somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক ব্রাজিল ফুটবল সমর্থকের আর্জেন্টিনার জন্য আন্তরিক শুভকামনা।

১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে নেই যে, আমি ব্রাজিল ফুটবল দলের একজন ভক্ত এবং সেটা তারা জার্মানীর কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার পরও। সেই সাথে এটাও বলে নেয়া প্রয়োজন যে, আমি আর্জেন্টিনার সমর্থন তেমন একটা না করলেও কট্টর বিরোধী কখনোই ছিলাম না। জার্মান ফুটবল দলের খেলাও ভাল লাগে আমার কাছে। আমি সুন্দর ও ন্যায়সন্মত খেলার পক্ষে সব সময়। সেই দিক দিয়ে বড় বড় আন্তর্জাতিক টুর্ণামেন্টগুলোরই বিপক্ষে বিবেক কাজ করে। তবু আবেগের একটা ব্যাপার থাকেই। আর যেহেতু বিবেকের অবস্থান থেকে অনেক আয়োজনের বিপক্ষে থাকার পরও সেটা থামানোর ক্ষমতা নেই, তাই সীমার মধ্যে থেকেই নিজের আবেগের দাবীও কিছুটা পূরণের নিমিত্তে এবারকার বিশ্বকাপ ফুটবলও উপভোগ করেছি যথেষ্ট। সেই সাথে আমার আশেপাশের পরিমন্ডলে খেলা নিয়ে আবেগ যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না সেই চেষ্টাও করেছি। এই নিয়ে এর আগে আমার একটা ব্লগপোস্টও ছিল। যারা সেটা দেখেছেন, তারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন যে, অনেকটা আর্জেন্টাইন ফুটবল সমর্থক অনেকের অতিরিক্ত আবেগতাড়িত আচরণের কিছুটা কাউন্টার হিসেবেই সেই লেখাটা দেয়া। তবে আমার কাছে তারপর থেকে অনেক আর্জেন্টিনা সমর্থকের আচরণই বেশ সংযত মনে হয়েছে। সেই তুলনায় ব্রাজিল সমর্থক অনেকের আচরণই বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অহমিকাপূর্ণ মনে হয়েছে। যদিও আমাদের এহেন সমর্থন মূল খেলার ফলাফলে কোন প্রভাব রাখে না, তবু আমাদের দেশের মানুষের সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর বিবেচনায়, আমি আর্জেন্টিনা ফাইনালে যাওয়াতেই খুশী হয়েছি বেশি। আর ব্রাজিল হেরে যাওয়াতেও কিছুটা খুশী তাদের কিছু কিছু সমর্থকের অহমিকাপূর্ণ আচরণ বিবেচনায়। তবে এক্ষেত্রে অনেক আর্জেন্টিনা সমর্থক যেভাবে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হেরে যাওয়াকে খুব বাজেভাবে সমালোচনা করছেন সেটাকে ভালভাবে নেয়ার তেমন কিছুই নেই। যুক্তি হিসেবে তাদের অনেকে এর আগে জার্মানীর কাছে আর্জেন্টিনার চার গোলে হেরে যাওয়ার পর, অনেক ব্রাজিল সমর্থকের কটুক্তিকে কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন। তাদের উদ্দেশ্যে এটুকু বলা প্রয়োজন, একটা পূর্ণশক্তির দল নিয়ে তুলনামূলক অপরিণত দলের কাছে চার গোলে হেরে যাওয়া, আর দলের প্রধানতম ডিফেন্ডারের অনুপস্থিতি ( আগের ম্যাচে থিয়েগো সিলভার হলুদকার্ড পাওয়াটা বিতর্কিত) আর মূল প্লেমেকারের অনুপস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া একটি দলের সেই একই দেশের ( জার্মানী) যথেষ্ট পরিণত একটি দলের কাছে সাত গোলে হেরে যাওয়ার মাঝে তফাৎ খুব বেশি নেই। তার চেয়েও বড় কথা হল, স্বাগতিক দেশ হয়েও ব্রাজিল খেলায় কোন অনৈতিক সুবিধাতো নেয়ই নি, বরং তাদের বিপক্ষেই যথেষ্ট বাজে রেফারীং হয়েছে এবার। তবে আর্জেন্টিনা যথেষ্ট ফেয়ারভাবেই ফাইনালে এসেছে এবার এবং খেলার মানও আগের চেয়ে অনেক ভাল। তাই যে আর্জেন্টিনাকে ৯০ এর বিশ্বকাপের শুরু থেকেই অপছন্দ করে এসেছি এবং ফাইনালে ( পুরো টুর্ণামেন্টেই আসলে) অত্যন্ত বাজে খেলার পরও রেফারীর বিতর্কিত পেনাল্টি দেয়ার আগ পর্যন্ত জার্মানীকে সমর্থন দিয়ে এসেছি, সেই আমিই চাইছি আর্জেন্টিনা আজ জিতুক। আন্তরিকভাবেই চাইছি। ২৪ বছর আগের দৃশ্যপট উল্টোভাবে ( তবে রেফারীর সমর্থন নিয়ে নয়) ফিরে আসুক। জার্মানীরও বিরোধিতা করছি না। তাদের মিরোস্লাভ ক্লোসার বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভেঙে ফেলা একটা বিশেষ অর্জন যা চেয়েছিলাম শুরু থেকেই।

সব শেষে সবার জন্য শুভকামনা। ফুটবল জ্বরের অবসান ঘটুক। জীবনের প্রতি দায়বোধ জাগ্রত হোক সবার। ঘরে-বাইরে সবখানেই মানবতা আজ ভুলুণ্ঠিত। ফুটবল ঘোর কাটিয়ে, সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ হোক সবার। সেজন্যই এগিয়ে আসুক সবাই, এই পরম শুভকামনায় শেষ করছি। ভামোস আর্জেন্টিনা! ভামোস মানবতা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×