somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাম্পত্য জীবন, বিয়ের পরে (পর্ব-৪)

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুন! প্রেম প্রেম রবে আমি চিৎকার করছি। মুন মুন বলে শুধু তোমাকে ডাকছি। কেউ সারা দিচ্ছে না। তারপরও আমি তোমার স্বপ্নের কথা লিখে গেলাম। আজ যারা আমাদের বোঝে নি, কাল তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে।

দুঃখ লাগে, আজ যারা আমাদের দুজনের হাত কে এক করে দিতে পারতো কাল তারা এটুকু সময়ের জন্যই আফসোস করবে। আমার সব ভালোবাসা শুধু তোমাকে ঘিরে। আমার অন্তরে আজ তোমার পোড়া মনের বাঁশি বেজে উঠছে। সেই সুরে সবাই অবাক হচ্ছে। আমি প্রেম পেতে এসেছি সবাইকে অবাক করানো আমার কাজ না। আমার কাজ শুধু তোমাকে ভালোবাসা। তোমার সব ইচ্ছাকে আমি আমার অন্তরে গেঁথে নিয়েছি। তোমার স্বপ্ন ভরা অন্তর থেকেই আজ আমি সবার সাথে কথা বলে যাচ্ছি।

মুন! বিয়ের পরে, আমি তোমাকে চোখের আড়াল হতে দেবো না। দু’জনে দুটি জগত এক হয়ে যাবে। কর্মের খাতিরে দু’জন কে দু’জায়গায় কাজ করতে হলেও, আমরা সারাক্ষন যোগাযোগ করে যাবো। দুজনের দুটি ফেসবুক একাউন্ট থাকবে। যেখানে বসে আমরা আমারদের মনের ভাষা ও ভাব বিনিময় করবো। নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্স হবে। নিয়মিত ফোনে কথা হবে। তুমি যদি কর্মক্ষেত্র থেকে আমার আগে ছুটি পাও তাহলে তুমি সোজা আমার কাছে আসবে। আর আমি যদি তোমার আগে ছুটি পাই তাহলে আমি তোমার কাছে প্রতিদিন ছুটে যাবো। দু’জন দু’জনকে ছাড়া থাকবো না। হাত ধরে ধরে তোমার সাথে হাঁটবো। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, যুগের পর যুগ- এভাবে দু’জন চলতে থাকবো। তারপরও আমাদের পথ চলা শেষ হবে না। প্রতিমাসে কমপক্ষে একটানা চারদিন ছুটি বেড় করতেই হবে। বাধ্যতামুরক উইক এ্যান্ডের ছুটির সাথে ঐচ্ছিক বা নৈমর্ত্তিক ছুটি বেড় করে চার/পাঁচ দিন ছুট বেড় করতে হবে। এই চার দিন সময় শুধু দু’জনে বেড়াতে যাবার জন্য। অল্প টাকা থাকলে আশেপাশের দৃশ্য দেখবো, আপনা আত্মিয়দের কাছে বেড়াতে যাবো আর বেশী টাকা থাকলে দেশ-বিদেশের বড় বড় পর্যটন প্লেসে ঘুরতে যাবো। তুমি আমার নাইকা, আমি তোমার নায়ক।

প্রতিদিন সকালে ও রাতে আমি তোমার ছবি তুলবো। জীবনের প্রতিটি দিনের ছবি তোলা থাকবে। আমি তোমার ছবিগুলোকে ভালোভাবে সংরক্ষন করে রাখবো। একদিন ছবি জমতে জমতে অনেক প্রোট্রেট ফটোগ্রাফি হয়ে যাবে। আমি সবাইকে বলবো আমার মুনের প্রতিদিনের ছবি আমার কাছে আছে। ভবিষ্যত তোমার ছবি দেখে নমস্কার করবে। মুন! তুমি আমি কোনো রোবট নই। তোমি আমি হলাম জলজ্যান্ত মানুষ। আমাদের আবেগ বিশ্বসেরা। আমরা প্রেম করেছি। আমরা দু’জন দু’জনকে জন্মের মতো ভালোবেসেছি। আমরা কোনো চুরি করিনি। আমরা প্রেম করেছি। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি ও দু’জন দু’জনের কাছে থাকতে চাই। এই সত্যটিকে বুক উচু, মাথা উচু করে বললে কি হবে? কে আমাদের ভালোবাসা কে রুখতে আসবে? যদি কেউ আসে তাকে কি আমরা সামলাতে পারবো না বলো?

মুন! বিয়ের পর আমাদের প্রতিটি দিন হবে মহাসুখের। আমি তোমাকে একদিন একরাতের জন্যও মিস করতে চাই না। আমরা দু’জন বিকেলে বাইসাইকেল চালাবো। তুমি তো এমনিতেই সাইকেল চালাতে পারো। আমরা দুজন দুটি বাইসাইকেল চালাবো। বাইসাইকেল দুটি হবে একই রকম। মুন! আমাদের রেসিডেন্স হবে কোনো সুন্দর শহরতলিতে। না শহর না গ্রাম এমন একটি জায়গা আমরা থাকার জন্য বেছে নেবো। প্রতিদিন বাইসাইকেল জগিং করলে শরীরও ভালো থাকবে সেই সাথে প্রতিদিনের বর্নিল সুন্দর প্রকৃতি রং বদলানোকেও উপভোগ করতে পারবো। আমরা আমাদের খরচায় রাস্তার পাশে ফুলের চারা লাগিয়ে দেবো। আশেপাশের পরিবেশ ফুলে ফুলে ভরে উঠবে। রাস্তায় চলার সময় আমাদের লাগানো ফুলগাছ ও ফুল আমাদের দিকে কৃতজ্ঞতা ভরা প্রেম চোখে তাকিয়ে থাকবে। প্রতিদিনের ফুল প্রতিদিন আমাদের অভিনন্দিত করবে।

মুন! প্রতি সপ্তাতে অন্তত দু’দিন তুমি তোমার হাতে দু’টি গাছ লাগাবে। আমি তোমাকে হেল্প করবো। ফুল, ফল, মসল্লা, ওষধী, লতা, পাতাবাহার, কাঠবৃক্ষ, নাইট কুইন সহ দেশি বিদেশি বহু গাছ তোমার হাতে লাগাবে। প্রতিটা গাছকে গান শুনাবে, দেখবে তোমার লাগানো গাছ গুলো একদিন স্বর্গের বাহারী গাছকেও হার মানাবে। মুন! আমি আমার প্রতিটি জায়গায় তোমার ভালোবাসার নিদর্শন রেখে দিতে চাই। আমার আইডিয়া দিয়ে তোমাকে রাঙাতে চাই।

মুন! আমি পাথর, কাদা মাটি, মোম, মেটাল ও বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে তোমার চেহারা ও ঢং এর আদলে একেকটি ভাস্কর্য তৈরি করবো। সেই ভাস্কর্যগুলো সব জায়গায় সাজিয়ে রাখবো। আমার মুন কে আমি জগতবিখ্যাত করে দেবো। সবাই শুধু তোমাকে দেখবে। আমাকে না দেখুক তাতে কোনো অসুবিধা নাই। আমি না হয় গাছের শিকড়ের মতো মাটি থেকে বিভিন্ন স্বাদের রস সংগ্রহক থেকে গিয়ে, তোমাকে কোনো বটবৃক্ষের মতো শক্তিশালী ও ছায়ময়ী করে গড়ে তুলে দিলাম। মুন! আমি তোমাকে দেখে দেখে তোমার প্রটেট ছবি আঁকবো। সুন্দর সুন্দর অয়েল পেন্টিং, পেন্সিল স্কেপ, ওয়াটার কালার দিয়ে আমি তোমার ছবি এঁকে যাবো। আমার ভিতরে যে মুনের বসবাস তাকে আমি সবার সামনে উম্মুক্ত করে দেখিয়ে দেবো। আর্ট এ্যান্ড কালচারের প্রতিটা জায়গায় আমি তোমাকে নিয়ে বসাবো। আমাদের সব স্বপ্ন কে আমি সত্যি করে দেবো জান!

মুন! জোস্না রাতে আমরা ছাদে গিয়ে বসে থাকবো। তোমাকে আকাশের সব তারাগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। আমি তোমাকে দেখাবো, সুন্দর সুন্দর গানের সাথে স্রষ্টা কিভাবে তার আকাশের তারা গুলোকে নিয়ন্ত্রন করেন। প্রকৃতির সব রহস্য আমি তোমাকে দেখিয়ে দেবো। আমরা দুজন অলোআধারীকে উপভোগ করবো আর স্রষ্টা তাঁর আপন ইচ্ছে মতো আমাদের চারপাশের প্রকৃতিকে নাচাবেন। আমরা সেই অপার্থিক দৃশ্য অবলোকন করবো। তোমার সতিনি আকাশের চাঁদ তোমার চরনে এসে প্রনায়াম করবেন। আমাদের এই প্রেমভরা চির অম্লান জুটিকে প্রকৃতির সবকিছু সম্মান করবে।

ইউসুফ নবী ছেলেবেলায় স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাকে আকাশের সব চন্দ্র-সুরুজ-গ্রহ-তারা সেজদা করছে। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা তার বাপের কাছে বলেছিলো। এটুকু কারণে ইউসুফের বাজে ভাইদের কুবুদ্ধি ও অত্যাচারের কারণে ইউসুফকে বাড়ী ছাড়া হতে হয়। পরবর্তিতে ইউসুফ জোলেখার প্রেমে পড়ে। ইউসুফ কারাগারে পর্যন্ত থাকতে হয়। তারপরও ইউসুফ তার জোলেখার প্রেমের সাথে আপোষ করে নি। তাইতো তাঁদের কথা আজও মহাঅম্লান। আমার প্রানের জোলেখা তুমি। আমি আকাশের সব চন্দ্র-সুর্য-তারা কে তোমার-আমার প্রেমের দাস করে রাখবো। তুমি শুধু একবার আমার কথা ভাবো মুন। শুধু একবার আমাকে কাছ ডেকে দেখ। দেখবে তোমার স্বপ্ন, তোমার আশা, তোমার ইচ্ছেশক্তি, তোমার কৃয়েটিভিটি, তোমার প্রেম তোমার মতোই আছে। কেউ তাকে বিনাশ করতে পারবে না। তোমার আমার প্রেম ঐশ্বরিক ভাবে এসেছে জান! যা তুমি তোমার হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারবে। আমি তোমাকে সবসময় আমার কাছে কাছে ও চোখে চোখে রাখতে চাই। আমি সারাজীবন তোমার সাথে মিলন করতে চাই। আমি তোমাকে এক সেকেন্ডের জন্যও দুরে রাখতে চাই না।

দেখো মুন! আজ আমরা ম্যাচিউরড। আজ আমাদের দুরে থাকতে হবে কেনো? কে বা কারা আমাদের এহেন অব্স্থা করেছে? স্বর্গের প্রেম কে পায়ে পিষে ওরা কারা শান্তি খুঁজছে? আমি তাঁদের চিনে ফেলেছি মুন। আমি তাদের শাস্তি তাদের কাছে পৌছে দেবোই। তারপরও তোমার প্রেমকে কলংকিত হতে দেবো না।

চলবে.......
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×