somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদী বন্দর উন্নয়ন

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমুদ্র, নদী, চ্যনেল, খাল এসব কিছুই আমাদের সম্পদ। সব নদী বন্দর গুলোর দিকে একবারে নজর দিন। দেখবেন অনেক নদীবন্দর সংস্কারের অভাবে জনাকির্ন হয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু নদী বন্দর নদীর বুকে ভেঙ্গে পরেছে।

প্রতিটা নদীবন্দরকে ঠিকঠাক করে মানুষের উপযোগী করতে হবে। কোনো ভয় পাবেন না। আমাদের নদীবন্দর গুলোর আবেদন ও সম্ভাবনা কোনোদিনও শেষ হয়ে যাবে না।

শুধুমাত্র নদী বন্দর গুলোর বেহাল দশার জন্য আমাদের প্রতি বছর প্রচুর টাকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যেখানে আমরা অল্প খরচে নদীপথ ব্যবহার করতে পারি সেখানে সড়ক পথে বহু টাকা খরচ হচ্ছে। এই টাকাগুলো মূলত অপচয়। আবার নদী বন্দর আপগ্রেড না থাকার ফলে অবৈধ স্পিডবোট ব্যবসা শুরু হয়েছে। স্পিড বোটে প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।

প্রতিটা মালবাহি ও যাত্রীবাহি নদী বন্দরকে টার্মিনালের সাহায্যে যুক্ত করতে হবে। টার্মিনাল গুলো এমন স্টাইলে করতে হবে। যেখানে অভ্যন্তরিন ও আন্তর্জাতিক রুটের মাঝারী জাহাজগুলো নোঙ্গর করতে পারে।

প্রতিটা টার্মিনালের ডিজাইন হবে একই রকমের। টার্মিনাল গুলো এমন স্টাইলে ডিজাইন করতে হবে যাতে ঐ টার্মিনাল গুলোকেই প্রয়োজনে বার্জ ফেরী হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

বর্তমানে যেসব রুটে বড় বড় যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করছে। যেমন ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা। এই সব রুটের টিকেটিং সিস্টেম কে ডিজিটাল করতে হবে। বরিশাল-ঢাকার মতো রুটেও দিনে কোনো জাহাজ চলাচল করছে না। দিনেও ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা ও প্রধান প্রধান রুট গুলোতে জাহাজ চালাতে হবে। তাহলে ছোট ছোট দুরত্বের জন্য আলাদা আলাদা ডিজিটাল টিকিট বিক্রয় করা যাবে ও যাত্রীরা উপকৃত হবে। আমরা জানি সড়ক পথের চেয়ে নদীপথে যাত্রা অনেক বেশি নিরাপদ।

আমি ভাবি, এতো টাকা দিয়ে এক একটি জাহাজ নির্মান করে, কেনো সেই সব জাহাজকে ১দিন/২দিন/৩দিন বসিয়ে রাখা হয়। জাহাজ চলাচলের টাইম সিডিউল গুলো এমন করুন যাতে কোনো যাত্রীবাহী জাহাজকেই বসে না থাকতে হয়। এর ফলে জাহাজ মালিক, যাত্রী ও সরকার সবারই উপকার হবে। জাহাজ মালিকরা তাদের জাহাজ দিয়ে বেশি ইনকাম করতে পারবে। যাত্রীরা যে কোনো সময়ই নিরাপদে যাত্রা করতে পারবে আর সরকার টিকিটের টাকা থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স বেশি পরিমান নিতে পারবে। ডিজিটাল টিকেটিং সিস্টেম চালু করলে ভ্যাট-ট্যাক্স বেশি পরিমান আহরিত হবে। এবং নৌপরিবহন অধীদপ্তরের ২ নম্বরি ও ঘুস গ্রহন কমে যাবে।

বাংলাদেশের অনেক গ্রাম পাওয়া যাবে যার আশে পাশে নদীবন্দর করার মতো নদী থাকার পরও, গ্রামবাসীদের বহু কষ্ট করে স্থলযানে চলাচল করতে হয়। বিশেষ করে পদ্মার পাড়ে অনেক জায়গা আছে যেখানে নদীবন্দর চালু করলে মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে একটি স্থিতিশিল সরকার আছে। যারা একটু আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করলেই আমাদের নদী পথ দ্রুত অনেক বেশি কাজের উপযোগী হয়ে উঠতে পারে।

আমি আপনাদের কথা দিয়েছিলাম, আগামী ২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ইকোনোমির প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে চলে আসবে। এর সাথে নদীবন্দর উন্নয়ন করা একান্ত জরুরী। বাংলাদেশের মানুষকে নদী পথে যাতায়াতের জন্য অনেক বেশি আগ্রহী করে তুলতে হবে। এজন্য মিডিয়া, সরকার ও এন.জি.ও বড় অবদান রাখতে পারে।

নদী বন্দর উন্নয়নে শুধু সরকারই নয় এর সাথে এন.জি.ও ও দাতা সংস্থার অর্থ কাজে লাগানো যেতে পারে। অর্থ যেখান থেকেই আসুক না কেনো দেশ তো উন্নয়ন হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রতিটা নদীবন্দরের ট্যাক্স সরাসরি সরকার উঠাবে। দেখা যায় নৌ বন্দর টার্মিনালে লিজের মাধ্যমে টাকা উঠানো হয়। এই লিজ প্রথা বাতিল করতে হবে। সরকার সরাসরি রশিদ এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করবে। এতে সরকারের কোষাগারে এই খাত দিয়ে আরো বেশি অর্থ আসবে।

বাংলাদেশের সমস্ত নৌ পরিবহনের লিস্ট একটি ডাটাবেইজে থাকবে। কোনো জাহাজ নতুন তৈরি হলে সেই জাহাজকে নির্দিষ্ট ফি এর মাধ্যমে ডাটা বেইজে যুক্ত করে নেয়া হবে। জাহাজগুলো প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ দিতে বাধ্য থাকবে। লাইন (নির্দিষ্ট রুটে চলার পার্মিশন) কেনা-বেচার নামে আর কোনো ফাঁকিবাজি চলবে না। এই একটি খাতেই প্রতি বছর বহু টাকা অপচয় হচ্ছে। কিছু শয়তান মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকা নিজেদের পকেটে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারি টাকা থাকবে সরকারি কোষাগারে সেই টাকা কেনো দুর্ণীতির মধ্যে ঢুকে যাবে।

বাংলাদেশের যত্রীবাহী লঞ্চ গুলো দিয়ে অনেক কিছু করা সম্ভব। যেমন বরিশাল-ঢাকা রুটের যাত্রীদের প্রায় সারারাত লঞ্চে কাটাতে হয়। জনগনের এই মূল্যবান সময়কে আমরা কিন্ত পজেটিভ কাজে ব্যবহান করতে পারি। রাত্রে চলাচল কারী প্রতিটা যাত্রীবাহী নৌজানে বয়স্ক শিক্ষা চালু করুন। তাতে আমরা দ্রুত আমাদের স্বাক্ষরজ্ঞানহীন মানুষের সংখ্যা কমাতে কমানে এক সময় ১০০% শিক্ষিত জাতিতে পরিনত হতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী, মিনিস্টার, সচিব, কর্মকর্তাদের প্রতি আমি আকুল বেগে রিকোয়েস্ট করছি, আপনারা দ্রুত ব্যবস্থা নিন। কোন কাজ কোন মন্ত্রনালয়ের তা বড় কথা নয়, আমরা জনগনের জন্য কি কি করতে পারছি সেটাই বড় কথা।

বড় বড় নৌ রুটের যাত্রীবাহী নৌযান গুলোতে কেবিন সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিলাস বহুল নৌজান গুলোতে সরকারী ব্যাংকের এটিএম বুথ ও মোবাইল ব্যাংকিং চালু করতে হবে।

প্রতিটা নদী বন্দরের পাশেই মাছের আড়ৎ থাকতে হবে। যার ফলে জেলেরা ন্যায্য মূল্য মৎস বিক্রয় করতে পারবে। প্রতিটা নদী বন্দরে আধা সামরিক বাহিনি ও পুলিশের কড়া পাহারা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিটা নদী বন্দরের টার্মিনালে বা টার্মিনালের কাছাকাছি সরকারি তত্ত্বাবধায়নে মোটেল স্থাপন করতে হবে। আমার কিন্তু এই সব খাতের মাধ্যমে দেশের বেকার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারি। বর্ডার অঞ্চলের নদী বন্দর গুলোতে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

আমি কিছু আইডিয়া দিয়ে আপনাদের একটি পথ দেখিয়ে দিলাম। এখন সব দ্বায়িত্ব আপনাদের। আমার সব পরিকল্পনাই আপনাদের জন্য নিবেদিত। আশা করি আমরা আমাদের উন্নয়ন দিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে পারি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×