ছুটুবেলা থেকেই আমার বান্দ্রামি শুরু হইয়াছে এবং এখনো চলতেই আছে চলতেই আছে...


.।।

ছুটুবেলায় অন্যান্য সকল বাচ্চাদের মতই আমার প্রিয় খাইদ্য ছিল পয়সা

তো যথারীতি একদিন পয়সা খাইতে যাইয়া গলায় আটকাইয়া গ্যালো

আমিও কোত্ কোত্ করিয়া উহা উগরাইয়া দিতে প্রানান্ত চেষ্টা করিলাম কিন্তু পারিলাম না

বহু কষ্টে চিমটা দিয়ে উহা বাহির করা হইলো
আমার বয়স যখন দুই বছর তখন আমি ভয়াবহ একটা আকাম করিয়া ফেল্লাম

ঐ কাহিনী বলা যাবেনা

বড়ই লজ্জাজনক কাহিনী !! এই কাম কেউ কুনোদিন করছে কিনা সন্দেহ আছে । তিন বছর বয়সে একটা উড়াধুড়া বান্দ্রামি করিয়াছিলাম যা আমার আম্মাকে চরম ভাবে ভুগাইছিল । আম্মা গোছল করতে বাথরুমে ঢুকলে আমি বাইরে থেকে বাথরুমের ছিটকিনি আটকাইয়া দিলাম । দিলাম তো দিলামই কিন্তু খুলতে তো আর পারিনা

এদিকে আম্মাও দরজায় নক করতিছে । উপায়ান্তর না দেইখা আমি ভ্যা ভ্যা করে কান্দা শুরু করলাম

আম্মা একটা দুঃসাহসী কাম করলো

নিচ তালায় থাকতাম বলে আম্মা বাথরুমের পিছনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হইতে পারলেন । পরে মেইন গেটের সামনে এসে আমারে দরজা খুলে দিতে বললেন । ঐটা ঠিকই করতে পারলাম

তো দিন যাইতে লাগল , আমার বান্দ্রামিও বাড়তে লাগল

তখন একধরনের খেলনা শটগান বের হইছিলো যা পাথরে পাথর ঘষার মত শব্দ করত । ঐটা দিয়ে প্রতিবেশীদের সুখের নিদ্রা , আরাম সব হারাম করে দিছিলাম । আমার এহেন বাঁদরামিতে তাহারা যে ত্যক্ত , বিরক্ত , উত্তক্ত হইয়া আমারে অব্যক্ত ভাষায় অকথ্য গালিগালাজ করিতেন তাহা নিশ্চিত

ছয় বছর বয়সে আমি একটা বড়সড় আকাম করলাম । আব্বা শেভ করার সময় আমারও খুব লোভ হইতো শেভ করার

একদিন আমি বাথরুমে ঢুকে রেজর নিয়ে শেভ করার অভিনয় করতে লাগলাম । হঠাত্ ঠোঁটে পোচ লেগে ঠোঁটের সামনের অংশ দুই ভাগ হয়ে গ্যালো । রক্তারক্তি অবস্থা । আমিতো ভয়ে আর বাহির হইনা । ডলা খাওয়ার চান্স আছে । আম্মা দরজায় নক করা শুরু করলো । অনেকক্ষন পরে বের হইলাম । সোজা হাসপাতালে । ডাক্তারটা আমার কোমল প্রানে ব্যাথা দিয়ে ইনজেকশন লাগাই দিল

আহ ! কি ব্যাথা !


স্কুল ছিল আমার জন্য সবচাইতে আনন্দকর জায়গা । স্যার ম্যাডামরা পড়াইতো আর আমি রুমের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াইতাম

ভাল ছাত্র ছিলাম বলে তারা মারতেন না শুধু কানে ধরে দাঁড়া করাইয়া রাখতেন
যত বড় হইতে লাগলাম বান্দ্রামির পরিমানও বাড়তে লাগল । ক্লাস ছিক্সে পড়ার সময় একবার চার/পাঁচ মাইল দূরে গ্রামে এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াইতে গেছিলাম । পুকুরে নামলাম , চরম মজা করলাম


এদিকে কলোনীতে তো আমারে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে গ্যালো । চার ঘন্টা পর বাসায় আসলাম । নিয়মানুযায়ী বাসায় আমারে উড়াধুড়া ডলা দেওয়া হইলো

কিন্তু আমিতো আর দমে যাওয়ার পাত্র না । কিছুদিন পর বন্ধুরা মিলে সাইকেল ভ্রমনে বের হলাম । উড়াধুড়া সাইকেল চালাচ্ছি । মনে চরম ফুর্তি । এত জোরে চালাচ্ছিলাম যে হুশ ছিলনা । মাইক্রোবাসের সামনে গিয়ে পড়লাম । শেষমুহূর্তে হ্যান্ডেল না ঘুরালে আজকে আর পোষ্ট লেখা লাগত না । সাইকেল নিয়ে পড়লাম ধানক্ষেতে । হাত-পা ছুলে গ্যালো





তারপর বান্দ্রামির অপরাধে আব্বা একদিন আমাকে বাসা থেকে বের করে দিলেন

আমি মাধ্যাকর্ষন তত্ত্ব ভুল প্রমান করে ছাদে উঠে গ্যালাম এবং টংছাদে বসে ঝিমাইতে থাকলাম


এক ঘন্টা পর আম্মা অবশ্য বুঝিয়ে শুনিয়ে বাসায় নিয়ে গেলেন
কারো ব্যাগের জিনিস অন্য কারো ব্যাগে রেখে দেওয়া , অনেকগুলো ব্যাগ একসাথে বেঁধে রাখা যাতে কেউ আমার আগে ক্লাস থেকে বের হতে না পারে , বন্ধুদের টিফিন খেয়ে ফেলা , তাদের নামের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে আজীব আজীব নাম রাখা এইসব বান্দ্রামিতে তারা সবসময় অতিষ্ঠ থাকতো

স্কুল জীবনের শেষদিকে একটা খুব খারাপ কাম করলাম। মাথায় কি ইবলিসামি কাজ করতে ছিলো কে জানে !


এক বন্ধুর পা ধরে টেনে বেন্চের থেকে ফেলাই দিলাম । মেরুদন্ডে চরম ব্যাথা পাইছিলো । দুইটা ইনজেকশন দিতে হইছিলো , আর অনেকগুলা ওষুধ ।
কলেজেটা অনেক স্ট্রিক্ট হওয়ায় এখানে বান্দ্রামির সুযোগ কম

কিন্তু আমার বান্দ্রামি থেমে নেই

তা আপন স্বকীয়তায় সরল পথে সুষম ত্বরনে চলমান আছে........

---------------------------------------------------------------
এইটা আমার প্রথম পোষ্ট । ভুল-ত্রুটি হইলে মাফ করে দিবেন । আর দুয়া করবেন এইচএসসি পরীক্ষাটা যেনো ভালভাবে দিতে পারি ।
------------------------------------
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১১ রাত ৮:২৪