সব লেখারই একটা ভূমিকা থাকে।লেখার উদ্দেশ্য বা মূলপট।কিন্তু আমার লেখার ভূমিকাই হল এই ভিডিওটা।ভিডিওটা দেখার পর বুঝতে পারবেন এই লেখার মূল উদ্দেশ্য।আর যদি না দেখেন তাহলে আপনি মূল ব্যাপারটি অনুধাবনই করতে পারবেন না।তাই অনুরোধ করব এই ভিডিওটা অনুগ্রহ করে একটি বার দেখুন।তারপর আপনার কথাগুলো বলুন।
যদি দেখে থাকেন
এখন বলুনতো ,দলীয় ভাবে এমন সুন্দর এবং নিপুন ভাবে পরিবেশিত নৃত্য আপনি কি আরো দেখেছেন?বলতে পারেন হ্যা,দেখেছি।কিন্তু এই ভিডিওটি দেখার পর আমার মনে হয়েছে ,যদি এই নৃত্য না দেখতাম তবে আমার জীবনে নৃত্য দেখার অপরিপূর্ণতাই রয়ে যেত। কারনঃ
এই ভিডিওতে যারা নৃত্য পরিবেশন করেছেন তারা সবাই কানে শুনতে পান না এবং কথা বলতে পারেন না।শিল্পীবৃন্দ সবাই চীনের এবং এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটির নাম হচ্ছে ....... ‘চায়না ডিজাবেলড পিপলস পারফর্মিং আর্ট ট্রুপ ।এই সংগঠনটির আরো অনেক অসাধারন পারর্ফমেন্স পাবেন ইউটিউবে।
একটি দেশের উন্নতির মূলে রয়েছে তাদের মেধাবী জনগন।এই জনগনকে যত বেশি মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলা যাবে ততই দেশের উন্নতি হবে।কিন্ত আমার এই লেখাটা সাধারন জনগনকে নিয়ে নয়।কিছু অসাধারন জনগনকে নিয়ে লেখা,যাদের আমরা প্রতিবন্ধী বলে থাকি।
আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম নয়। সমাজে প্রতিবন্ধী মানুষদের মানুষ বলে ভাবা হয় কিনা!, আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে।কারন প্রতিটা ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের শিকার হয়,হয় হেয় প্রতিপন্ন।সেটা পারিবারিক /সামাজিক বা সরকারি ভাবেই হোক।আচ্ছা, কেন বলেছি সেটাও বলছি।
পারিবারিক ভাবে..........
আমাদের এমন অনেক পরিবার আছে,যে পরিবারে জন্ম থেকে বা অন্য কোন কারনে প্রতিবন্ধী হয়েছে এমন শিশু আছে।যারা নিজ পরিবারেই এমনকি সয়ং পিতামাতা হতেই ভাই বোনদের প্রতি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এমনও দেখা যায় প্রতিবন্ধী শিশুদের তারা অন্য মানুষের সামনে আনেন না,তাদেরও আসতে দেন না। তাদের পড়ালেখা,খেলাধুলা সব কিছুতেই থাকে একটা অলিখিত বাধাঁ।জীবনটা বন্দি যেন চার দেয়ালের মাঝে। (এমন শিশুরা মা বাবার হাতে খুন হতেও শোনা যায়) । আমার মনে প্রশ্ন জাগে,প্রতিবন্ধী হওয়াটাতে কি এই শিশুর কোন হাত ছিল?
সামাজিক ভাবে......
সামজিক ভাবে প্রথমেই যেটা হয় সেটা হল কটু দৃষ্টির শিকার।এমন ভাবে তাকায় যেন সে এই গ্রহের নয়।তারপর টিটকারি করা,শারিরিক ও মানষিক ভাবে নির্যাতন করা।দেখুন...... ..। ধর্ষনের শিকার হতেও শোনা যায়।দেখুন.... >> দেখুন.......... ...। আফসুস আমাদের
দেশে প্রতিবন্ধীরাও জানোয়ারদের হাত থেকে রক্ষা পায়না।
সরকারি ভাবে........
আমাদের দেশে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা খুবই কম।শিক্ষা,চিকিৎসা,যাতায়াত সব কিছুতেই সমস্যা।কোন হুইল চেয়ার ব্যবহারকারীর বাসে,ট্রেনে ভ্রমন করার কোন সুবিধা নেই। এমনকি হুইল চেয়ার নিয়ে চলাচল করার উপযুক্ত রাস্তাও নেই।তাদের কর্মসংস্থান এবং তাদের কর্মক্ষম করারও উপযুক্ত কোন ব্যাপক ব্যবস্থা নেই।
এসব নিয়ে বলতে গেলে আরও অনেক বলা যাবে।তাই বিস্তারিত না বলে শুধু সামান্য আলোচনা করলাম।
তাইতো আমাদের সবার পরিবর্তন দরকার ,প্রথমে আমাদের ভাবনাতে।তাদেরকে প্রতিবন্ধী নয়, ভাবতে হবে একজন মানুষ হিসেবে। তাদের পাশে আমাদের দাড়াতে হবে,অনুগ্রহ থেকে নয় মনুষ্যত্ব থেকে।তাদেরকে সকল সুযোগ সুবিধা দিতে হবে,তাদের মত করে।তাদের গড়ে তুলতে হবে দক্ষ মানব সম্পদে। তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে কিছু করার ।অন্যরা পারলে আমরা কেন পারব না?