এখন যেটা নিয়ে লিখব, তা খুবই সাধারণ বিষয়। মনে কোন আক্ষেপ রাখতে নেই; তাতে নাকি মানসিক সমস্যা হয়।
প্রথমেই বলে রাখি, বাঙ্গালী হয়ে জন্মে আমি গর্বিত। আমার নিজের যেমন সমস্যা আছে, জাতিগত ভাবে বাংলাদেশীদেরও বেশ কিছু সমস্যা আছে। গোদ এর ওপর বিষফোঁড়া বিদেশী সংস্কৃতির প্রভাব।
আসল কথা লেখা যাক এইবার। আমার ছবি তোলা শেখা শুরু ২০০৮ এর শীত এ। তখনও ডিএসএলআর যন্ত্রটি দেখিনি। সিনিয়র রা ছবি তুলতো ফিল্ম এসএলআর দিয়ে। আমার সম্বল ছিল একটা ডিজিটাল ক্যামেরা। ওইটা দিয়েই চেষ্টা করতাম অনুকরণ করার। এক সিনিয়র ভাই বলতেন, ফটোগ্রাফি হলো আলো দিয়ে ছবি আঁকা। ব্যপারটা তখনও মাথায় ঢুকে নি।
সাল ২০১০ হাতে পেলাম ব্রিজ ক্যামেরা। ইচ্ছেমত সাটার আর অ্যাপারচার নিয়ন্ত্রন করা যেত ওই যন্ত্রে। মজা পেয়ে গেলাম। দুঃখ ছিল লেন্স পরিবর্তন করা যেত না বলে। ৫০ প্রাইম এর শার্পনেস; দেখে অবাক লাগতো। সেমিস্টার এর টাকা মেরে দিয়ে কিনে ফেললাম একটা ক্যানন ডিএসএলআর। তখন বুঝতে পারলাম আলো দিয়ে ছবি আঁকা বিষয়টা। সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস আর ল্যাব করে ছবি তোলার সময় বের করাটা ছিলো দুরুহ ব্যাপার। তারপরও; ইউটিউব দেখে, বইপত্তর ঘেটে নতুন নতুন কলা কৌশল শিখতাম।
মাঝখানে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাটালাম। সুস্থ হয়ে আবার শুরু করলাম নতুন করে। ভর্তি হলাম নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিষয়ে। অফুরন্ত সময় ছবি তোলার। বুঝতে পারলাম ফোটোগ্রাফি একটি শিল্প আর তাই নিজেকে শিল্পী ভাবতে শুরু করলাম। এই আমার মোটামুটি ফোটোগ্রাফির সাথে সম্পর্ক।
কিন্ত হায় আজ এ কি অবস্থা! পাবলিক প্লেস এ গেলে মানুষ এর চাইতে ক্যামেরা বেশি। তাও আবার সব প্রফেশনাল লেভেল এর। উদ্দেশ্য প্রায় সবার ই এক, ফেইসবুক এ প্রফাইল পিকচার তোলা। আমরা বাংলাদেশী মানুষজন আজ কাল প্রফাইল পিকচার তোলার জন্য দেড় লাখ টাকার ক্যামেরা কিনে ফেলছি।
আর ফেইসবুক এ অমুক ফোটোগ্রাফি তমুক ফোটোগ্রাফি তো আছেই। ক্যামেরা ইউজার আর ফোটোগ্রাফার এর মাঝে যে একটা সীমা আছে এটা মনে রাখা আবশ্যক।
[ ব্যাক্তিগত মতামত। কেও অফেন্ডেড ফিল করলে দুঃখিত]