somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষার মৃত্যূ অথবা সোনালী সন্ধ্যার গান এবং চোখের গহবরে সমুদ্র পোষার গল্প

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নভেম্বর। খুব প্রিয় তোমার। এই মাসে আনন্দ বেদনার সব উৎসব লেগে থাকে তোমার। আজ নভেম্বর তেইশ। কি যেনো তোমার? মনে পড়ে না। কবোষ্ণ নরোম রোদের ঘ্রাণ লাগা পাঁজরে আমি বুনি তুলসিলতা, আর তক্ষুনি তক্ষুনি মনে পড়ে যায় আজ তোমার বিয়ে-বার্ষিকী। আমার কান্নার দাগ শুকায়নি এখনো। জানোই তো আমি কাঁদতে পারি না মোটেও। আচ্ছা তেইশ নভেম্বর কি পূর্ণিমা ছিলো-তুই একটা আস্ত গবেট। কিচ্ছু মনে থাকে না। সেদিন ভরা পূর্ণিমার চাঁন ঝলমল ঝলমল করেছিলো আকাশের উঠোনে আর আমি নাক ভরে নিচ্ছিলাম হলুদের নির্যাস। বছরের শেষের আগের মাস আর শুরুর পরের মাস আমার প্রিয়তর। তারপরের পরের মাস প্রিয়তম। আমি এরকমই। একটু ক্ষ্যাপাটে; অফ-বিট।

তুমি বুঝি কবিতা পড়ো না একদমই। নাহ। কেনো। ভালো কবিতা নেই আজকাল। তাই। হু। তাহলে তোমার জন্য একটা ভালো কবিতা লিখবো। কথা দিলাম। তাই। হু। তাহলে আমি খুশীতে তোমাকে একটা দারুন সারপ্রাইজ দিবো। প্রমিজ। প্রমিজ। আর শুনো। বলো। পারলে একটা মুক্তগদ্যও লিখো। ধূর। এই না বল্লা কবিতা। আরে নাহ। তোমার মুক্তগদ্যের প্রতি আমি ভীষণ নার্ভাস। অয়েলিং। নাহ।তুমি না খুব ভালো মুক্তগদ্য লিখো। হা হা হা...

শুনেছিলাম, কাঁদতে কাঁদতে নাকি সমুদ্র হয়ে যায় চোখের জলে। তাহলে একবার একটা সমুদ্র বানাও না। দেখি। শুধুই তো শুনে এলাম জনমভর। সমুদ্র যদি আমি বানাই তাহলে তোমাকে ভালোবাসবে কে। কেনো। তুমি। হু হু করে হেসে উঠলো বাঁশবন এবং কাঁশবন। আমি তো সমুদ্রের মৃত-রং ধারন করে ফ্যকাশে মৃত্যূলীন হয়ে যাবো তাহলে। তবে তাই হোক। একবার সমুদ্রে যাওয়ার সকাতর অভিলাষ পূর্ণ হোক তবে। আমি না হয় অপেক্ষার মৃত্যূ কামনা করি। একবার সমুদ্র দেখতে চাই। একবার।

ও আচ্ছা বুঝলাম। কি বুঝলা? বুঝলাম তুমি সম্পাদক। মানে? মানে যিনি লেখাকে কেটে ছিঁড়ে টেনে হিঁচড়ে টুকরো টুকরো করে ফুলশয্যার বিছানা বানান তিনিই সম্পাদক হবার যোগ্যতা রাখেন। হিহিহি। তুমি না খুব ফাজিল। কি করে বুঝলা। আরে বুঝি না, বুঝি তো। ঠিকাছে। তুমি আমার "লেডি-গেস্ট" হবা? নাহ। তুমি ভীষণ আনরোমান্টিক আর জেলাস। কেনো? ঐ যে, এত এত রূপবতী থাকতে আমাকে ঠিক লেডিগেস্ট হবার অফার দিলা। আরে ধূর। "তোমাকে দেখার সাধ; তোমাকে দেখার সাধ বহুদিন পোষছি হৃদয়ে; বহুদিন বহুবহুদিন তোমাকে দেখিতে চাই আরো। কবে দেখা দেবে বলো।" ইউ আর নটি। ললয...

গোলাপ কেমন লাগে। কিংবা গাঁধাফুল। কোনোটাই ভালো লাগে না। আমার গাঁধাফুল ভালো লাগে। তেমনি গোলাপও। ছোটবেলায় নিজ হাতে গাঁধাফুলের গাছ লাগাতাম আর কাউকে ভালোলাগলে মনে মনে তার উদ্দেশ্যে একমুঠো গাঁধাফুল ছড়িয়ে দিতাম। এইভাবে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। কেউ জানেনি, তুমিও না। যতবার গাঁধাফুল ছড়াতে যেতাম ততবারই তোমার মুখ মনের আর্শীতে উঠে আসতো। তোমার বিয়ের দিন একগুচ্ছ গাঁধাফুল দেয়ার সাধ জেগেছিলো। কিন্তু দিতে পারিনি; লজ্জায়। তোমার কি মনে পড়ে- একবার একটা অর্কিড গাছ পুরোটা তোমাকে উপহার দিয়েছিলাম সমূলে, টবেতে ফুলসহ। অর্কিডও আমার প্রিয়।

হ্যালো, আমার কবিতা কই। লিখিনি। মানে কি। আরে সময় নেই। তোমাকে কিন্তু মার দিবো এখন। ওকে বাবা। আমি তোমাকে আজই একটা মুক্তগদ্য পাঠিয়ে দিচ্ছি। থ্যঙ্কস। ওয়েলকাম। কি হলো। কিছুই না। আগে তো দিতে দাও। ওকে কবে দিবা। নেক্সট ফ্রাইডে। পাক্কা। পাক্কা। আচ্ছা যেদিন তুমি দেখা দিবে সেদিন তোমাকে ডেডিকেট করে একটা ঝাক্কাস কবিতা লিখবো। প্রমিজ। দেখা যদি না হয় কোনোদিন। হবেই তো। হতেই হবে। আমি অপেক্ষা ভালোবাসি না যেমন বাসি না অপেক্ষা করাতেও। তাই আমি জানি খুব শীঘ্রই আমি তোমাকে দেখছি। ওকে। আমি তোমাকে এক্ষুনি দেখা দিচ্ছি। নাহ এভাবে নয়। আমি ভার্চুয়ালি তোমাকে দেখতে চাই না। বলেই সে একটা ইউআরএল সেন্ড করে দিলো মেসেন্জারে। আমি খুলেও দেখিনি। অফলাইনে আমি লিখে দিলাম--"আমি রক্ত মাংসের মানুষ দেখতে চাই। ফটোশপের এডিটবক্সে কাঁটাছেঁড়া কোনো বাই-প্রোডাক্ট নয়। যেদিন তোমাকে দেখবো সেদিন তোমাকে স্মরণ করে একটা সোনালী সন্ধ্যাকে বুকের কপাটে তালা দিয়ে রাখবো। প্রমিজ। আর প্রতিদিন সেই তালা খোলে শুনবো সোনালী সন্ধ্যার গান।"

একটা হলুদ পাখি খুব গোপনে
খুব গোপনে গান গেয়ে যায় একলা একা
একলা আমার আউলা মন উড়ে উড়ে
উড়ে উড়ে দূরে দূরে তেপান্তরের মাঠ
মাঠ পেরিয়ে বন পেরিয়ে ধুধু বালুচর
একটা হলুদ পাখি খুব গোপনে একলা একা
গান গেয়ে যায়, গান গেয়ে যায়, গান গেয়ে যায়।

সে এখন স্মৃতিঘরে হীম হীম মৃত্যূর শীতল পরশ। আমার সমুদ্র দেখার আদিগন্ত দীঘল স্বপ্ন এখন অআদিগন্ত বিস্তৃত। কাউকে বলি না চল সমুদ্রে যাই। নিজেকেও না। সমুদ্র আমাকে ভীষণ কাঁপায়, ভীষণ। আমি সমুদ্রে কথা ভুলে যেতে চাই। ভুলে যেতে চাই। আমিই এখন এক ক্ষয়িষ্ণু সমুদ্র। পড়ে আছি একাকি বালুচরে। দূরে উল্লাসে মাতে সামুদ্রিক অভিলাষ। আমি অভিলাষী হয়েই তোমাকে ভুলিয়ে দিলাম সমুদ্রের সমূহ উচ্ছাস। জানতাম না, চোখের গহবরেও মানুষ সমুদ্র পোষে। তুমিই দেখিয়ে গেলে। শিখিয়ে গেলে।
___________________________

তেইশ নভেম্বর দুইহাজারএগারো
কাউকে নয়, তোমাকে
কাউকেই নয়, তোমাকে
কাউকে নয়, তোমাকেই।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৯
১০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×