somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Think before you don't leap (একবার ভাবেন কেন লাফাইবেন না!)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা শহর থেকে শীতটা তাহলে বিদায়ই নিল মনে হয়। এবার আর তেমন করে হাড়ে কাঁপন ধরানো শীতও পড়লো না, মাঝখান দিয়ে বিল্ডিঙের সাথে সাথে মনেও কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল ভয়ংকর ভুমিকম্প। দীর্ঘমেয়াদী কোনো শৈত্যপ্রবাহও ছিল না, শীতে জড়সড় হয়ে কেউ বলতে পারেনি, "এহ, এই বছর সবচাইতে বেশি শীত পড়েছে"। কিছুদিন পরেই গরম পড়তে শুরু করবে, ধীরে ধীরে তা অসহ্য হয়ে উঠবে। সবাই বলতে থাকবে, শীতকালই ভাল ছিল! এমনটা কেন হয় বলেন তো? মানে, শীতকালে কেন শীত লাগে, গরমকালে কেন গরম লাগে? হাসছেন? ভাবছেন, পাগলটা বলে কি? শীতকালে শীত, গরমকালে তো গরমই লাগবে! কথা ঠিক, যখন যেমন ওয়েদার তখন তো তেমনই অনুভুত হবে। কিন্তু কেন? জানেন তো, ব্যাঙের তা হয় না। বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে বুঝিয়ে বলি। তার আগে শুনি, আপনি কি সায়েন্স পড়েছেন? পড়েননি? ভাল করেছেন, তাহলে আপনাকে বুঝানো ইজি হবে, বেশি টেকনিক্যাল ডিটেইলসে যেতে হবে না, সোজা বাংলায় বললেই হবে।
মানুষ ও অন্যান্য উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রানীদের রক্তের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে উঠা-নামা করে না। যেমনা সব ঋতুতেই আমাদের দেহের গড় তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রী ফারেনহাইটই থাকে। ফলে শীতকালে বা গরমকালে পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে দেহের তাপমাত্রার পার্থক্য তৈরি হয় বলেই আমাদের শীত বা গরম লাগে। কিন্তু ব্যাঙের মত শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রানীরা পরিবেশের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে সাথে নিজেদের দেহের তাপমাত্রাও এডজাস্ট করে নেয়, ফলে দেহের সাথে পরিবেশের তাপমাত্রার পার্থক্য থাকে না বলে তাদের আর আলাদা করে শীত বা গরম লাগে না। কিন্তু এই এডজাস্টমেন্ট এমনি এমনি হয় না। বাড়তি কিছু এনার্জি খরচ হয়।
আসুন একটা এক্সপেরিমেন্ট চালাই। একটা সসপ‌্যান বা পাতিল প্রায় কানায় কানায় পানিতে ভরে নিয়ে চুলায় বসিয়ে দেই। এরপর একটা জীবিত ব্যাঙ ওই পানিতে ছেড়ে দিয়ে তাপ দিতে থাকি। পানির তাপমাত্রা যতই বাড়তে থাকবে ব্যাঙও তার দেহের তাপমাত্রা বাড়াতে থাকবে, সাথে সাথে সে তার এনার্জি হারাতে থাকবে। এভাবে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছাবে যখন ব্যাঙের আর শক্তি অবশিষ্ট থাকবে না যে তার তাপমাত্রা বাড়াবে। ফলে কি হবে? পানির তাপে ব্যাঙটা মারা পড়বে।

এখন বলেন ব্যাঙটাকে মারলো কে? আমার দিকে তাকাচ্ছেন যে! বলতে চাইছেন আমি পুড়িয়ে মেরেছি? কিন্তু আমি তো বলব ব্যাঙ নিজেই নিজেকে মেরেছে। হাসছেন যে! ভাবছেন নিজের দোষ ব্যাঙের ঘাড়ে চাপাচ্ছি? মোটেও না মশাই! দেখেন, আমি যখন পানির তাপমাত্রা বাড়াচ্ছিলাম তখন ব্যাঙ তার নিজের তাপমা্ত্রা এডজাস্ট করে যাচ্ছিল, সময় থাকতে লাফায়নি। ফলে তার লাফানোর ক্ষমতা হারিয়ে শেষমেশ মারা পড়ল। এখনো কি ব্যাঙকে দোষী না করে আমাকে দোষী করবেন?

আমরা ব্যাঙের এই অপমৃত্যুর দৃশ্যটা আমাদের জীবনেও দেখতে পাই। আমরা বিভিন্ন প্রতিকুল পরিবেশে এডজাস্ট করতে থাকি, এডজাস্ট করতে থাকি, প্রতিকুলতা কাটিয়ে উঠা বা সেখান থেকে বের হবার চেষ্টা করি না। এভাবে এমন একটা সময় আসে যখন আর এডজাস্ট করার অবস্থা থাকে না, বের হবার ইচ্ছা জাগে, কিন্তু বের হবার সুযোগও তখন শেষ। একদিকে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আবার সামনেও বিশাল গর্ত, লাফাইতে পারছি না। তখন যতই আমরা অন্যকে দোষ দিতে থাকি না কেন, দোষ কিন্তু নিজেরই। তাই বলছি, সময়মত যে লাফাচ্ছেন না, একবার ভেবে দেখেন কেন লাফাচ্ছেন না।

(ব্যাঙ বিষয়ক থীমটা ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×