somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিভাবে প্রিয় মানুষকে বিদায় জানাতে হয় একটু জানাবেন জুবায়ের ভাই?

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মুহম্মদ জুবায়ের ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় এই "বাঁধ ভাঙার আওয়াজ" ব্লগেই। তখন ব্লগে নতুন নতুন এসেছি। কাউকে চিনি না। "মুহম্মদ জুবায়ের" নামটির সাথে অন্তর্জালিক কিংবা কাগজ মাধ্যমে পূর্বপরিচয়ও ছিলো না। আমার জানা ছিলো না "মুহম্মদ জুবায়ের" নামক ব্যক্তিটি একজন পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ লেখক।

উনি তখন ধারাবাহিক ভাবে উপন্যাস "পৌরুষ" পোস্ট করছিলেন। "পৌরুষ" এর শুরু ভালো লাগলেও মাঝের কাহিনী বিন্যাস আর সমাপ্তি মন ভরাতে পারেনি বলে বেশ প্রগল্ভ নিয়েই অভিযোগ, সমালোচনা করেছিলাম। আক্রমনের প্রেক্ষিতে জুবায়ের ভাই আমাকে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দেননি তিনি আমার চেয়ে বয়স, প্রজ্ঞায় কতো বড়। বরং মন দিয়ে শুনে গেছেন আমার অভিযোগ, পরামর্শ। পরে জেনে মন খারাপ হয়েছিল। মনে হয়েছিলো জুবায়ের ভাই বুঝি ভেবে বসলেন আমি বড়দের শ্রদ্ধা করি না। ঠিক করেছিলাম কোনো একদিন সামনা সামনি দেখায় জুবায়ের ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো।

সচলায়তনে যখন শুনলাম জুবায়ের ভাই ফুসফুসজনিত জটিলতায় অসুস্থ হয়ে ইনটেনসিভ কেয়ারে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রনির্ভর হয়ে আছেন - তখন থেকেই মনে কেমন কু ডাক দিচ্ছিলো। খবর জানতে ফোন দিয়েছিলাম জালাল ভাইকে। তিনি "এখন অনেক সুস্থ আছে" জানালেও আমার মনে কু ডাক বন্ধ হয়নি।

আমি তানভীর ভাইয়ের কাছ থেকে হাসপাতালের ঠিকানা নেই। জুবায়ের ভাইকে ফুল পাঠাবো। সেই ফুল পেয়ে হয়তো তিনি খুশি হবেন। এর পরে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। মনে হয় সময় তো আছে, কাল পাঠাবো। এই করে করে দিন চলে যায়। আমার আর ফুল পাঠানো হয় না।

বাসায় এসে খবর পেয়েই আমার কেমন হাঁসফাঁস লাগে। আমি মাথায়-মুখে পানি দিয়ে আসি। আমার মনে হয়, কি যেনো বলা হলো না, কি যেন করা হলো না। তার আগেই চলে গেলেন আমাদের সবার শ্রদ্ধার, ভালোবাসার প্রিয় জুবায়ের ভাই!

আজ আর লিখতে পারছি না। আজ আর সম্ভব নয়।

শুধু বলি, বেঁচে থাকুন শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জুবায়ের (২২ মে ১৯৫৪ - ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮)
... আপনার রচনায়, আমাদের ভালোবাসায়!


মুহম্মদ জুবায়ের এর লেখার লিংক
- বাঁধ ভাঙার আওয়াজ ব্লগ
- সচলায়তন ব্লগ
- ব্লগস্পট
- এনওয়াইবাংলা কলাম
- পিডিএফ-এ উপন্যাস "পৌরুষ"


এনওয়াইবাংলা থেকে মুহম্মদ জুবায়ের এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
জন্ম ২২ মে ১৯৫৪। বেড়ে ওঠা বগুড়া শহরে। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে। সত্তর দশকের প্রথমার্ধে লেখালেখি শুরু হলেও ১৯৮৪-৮৫ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত দীর্ঘ স্বেচ্ছা-অবসর বা শীতঘুমে মগ্ন। গল্প-উপন্যাস এবং সংবাদপত্রের কলাম ও ব্যক্তিগত রচনাসহ বিবিধ গদ্যের রচয়িতা, কিছু অনুবাদকর্মও আছে। প্রকাশিত গ্রন্থ দু’ট – উপন্যাস “অসম্পূর্ণ” (১৯৮৬) ও কিশোর উপন্যাস “আমাদের অমল” (২০০৩)। পরবাসজীবন ১৯৮৬-র মাঝামাঝি থেকে। বসবাস করেছেন আমেরিকার টেক্সাস রাজ্যের ডালাস শহরে। মুহম্মদ জুবায়ের এক কন্যা (বয়স ২০) এবং এক পুত্র (বয়স ১০) সন্তানের জনক।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:১৫
১৬৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×