বলাকা সিনেমা হলে নাইট শোতে যখন ভরপুর প্রেমের ছবি চলে,মফস্বলের চিপা গলিতে তখন জ্বলে গান্ঞ্জা।ফুলার রোডের রিক্সার চাকার সাথে তাল মিলিয়ে টাল হয়ে যায় বহু যুবক।স্টেশনরোডের গা ঘিনঘিন করা ভ্যাপসা জ্যাম যে কি পরিমাণ বিরক্তিকর তা জানে শুধু আনস্মার্ট ক্ষ্যাত ছেলেটা।গ্রামীণ স্টার কাস্টমার হয়ে আড়ং এর ফিফটি পার্সেন্ট ছাড় পাওয়া রিচার্জকারী মেয়েটা জানেনা ক্ষুদ্রব্যবসায় বিশ হাজার টাকা খাটালে তার থেকে লাভ কত আসে।
মেয়ে তুমি গোলাপকুঁড়ির সাথে হেসে কুটিকুটি,যুবকের নিকোটিন পোড়ানো অলস সময় তোমার কাছে অপচয়!
পোড় খাওয়া রাশেদের কথা ভেবে বুকে মোচড় দিয়ে ওঠে,ভিজে ওঠে চোখের কোণ,জ্বলে!
পাঁচ টাকার জন্য ভিখিরির মতো সিঙ্গারার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে ফেরে যারা,তারাও দিন শেষে সুখী।ময়লা হয়ে যাওয়া নোটের গায়ে "ছুন্দরি পেমিকা চাই" লেখা দেখেও হাহাকার ওঠে বাতাসে।তলে তলে তল্লাটে তল্লাটে বিক্ষোভ মিছিলের স্লোগান কাঁপিয়ে তোলে বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড।
বাতাসে ভেসে বেড়ায় চুম্বন।মায়া মায়া ভাব কাটে।গভীর নিশিতে জল কাটে নিষিদ্ধ পল্লীতে।সূর্যের আলোর নেই যাতায়াত!
দেহলোভী নপংশুকের ধারালো নখে খামচে ধরা স্তন,দেয়ালের ফোকর থেকে হঠাত্ বেরিয়ে আসা টিকটিকি,রাতজাগা নাইটগার্ড,মাথায় রাবার লাগানো দশটাকা দামের কাঠপেন্সিল,ঘরের আধোয়া পাপোস,অব্যহৃত সেভিং ক্রিমের কৌটো,শোকেসে সাজিয়ে রাখা অফিসার্স চয়েসের বোতল-কেউ একা নয়।
একা নয় রাজপথ,চারুকলার বকুলতলা;ছবির হাটের পিনিক আনা গাঁজার গন্ধ।
নিঃসঙ্গতা বলাকা সিনেমার নাইট শো-তে,পাপী করা দেহবল্লভে,তুরাগের দূষিত কালো জলে।
ভূধামের জন কোলাহল নিমেষেই উবে যায়,ভুল করে ডেকে ওঠে রাতপাখি তার ভয় জাগানিয়া কর্কশ কণ্ঠে।আচমকা ডুবে যাই বিষে।গলা অবধি পাপে নিমজ্জিত চিত্তে ওঠে অতৃপ্তির ঢেঁকুর।
প্রভু,নষ্ট হয়ে যাই;বারবার নষ্ট হয়ে যাই!
পঁচা রজনীগন্ধার আঁশটে গন্ধ নাকে বাড়ি মারে।সূক্ষ্ম ব্যথা সূচের মতো পাজরকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়।চক্রবৃদ্ধি হারে বিষাদ বাড়ে।রাত্রির অন্ধকারের মতো কালো ঝাপসা মুখাবয়ব চেতন অবচেতনের দোলাচালে দোলে,চোখ জ্বলে।
প্রভু,নষ্ট হয়ে যাই;বারবার নষ্ট হয়ে যাই!
সাদা নিকোটিন স্বেচ্ছায় নিজেকে পোড়ায় লাল আগুনে;ঠোঁটের স্পর্শে জেগে ওঠে প্রেম;অ্যালকোহলের মাত্রা তীব্রতার সীমা পেরিয়ে গ্রাস করে চেতনা।কান খুলে শুনে নাও-এখন আমি আর কারও কথা টথা রাখিনা।
প্রভু,নষ্ট হয়ে যাই;বারবার নষ্ট হয়ে যাই!