somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

""জার্মানদের ফ্রান্স যাত্রা-২"

২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

""জার্মানদের ফ্রান্স যাত্রা-২""
(রক্ত যখন রুটি)
--<যখন জার্মানরা নিজেদের রাষ্ট্রের ফসলে নিজেদের উদর পূর্তি করতে পারবে না,তখনই অন্য রাষ্ট্রের দিকে হাত বাড়ানো উচিত।অবশ্য লাঙলটাকে উল্টো করে তখন তরবারী হিসেবে তা ব্যবহার করতে হবে।যুদ্ধের সময় স্বজন হারানোর চোখের জলে উত্তরকালের জার্মানদের জন্য সৃষ্টি করবে দৈনন্দিন বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় রসদ-----রুটি।(অ্যাডল্ফ হিটলার)।
*ছিলাম মিউজ নদীর তীরে।৭ টি জার্মান পাঞ্জার ডিভিশন সমেত।সমগ্র জার্মানীর ইতিহাসে সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সমর নায়কদের মধ্যে আরউইন রোমেল ছিলেন অন্যতম।ফ্রান্সের যুদ্ধে তিনি ৭ম পাঞ্জার ডিভশনের নেতৃত্ব দেন।তবে সে যুদ্ধের মূল নায়ক ছিলেন আরেক সফল জার্মান কমান্ডার হেইঞ্জ গুদেরিয়ান।
১২ মে নাগাদ,পল ভন ক্লিয়েস্ট,রোমেল
,গুইদেরিয়ান এবং রুন্ডেস্টাডের নেতৃত্বে জার্মান বাহিনী মিউজ রিভার ব্যাংকের সমগ্র এলাকা দখল করে নেয় আর ১৩ মে'র মধ্যেই ফরাসী সরকার কে প্যারিস ত্যাগ করতে বাধ্য করে।পরবর্তীতে এ জার্মান বাহিনী ইংলিশ চ্যানেলের দিকে অগ্রসর হয়।তাদের যাত্রা ছিলো অ-প্রতিরোধ্য।১৭ মে মন্টকোরনেট,,২৭-২৯ মে লিউ তে জেনারেল শার্লে দ্যা গল(চার্লস দ্য গল ও পেয়েছি, আসলে ফরাসী বা জার্মান উচ্চারনের জ্ঞান আমার নেই বললেই চলে; তাই পেপার কাটিং; রেফারেন্স বুকের সরল বঙ্গানুবাদ ই ভরসা)
জার্মান বাহিনীর উপর তার অধীনস্থ ৪র্থ সাজোয়া ডিভিশনের সহায়তায় হামলা চালান।উক্ত যুদ্ধে ফরাসীরা নিজেদের অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় দেখতে পায়।উন্নত মানের জার্মান ট্যাংক পাঞ্জার-১ এবং ২ এর কাছে ফরাসী রেনল্ট,শাল বারবি, সামোয়া ট্যাংক সেকেলে হিসেবে প্রতীয়মান হয়। আর পুরো ফ্রান্স অভিজান কালে জার্মান বাহিনী কেবল দ্যা গলের" বাহিনীর কাছথেকে সবচেয় শক্ত বাধার মুখোমুখি হয়।জার্মানদের অগ্রযাত্রার মুখে ফরাসীরা কচুকাটা হতে থাকে।আরেক ফরাসী জেনারেল গ্যামেলিন সিডানের যুদ্ধে হেরে বসেন।জার্মানদের আজীবন লালিত স্বপ্ন,," প্যারিস দখল" বাস্তবতার রূপ পায়।৫ টি জার্মান ডিভিশন প্যারিসে পৌছে একের পর এক তান্ডব শুরু করে।১৯৪০ সালের ১৪ ই জুন প্যারিস আত্নসমর্পন করে এবং জার্মান দখলে চলে যায়।ফরাসী প্রধানমন্ত্রী "রেনো " পদত্যাগ করেন।তার বদলে ফরাসী প্রেসিডেন্ট আলবার্ট লাবরুন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নায়ক ফিলিপ পেত্যা কে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।পেত্যা ২২ জুন জার্মানীর সঙ্গে
যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করেন।চুক্তি মতে ফ্রান্সকে অধিকৃত এবং অনধিকৃত এ দুভাগে ভাগ করে ফেলাহয়।প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানরা যে রেলের কম্পার্টমেন্টে আত্মসমর্পন দলিলে স্বাক্ষর করে; ভাগ্যের ফের সেই একই যায়গায় ফরাসীদের বসিয়ে দেয়।
★★
নাৎসী জার্মানী কর্তৃক সরাসরি ফ্রান্সের তিন-পঞ্চমাংশ দখলে রাখা হয়।বাদবাকি অংশ অখ্যাত শহর ভিসি কে রাজধানী করে পেত্যার হাতে নিয়ন্ত্রিত শাষণভার দেয়া হয়।
শর্তানুযায়ী আভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ভিসি সরকারকে অনধীক ১ লক্ষ সৈন্য রাখার অনুমতি দেওয়া হয় আর জার্মানদের হাতে ধৃত ফরাসী সৈনিক গন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কিংবা যে পর্যন্ত জার্মান কর্তৃপক্ষ নিরাপদ না মনে করবে,," যুদ্ধবন্দী "হিসেবে বিবেচিত হবে।জার্মান দখলকৃত অংশের মধ্যে ফ্রান্সের পুরো উত্তরাঞ্চল,পুরো আটলান্টিক উপকুল ছিলো।আর ভিসি সরকারের আওতায় পড়ে দক্ষিনাঞ্চলীয় ফ্রান্স।যুদ্ধে ফরাসীরা অর্ধ মিলিয়ন লোকবল হারায়,প্যারিসের অদূরবর্তী এলাকা গুলো অ্যাবিভিল,আরাস,
অ্যামিইসন,ক্যম্রাই,স্কোরস এর মত সমৃদ্ধ ও উর্বর এলাকা গুলো মরু নগরীতে পরিনত হয়।(আবার ক্ষমা চাচ্ছি,এলাকার নাম গুলোর কয়েকটা হয়তো আমার উচ্চারনে ভূল হতে পারে;আশা করি এক্ষেত্রে আমার সদিচ্ছা আপনার বিবেচনায় থাকবে)।
★★বৃটিশ প্রধামন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের নিকট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয় মর্মান্তিক দুঃসংবাদ গুলোর একটি ছিলো জার্মানদের প্যারিস দখল।মিত্র দেশ হিসেবে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের সৈন্যরা একসাথে যুদ্ধ করেছিলো।বৃটিশ এক্সপিডিশনারী ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন "জেনারেল লর্ড গোর্টে"।ফরাসী সৈন্যের পাশাপাশী অনেক বৃটিশ সৈন্যও জার্মানদের হাতে বন্দী হয়েছিলো।
এ ব্যাপারে ১৭ আগস্ট ১৯৪০ সালে "টাইমস অব লন্ডন" এ একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়"""" "One case of refined cruelty was witnessed at
Malines, where a body of British prisoners were
being marched east. They were in full uniform
except for their tin hats. These had been replaced
by a variegated assortment of every kind of
headgear, male or female: bowler hats, toppers,
caps, homburgs, women's bonnets, berets, plumed
Ascot models. A pathetically ridiculous spectacle.
Its only purpose could have been to make the
weary men look clownish or to suggest to the
French inhabitants that British troops had been
looting the shops. Other tales of discrimination
between British and French prisoners of war are
common. Nevertheless, on the whole, the treatment
of prisoners whose care is left to the second-line
troops is not too bad.""""(চলবে,,,,,)
★★★★
* দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি আর মিত্রশক্তি এ দুটি পক্ষ বিদ্যমান ছিলো।
*ফ্রান্সে পরাজয়ের পরে পলায়নপর বৃটিশ ও ফ্রেঞ্চ বাহিনী ডানকার্কে অবরুদ্ধ হয়,যাদের অনেককেই জার্মানদের হাতে বন্দী হবার পূর্বে উদ্ধার করা হয়।
*জেনারেল দ্য গল ইংল্যান্ড চলে যান এবং ফ্রি ফ্রেঞ্চ আর্মি গঠন করেন।ভিসি সরকার তার মৃত্যূদন্ড ঘোষণা করে।১৯৪৪ এর ২৬ আগস্ট তিনি প্যারিস মুক্ত করার লড়াইয়ে মিত্র বাহিনীকে সফলতার সাথে নেতৃত্ব দেন।যুদ্ধ পরবর্তীতে তিনি ফ্রান্সের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।তাছাড়াও ফ্রেঞ্চ পঞ্চম রিপাবলিকের নেতা হিসেবেও তিনি নির্বাচিত হন।
* ধারনা করা হয় জার্মান প্রোপাগান্ডা এবং ফরাসী সরকারের ভেতরকার জার্মান অনুগত লোকদের কারনেই ফরাসীদের পতন এত দ্রুত হয়।উইলিয়াম এল; এর ১৯৬৯ সালের লেখা "দ্যা কলাপস অব দ্য থার্ড রিপাবলিক;এন ইনকোয়্যারী ইন টু দ্য ফল অব ফ্রান্স ইন ১৯৪০;;বই টি এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে বিবেচ্য।
*জার্মানী ফ্রান্সকে হারায় মাত্র ৪৪ দিনের যুদ্ধে।★★★ [উৎস--- উইকি;ওয়ার হিস্টরি অনলাইন;দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রাজেডী-সাহাদত হোসেন খান;মাইন ক্যাম্ফ -অ্যাডল্ফ হিটলার এবং অন্যান্য]
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×