"যে সমাজে বিয়ে কঠিন হয়ে যায় সে সমাজে ব্যাভিচার সহজ হয়ে যায়।"
আজ তার বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে।
এদেশে ব্যাভিচার করতে লাগে ৫০০ টাকা, আর বিয়ে করতে গেলে লাগে ৫,০০,০০০ টাকা। হালাল কাজের মধ্যে আমাদের সমাজে বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন হালাল কাজ হচ্ছে বিয়ে করা।
অথচ ইসলামে বিয়েকে আল্লাহ্ অনেক সহজ করেছেন। কোন ছেলে যদি একটি মেয়েকে দু'বেলা দু'মুঠো খেতে দিতে পারে, পরিধান করতে দিতে পারে, আর পর্দার মধ্যে রাখার ব্যবস্থা দিতে পারে তহলেই সে বিয়ে করতে পারে। বিবাহের ওয়ালীমা হতে পারে মাত্র একটি ছাগল দিয়ে। কিন্তু এই বিয়েকে কঠিন করার জন্য এনগেজমেন্ট, পার্টি, গায়ে হলুদ এবং এই ধরণের আরো কতগুলো অহেতুক জিনিস চাপিয়ে দেয়া হয়। যা এক কথায় অপচয়।
মহান আল্লাহ্ বলেন- "কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সুরা ইসরাঃ ২৬-২৭)
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- জাহান্নাম কে ঘিরে রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় কাজকর্ম দিয়ে আর জান্নাত কে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরস কাজকর্ম দিয়ে। [বুখারী]
ফলে নির্বোধ মানুষ গুলো চাকচিক্যের দিকেই ছুটছে!
আর উল্টো দিক থেকে মানুষের যৌন বাসনাকে জাগিয়ে বা ক্ষেপিয়ে তোলার সকল কিছু পাল্লা দিয়ে দিন দিন বেড়েই চলছে। যেমন মহিলাদের অর্ধ নগ্ন বেশে চলা ফেরা করা, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় পুরুষ এবং নারীদের বিভিন্ন যৌন সুড়সুড়ি মুলক প্রচারনা, পর্ণোগ্রাফি, যেখানে-সেখানে অশ্লীল পোস্টার, বিলবোর্ড, বই, সিনেমা, নাটক, গান ইত্যাদি। আর এগুলো খুব সস্তা এবং সহজলভ্য।
এর মাধ্যমে মানুষের যৌন বাসনাকে জাগিয়ে বা ক্ষেপিয়ে তুলে ধর্ষণের দিকে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে।
এভাবে যুব সমাজ নষ্টামির দিকে চলে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে কার কয়টা গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড আছে, তার হিসাব কষতে এখন ছেলে মেয়েরা ব্যাস্ত।
খুব আশ্চর্য লাগে! স্কুলে শরীর সম্পর্কে সচেতনতার শিক্ষা দেয়া হয়, এইডস সম্পর্কে সচেতনতায় বিলবোর্ড হয়, কিন্তু বিবাহ করতে উৎসাহ দিয়ে কিছু করা হয় না। অবৈধ সম্পর্ক বন্ধের ব্যপারে কোন উৎসাহ দেয়া হয় না। কিন্তু তারপরেও সমাজ চায় যে, ধর্ষণ বন্ধ হোক!
তাই এই অপরাধ রুখতে হলে প্রত্যেক সামর্থ্যবান প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ের সময়মত বিবাহ করা/দেয়া অত্যাবশ্যক। এই দায়িত্ব পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজ সবার। পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানকে সময়মত বিবাহ করতে সৎ-সাহস দেয়া, বিবাহ পরবর্তী দায়িত্ব কাঁধে নেয়ার যোগ্য করে তোলা এবং বৈবাহিক সম্পর্কের ব্যাপারে সচেতন করে তোলা।