনি। আমি দেখেছি সিনেমা শেষে আরেক সিনেমা যেখানে যত খারাপ দিনই আসুক না কেনো, প্রেমকে কখনই খারাপের জালে আটকে রাখতে পারে না। মুন! সবাই স্বপ্ন দেখে বাসর রাত পর্যন্ত আর তুমি দেখতে আমাদের পুরো জীবন। তাইতো তুমি সবসময় আফটার ওয়েডিং এর কথা আমার কাছ থেকে জানতে চাইতে। মুন আমাদের কি জানা শোনার দিন আজও শেষ হয়ে গেছে? আমি মনে করি না, যে আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমাদের সবে মাত্র প্রেমের ক্ষেত্র শুরু হয়েছে। প্রেম সবসময় সচল একটি প্রক্রিয়। কখনও জিজ্ঞাস করতে হয় না, কবে প্রেম শুরু হয়েছিল আর কবে প্রেম শেষ হবে। প্রেমের শুরু শেষ থাকতে নাই। প্রেমের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে হয়। শুধু প্রিয়মানুষটির সেবা করতে জানতে হয় আর সেই সাথে প্রিয়মানুষটির ইচ্ছাকে নিজের ইচ্ছা সম জ্ঞান করতে হয়।

তোমার আমার বাসর রাত নিয়ে আমার কখনও তেমন কোনো বড় স্বপ্ন ছিলো না। আমার স্বপ্ন ছিলো আমাদের জীবনের প্রতিটা রাতই হবে এক একটি বাহারি ফুলের মতো এক একটি বাসর। আমি সকাল-দুপুর-বিকাল-রাত সবসময়ই তোমার সাথে থাকবো। তোমার সাথে যোগাযোগই হবে আমার জীবন। আমার জীবন আর তোমার জীবন বলতে আমার কাছে কোনো আলাদা জীবন ছিলো না। আমাদের দুজনার জীবন মিলিয়েই হবে একটি মহান প্রেম কাহিনী।

তোমাকে সবসময় আদর করতে পারবো। এই আশায় আমি আজও আছি। প্রতিটা সকালে আমি তোমার ঠোটে চুমু দিতে চেয়েছি। প্রতিদিন তোমার আমার মিলনে ভরে উঠবে আমাদের মানব জীবন। এই প্রত্যাশা আমার ছিলো ও এখনও আছে। প্রতিদিন দু’জন দু’জনকে পাগলের মতো আদর করবো। বুকে জড়িয়ে নেবো। ঠোটে ঠোট রেখে জীবনের সাধ মিটাবো। তোমাকে জড়িয়ে ধরে বুঝাতে চেয়েছি, প্রেম সব থেকে বড় সত্য ও প্রেমই হলো প্রকৃত আনন্দ। প্রতিদিন যেমন নতুন নতুন সূর্যের আলো আমাদের জীবনকে আলোকিত করে ঠিক তেমনি প্রতিদিন আমাদের মিলনে মিলনে জীবন আলোকিত হয়ে উঠবে। আমাদের মিলনের দৃপ্তিরাশি আকাশে ছড়িয়ে যাবে। চন্দ্র-সুর্য-গ্রহতারা আমাদের মিলন দেখে আত্মহারা হয়ে যাবে। ওদের জীবনীশক্তি হবে আমাদের মিলন মিলন খেলা। ইস্ মুন সমস্ত সৃষ্টি রিশ করবে আমাদের সম্পর্ক দেখে।

তোমার আমার বিয়ের পর শুধু একে অন্যকে প্রতিদিন নতুন করে আবিষ্কার করতে থাকবো। আমাদের জীবনে অন্য কোনো মানুষের কান কথার কোনো দাম থাকবে না। আমরা দু’জন যা ভালো মনে করবো তাই হবে। কান কথা ও বজে ভাবে প্রভাবিত হওয়া- মানুষের দাম্পত্য জীবনের পরিপূর্ণ মজার সামনে কোনো ঝাড়ু নিয়ে তেড়ে আসা ঝগড়াটে মহিলার মতোই মনে হয়। আমরা আমাদের বিশ্বাস করবো। আমারা আমাদের বিশ্বাসের মধ্যে অন্য কাউকে বন্ধু করতে পারি না। আমাদের সম্পর্ক হবে আমাদের প্রেমের মধ্য দিয়ে উজাড় করে বয়ে যাওয় কোনো সমুদ্রের বিশাল মৌজের মতো। সে উত্তাল ঢেউ আমাদের দাম্পত্তকে সুন্দর থেকে সুন্দরের পথে নিয়ে যাবে। কোনো কান কথা ও কুট কৌশলের অভিষাপ আমাদের সেই প্রেম ভরা ঢেউকে বাধা দিতে পারবে না।

জানো মুন! এ ধরায় অনেক মানুষ শুধু কান কথা বলতে বলতেই তাদের মূল্যবান সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়। কিছু মানুষ শুধু অন্যের জীবনকে বাজে কথা বাজে কাজ দিয়ে প্রভাবিত করতে চায়। তাদের খপ্পরে আমরা দু’জন কখনও পড়বো না। আমরা আমাদের প্রেমের শক্তি নিয়েই সামনে এগিয়ে যাবো। যেখানে প্রেম থাকে না সেখানে কু-কথা ও কুবুদ্ধি হাজির হয়। এই কুটচালকে দমন করার একমাত্র উপায় হলো, প্রেমে ভরা বিশ্বাস।
এই দুনিয়ার ছোট্ট জীবনটিতে আমি তোমাকে এক সেকেন্ডের জন্যও মিস করতে চাই না। শুধু প্রেম আর আদরে আদরে দাম্পত্য জীবনের স্বর্ণালী সময় গুলো পাড় করবো।

মুন! জীবন কোনো প্রতিযোগীতা না। আমরা অন্য মানুষদের কাছে প্রতিযোগীতায় দৌড়ানোর জন্য এই পৃথিবীতে আসি নি। আমরা এসেছি দুজন মিলে প্রেমের সংসার গড়তে। আমাদের প্রেমে আমরা এমন ভাবে জমে থাকবো যে, সমস্ত মানুষ আমাদের প্রেমের রহস্য ও প্রেমকে জানার জন্য ব্যকুল হয়ে যাবে। এমন এক সংসার আমরা উপহার দেবো, যেখানে শুধু দুজনের পজেটিভ ডিসিসন দেখে অন্যরাও আমাদের মতো হতে চাইবে। আমরা আমাদের প্রেমের সাথে কখনই কম্প্রোমাইজ করবো না। তোমার আমার প্রেমই আমাদের একমাত্র বাঁচার সম্বল। এই প্রেম হারিয়ে কিভাবে আমরা বেঁচে আছি? কেনো আমরা বেঁচে আছি? কার জন্য আমরা বেঁচে আছি? কোন আশায় বেঁচে আছি? কেনো আমরা একে অপরে এতো কাছে থেকে, এতো কষ্ট পাবার পরও এক সাথে বসবাস করতে পারছি না? আমরা দু’জন এক হলে জগতে কার এমন কি-বা ক্ষতি হতো? আমরা শুধু শুধু কেনো বিরহকে ডেকে এনেছিলাম?

মুন! এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর আমার জানা নেই। বা আমি এই প্রশ্নের উত্তর আমার সমস্ত লেখার মধ্যে রেখে দিয়েছি। তোমার কাছে উত্তর না থাকলে তুমি উত্তর খুঁজে নিও। একবার উত্তর খুঁজে পেলে তোমাকে আর কেউ আটকে রাখতে পারবে না। তুমি আসবেই মুন। তুমি আসবেই।
চলবে.....
https://www.facebook.com/asif.ud
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×