ছবির নামঃ পলাতক, জেনরঃ কমেডি ড্রামা
পলাতক প্রথম দেখি সম্ভবত ২০০৩ এ। তখন আমি শাবিতে পড়ি। আমাদের নিয়ম ছিল কেউ একজন সিডি আনলেই মেসের সবাই মিলে একসাথে দেখতাম। তো সবাই মিলে পলাতক দেখছি। opening credit আসতেই আমি টেনে দিলাম। এক বড়ভাই ধমক দিয়ে বললেন, দাদা, এই সিনেমাটা অন্তত পুরাটা দেখেন, এর প্রতি বিন্দুতেই রস। ঠিক তাই, পলাতক এমনই এক অসাধারন ছবি যার প্রতিটা মুহূর্তই উপভোগ্য। পুরো ছবিটাই যেন রসের একটা আধার। এই রস সংস্কৃতির রস যা আপনার মনকে তৃপ্তি দেয়। সেই সময় আমরা সুনীল, শীর্ষেন্দু আর সঞ্জীবে বুঁদ হয়ে থাকতাম। পলাতক দেখার পর মনে হল জহির রায়হান,সত্যজিত্ রায়, মৃণাল সেন ছাড়াও আরও অনেকেই আছেন যারা সেলুলয়েডের পাতায় সাহিত্য রচনা করতে পারেন। হ্যাটস অফ টু যাত্রিক দল (তরুণ মজুমদার, শচীন মুখোপাধ্যায় ও দিলীপ মুখোপাধ্যায়)।
পলাতক ছবির কাহিনি ভবগুরে বসন্তকুমারকে নিয়ে যে নিজেকে জমিদার আংটি চাটুজ্জের ভাই বলেই পরিচয় দেয় (ছবিটি মনোজ বসুর গল্প 'আংটি চাটুজ্জের ভাই' অবলম্বনে তৈরি)। ছবির শুরুতেই দেখি বিশ্ব (বখাটে) ভবগুরে বসন্ত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন। পায়ে তার ব্যান্ডেজ বাধানো ঘা (বসন্তের মতে এটা তার পোষা ঘা)। এই ঘা তৈরিতে লেগেছে ১০পয়সার আলতা আর ১০ পয়সার ব্যান্ডেজ। কিন্তু কেন? জানতে হলে দেখতে হবে।
ছবির গানগুলি যেমন অসাধারন, তেমনি অসাধারন অনুপকুমারের (বসন্ত) অভিনয়। গানে গল্পে অভিনয়ে জমজমাট পলাতক। বসন্ত যেখানেই গেছে মায়ার বাঁধনে জড়িয়েছে সবাইকে কিন্তু নিজে কোন বাঁধনে ধরা দেয় না ( এ যেন মাসুদ রানার চরিত্র- টানে সবাইকে কিন্তু...)। ছবির শেষ দৃশ্য আরো অপার্থিব, নামকরনের নির্মম স্বার্থকতা। জ্যোস্নার আলোয় জলের বুকে ভাসতে ভাসতে চিরতরে পালিয়ে যায় এক পলাতকা। আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় জীবনের উল্লাসের পাশে পাশে লোকান্তরের কথাও।
ছবিটা youtube এ palatak লিখে সার্চ দিলে পাবেন। দেখতে পারেন এই সাইটেও
click this
আই এম ডি বি রেটিং দেখতে ক্লিক করুন
নিচে ছবির শুরুর কিছু অংশঃ