somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রজন্মের ঋণশোধ-৩৬

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-মানেটা পরে কোন এক দিন বাসায় এসে জেনে নিয়েন।লোকটি বুঝতে পারলেন সূর্য এ বিষয়ে কোন কথার উত্তর দেবেন না।সঙ্গতঃ কারনে লোকট চুপ হয়ে গেলেন।তার পর অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বর কনের কবুল শব্দটি দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটে।

হানিমুনে কেটে যায় বেশ কয়েকটি মাস।এক দিন হঠাৎ সূর্যদের বাড়ীতে কিছু মেহমান আসে।চমকে উঠে রোজী মানে সূর্যের মা।সূর্য নন্দিনী কেউ বাড়ীতে নেই।নন্দিনী রুটিন মোতাবেক ডাক্তারের কাছে গেছেন শরীর চেক আপে সাথে সূর্য।এ দিকে রোজী মেহমানদের প্রথমে চিনতে না পারলেও পরক্ষণে চিনতে পেরে ওদের ঘরে স্বাগত জানালেন।মেহমানদের সকলের শরীরের বাহিয্যিক অবস্থা অনেক নোংরা।শরীরের হাতে পায়ে জামা কাপড়ে প্যাক কাদায় ভরা।মনে হচ্ছে এই মাত্র কোথাও যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে এলেন।সত্যিই তাই দানব মিয়ানমার সেনাবাহিনীদের চোখ এড়িয়ে বর্ডার পেরিয়ে বাংলাদেশ উখিয়া অঞ্চলে ঢুকেন তারা গত এক সপ্তাহ হলো তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধ একক জন আধা বয়সী পোয়াতী মহিলা এবং চার জন সম বয়সী কিশোর ।এরই মাঝে বহু নির্যাতীত রোহিঙ্গা প্রায় পাচ লক্ষাধিক বাংলাদেশে ঢুকেছেন।এ সব সরনার্থীদের তদারকি করছেন আমাদের অহংকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।সেখানে চলছে নিবন্ধনের কাজ চলছে ত্রান বিতরণ সহ অবস্থা উন্নয়ণে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদ ক্ষেপগুলো।অনেকটা জামাই আদরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় মহানুভবতা বাংলাদেশের সেখানকার স্থানীয়রা।রোজী তাদের কাছে জানতে চাইলেন কি হয়েছিল সেখানে তাদের অবস্থান আর বাংলাদেশের আইন সংস্থাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কি ভাবে তারা ঢাকায় তাদের বাড়ীতে এলেন।এ সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগেই ঠোট ফুলিয়ে বৃদ্ধার দুচোখ বেয়ে অঝরে জল পড়তে থাকল।বৃদ্ধ এক হাতে চোখের জল মুছতে মুছতে বলতে থাকেন তাদের উপর নেমে আসা মিয়ানমার দানবদের অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা।

বৃদ্ধের বয়স অনুমানিক পঞ্চাশ হবে তার চোখের সামনেই ঘটে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্টির উপর ঘটে যাওয়া নির্মম ইতিহাস।তার মতে তারা খুব ভালই ছিলেন সেখানে।ছিল বিঘা বিঘা আবাদ জমি,ছিল গেরস্থির গোয়াল ভরা গরু ছাগল।বিশাল উঠোনে ছিল কাঠের চৌচালা বড় বড় বেশ কয়েকটি ঘর।দিন কাটতো হাসি আনন্দে আর প্রভাব পত্তিতে।হঠাৎ এক রাতে হামলা হলো তাদের বাড়ীতে।ঘরে ছিল দুই ছেলের বউ,ঝি।ছেলে দুটো সেদিন বাসায় ছিল না স্বাধীনতার ডাকে তারা আরাকান রাজ্যে যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছিলেন।এ খবর কি ভাবে যেন টের পায় মায়ানমার সেনাবাহিনী তাইতো সেই রাতে ওরা এসে বৃদ্ধকে বার বার জিজ্ঞেস করছে তার ছেলে দুটো কোথায়?আশানুরূপ কোন উত্তর না পাওয়া সবগুলো ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিল।কমান্ডার বৃদ্ধকে পায়ের তলে রেখে বার বার অর্ডার দিচ্ছে অধিন্যাস্তদের কেউ যেন জীবিত ঘর হতে বের হতে না পারে।গোয়াল ঘরে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে গরুগুলো বন্ধন ছিড়ে বেরিয়ে আসে বাহিরে।প্রভু ভক্ত একটি গরু বৃদ্ধকে বাচাতে কাছে আসতেই বৃষ্টির মত ব্রাস ফায়ার করে।প্রভু ভক্ত গরুটি সেখানেই মৃত্যু যন্ত্রণায় মাটিতে লটিয়ে পরে,বৃদ্ধের চোখে অনুশোচনার জল।অগ্নিদগ্ধ ঘর হতে বৃদ্ধের স্ত্রী আর ছেলের বউররা বাচ্চাদের নিয়ে বের হতেই সেখানেই বুলেটের আঘাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে।অগ্নিদগ্ধ ঘরের ভিতর দু বছরের এক শিশু চিৎকার করছে তা অবলকন করেও মিয়ানমার দানবরা শিশুটিতে বাচায়নি বরং উল্টো বিকট হাসিতে ফাকা গুলি ছুড়ে শিশুটিকে লক্ষ্য করে।কয়েক মিনিটিতে শেষ হয়ে যায় একটি সুখি পরিবারের স্বপ্নগুলো।

জলে চোখ ভরে যায় বৃদ্ধের।রোজী তাদের জন্য হালকা কিছু খাবার ঘরের কাজের মেয়ের মাধ্যমে এনে দিলে।ওরা খাবারগুলো পেয়ে রাক্ষসের অশ্রুসজল চোখেঁ খেতে লাগলেন।তারপর রোজী তাদের এখানে কি এলেন তা জানতে চাইলেন।
-চাচা,ওরা আপনাকে না মেরে ছেড়ে দিল?

-হ্যা,ওরা আমার ছেলেদের কাছে যাতে এসব নির্যাতনের কথা বলতে পারি আর আমার একমাত্র মেয়েকে ওরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল।যাতে আমি আমার ছেলেকে বলি ওরা যদি আত্ম সমপর্ণ করে তবে ওর বোনকে ফিরিয়ে দেবে।
-তারপর”
-তারপর একদিন আমি বিলে গেলে দেখতে পাই বিলে আইলের ধারে আমার মেয়ের উলঙ্গ লাশ।
-আপনাদের ছেলে কি আর আসেনি বা দেখা হয়নি?
-না,আমি এও জানিনা ওরা বেচে আছে নাকি শহীদ হয়েছে।
-আর এ মহিলা বাচ্চাগুলো কারা আপনার কোন আত্মীয়?
-না,কোন রক্তের সম্পর্ক তবে বাংলাদেশে আসার পর ওদের সহযোগিতাই আমি বেচে ছিলাম।তাই মায়ার টানে ওদেরও এখানে নিয়ে এলাম।শিশুগুলো এতিম এ জগতে ওদের আপণ বলতে আর কেউ নেই।মহিলাটা বিধবা তারও স্বামী সন্তান আরাকান গিয়ে নিখোজ।একা একা যক্ষের ধনের মতন আগলে রেখেছিল তাদের বাড়ী ঘর এ আসায় হয়তো একদিন জয়ের নিশানা নিয়ে ফিরে আসবেন তার স্বামী সন্তান।সেই অবলম্ভন বাড়ীটুকুও এক রাতে পুড়ে ছাই করে ফেলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
-এতো আইনের লোক ফাকি দিয়ে কি ভাবে ঢাকায় এলেন?
-সেই বার তোমরা যখন আমাদের গ্রামে গিয়েছিলে তখন এই যে এই কাগজে তোমাদের দেয়া ঠিকানাটা রেখে দিয়েছিলাম তা উখিয়ায় এক সেনাকে দেখালে সেই আমাদের পথ দেখিয়ে দিল।সত্যিই,এদেশের মানুষগুলো এত মহানুভুতিশীল তা এ অবস্থায় পতিত না হলে বুঝতে পারতাম না।
সূচী যখন নোবেল পুরষ্কার পেয়েছে জানতে পারলাম ভেবেছিলাম তখন আমাদের মনে হয় নতুন সূর্য ঊদিত হল।কিন্তু না শেষ পর্যন্ত যেই লাঊ হেই কদুই রয়ে গেল।

-ঠিক আছে চাচা আপনেরা একটু বিশ্রাম নিন পরে আবার কথা হবে।এই জোনাকী ওদের ঘরটা বুঝিয়ে দে।
সূর্য আর নন্দিনী সবে মাত্র বছর খানেক হলো বিয়ে হল।আনন্দের মাঝে ভুলে ছিল নন্দিনীর যে এক ভয়ংকর মরন রোগ ছিল তা।নতুন সংসারের সাংসারিক চিন্তা ভাবনার মাঝে এই দুঃচিন্তা যে মনে আসেনি তা নয়,যখনি মনে হত এর পরিনাম তখনি সূর্য তার স্ত্রীর প্রতি তৃতীয় ইন্দ্রিয় দিয়ে বুঝে ফেলতেন আর তখনি তাকে সে সব চিন্তা দূর করতে হঠাৎ কখনো ঘুড়তে বেরুতেন কখনো বা হলে সিনেমা দেখাতে নিয়ে যেতেন।কেননা সূর্যের স্পষ্ট মনে আছে কোন এক ম্যাগাজিনে পড়েছিলেন সোভিয়েন ইউনিয়নের একটি ক্যান্সার হসপিতাল আছে যেখানে রোগীদের কেবল চিত্ত বিনোদন দিয়ে থাকেন সেখানকার ডাক্তারদের মতে মন প্রফুল্ল থাকলে দেহের রোগ এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।তাই এ সব ক্যান্সার রোগীদের ঔষধই একমাত্র চিত্ত বিনোদন।রিপোর্টে ছিল কেবল মাত্র রোগ থেকে রোগীর মনকে ভুলিয়ে রাখেন বিভিন্ন বিনোদন দিয়ে তাতে কিছু দিন পর ভুলে যায় যে তার কি রোগ হয়েছিল।এ ভাবে বড় বড় ক্যান্সারও হার মেনেছিল চিত্ত বিনোদনের কাছে।

এই দু বছরে এ রকম অভিনব চিচিৎসা নন্দিনীকে আরোগ্য লাভে সহজ করে দেয়।চিকিৎসকের ঔষধের পাশাপাশি এ চিত্ত বিনোদনের ফল জানলেন ডাক্তারের মুখ থেকে এবং আপডেট রিপোর্টে।
-সূর্য!মনে হচ্ছে রোগটি ফেরত যেতে চলছে।
নন্দিনী ও সূর্য দুজনেই অবাক হয়ে ডাক্তারের মুখের দিকে চেয়ে রইলেন।
-কি বিশ্বাস হচ্ছে না?সত্যিই বলছি তোমাদের আজকের রিপোর্টে তাই বলছে।তবে কি জানো প্রথম যখন আমি এর চিকিৎসা ভার হাতে নিলাম তখনি আমি কিছুটা আশাবাদী ছিলাম তোমার সহচার্যে সে আরোগ্য লাভ করবেই যদিও তোমাদের বিদেশী ডাক্তার বাবুরা এর আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন।এই নাও তোমাদের রিপোর্ট আর নতুন করে কিছু ঔষধ লিখে দিলাম আশা করছি রোগটি ক্রমশতঃ দূর্বল হয়ে পড়বে।
কাগজপত্র গুলো হাতে নিয়ে ডাক্তার সাহেবকে সালাম দিয়ে চলে এলেন গোলাপ শাহ্ মাজারে।সেখানে কিছু টাকা ও আগরবাতি মোমবাতি দিয়ে নন্দিনীকে বললেন।
-জানো চলার পথে অনেককেই দেখতাম দূর থেকেও মাজারটিকে সালাম করত,আমি প্রথম যেদিন তোমার রোগের ফাইলটি নিয়ে ডাক্তার চাচুর কাছে যাইতেছিলাম ঠিক তখনি এই মাজারের দিকে তাকিয়ে দূর থেকেই সালাম করি এর পর যতবারই ডাক্তারের কাছে এসেছি ততবারই মাজারের মানুষটিকে সন্মান জানাতাম।হয়তো আল্লাহর এই নেক বান্দার উছিলায় তোমার রোগটি আজ নমনীয়র দিকে।
হঠাৎ প্রচন্ড শব্দ।সূর্য ও নন্দিনী প্রথমে ভয় পেলেও পড়ে বুঝতে পারলেন ট্রাকের ভাষ্ট হয়েছিল।তবুও নিরাপত্তার খাতিরে ওরা দৌড়ে একটি রেষ্টুরেন্টে ঢুকেন।সেখানে বসাছিলেন দেশের কয়েকজন অতি উৎসাহী বুদ্ধিজীবি।তাদের ঠিক অপজিট টেবিলটিতে বসেছিলেন নন্দিনী ও সূর্য।বুদ্ধি জীবিদের একজন আরেকজনকে বলছেন…..বুঝলি দেশটা বুঝি এবার গেলো রসাতলে।
-মানে?
-এই যে!ভাষ্ট হলো ট্রাকের চাকা অনেকেই বলছেন কে বলে বোম ফুটিয়েছে।
-ঠিকই কইছো,দেশে কত কত মুক্তিযোদ্ধারা সরকারী লিষ্টহীনে আছে অথচ ভূয়া মুক্তিযোদ্ধায় ফাইল ভরা।যে দেশে স্বাধীনের ৪৬ বছরেও একটি সঠিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করতে পারলা না আমাদের মহামান্য রাজনৈতি নেতারা,যে যখন ক্ষমায় ছিলো তখনি রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের রেখেছে উপক্ষেতিত সেই দেশের এই সব সুবিদাভোগী নেতাগো দিয়া কি আর আশা করতে পারেন!
অন্য এক বুদ্ধিজীবি কথার রেস ধরলেন।
-এই যে দেখেন!ক্ষমতাসীন সরকার কি করছে…চাক্ষুখ প্রমাণীত জাসদের ইনুরাই এ দেশে স্বাধীনতা অর্জনের পর পরই মুক্তিযুদ্ধাদের বিতর্কীত করেছেন দেশে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে নাম পড়েছে কিছু বিপদগামী মুক্তিযোদ্ধা যারা সরকারের নিকট অস্ত্র জমা দেয়নি তারাই এমন অরাজকতা সৃষ্টি করছেন।অথচ তৎকালে ক্ষমতার মহা ক্ষমা মহানুভবতায় ইনুরা সহি সালামতে এ দেশেই ক্ষমতার শীর্ষে অধিষ্টিত।
অন্য একজন,,,,
-শুধু কি আওয়ামীলীগই!বি এন পি করেনি?রাজাকার আলবদরের গাড়ীতে দেশের সন্মান পতাকা তুলে দেয়নি?
-ঐতো আমিতো আর কাউকে একক ভাবে বলিনি এই আমরাই।মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বলেন আর বিপক্ষে বলেন সবাই এমন কি এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের অবলম্ভন করেই রাজনিতীর নোংরামী করে যাচ্ছেন।সব চেয়ে কষ্টের কথা কি জানেন!আমরা প্রবীনরা আজও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারিনি।
অন্য আরেকজন,,
-কি করে পারবেন!রাজনৈতিক নেতা যারাই আছেন তারা কেউ কারো কথা শুনেন না মানেও না।আমাদের দেশে ’৯০ এর পর এ যাবৎকাল দুটো দলই ক্ষমতায় ছিলেন এক বি এন পি দুই আওয়ামীলীগ।বি এন পি যখন ক্ষমতায় ছিলেন পারলে মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক বাংলাদেশের স্থপতি জাতীর পিতা বঙ্গ বন্ধুর নাম নিশানাই চিরতরে মুছে ফেলেন আবার আওয়ামীগ ক্ষমতায় এলে শহীদ জিয়াকেতো পারলে রাজাকারই বানিয়ে ফেলেন।যুদ্ধে জেনারেল ওসমানী,কাদের সিদ্দিকী,সহ মাওলানা ভাষানী,শহীদ সোহরার্দীরতো কোন নামই নেন না কেউ,’৭১ এর যুদ্ধের আগে পরে কি এই সব মহান নেতাদের কোন অবদানই ছিলো না?।এক কথা মনে রাখবেন যতদিন পর্যন্ত না জাতীয় স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সকল দলের অংশগ্রহন না থাকবে ততদিন আমাদের কপালে আরো দুঃখ আরো অনেক কিছুই দেখতে হবে।
অন্য আরেক জন….
-কি যে কন ভাই,দেশের মাথাগুলো যাদের দ্বারা দেশ পরিচালিত ও দিক পরিবর্তন হয় তারা বা সে সব রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোই আজ বিতর্কীত।নিরাপত্তায় সাধারণ মানুষতো দূরে থাক সাংবাদিক মিডায়ারো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।তাছাড়া দেশের সব চেয়ে ভরসা স্থান বিচার বিভাগও এখন বিতর্কীত।বিচারপতি এস কে সিনহারে নিয়া কি কলংকিত অধ্যায়ই না জন্ম দিল ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার।ঘটনা যদি এমনি হবে তবে কেনো অযথাই নিয়োগ দিলি।এই তোরাই আবার বিভিন্ন অযুহাতে বিদেশ পাঠিয়ে মামলা চামলা দিয়া প্রধান বিচারপতির পথ হতে সরে যেতে বাধ্য করলি।এই যে ধরেন ঢাকার দক্ষিণের মেয়র আনিসুল হক।কি ভাল লোকই না ছিলো সে তার সাধ্যমতে চেষ্টা করেছেন ঢাকাকে একটি বাস যোগ্য নগর গড়ে তুলতে সেই তাকেই সরকার ভাই সেনাবাহিনীর প্রধান বলে কেমন মানষিক যন্ত্রণায় রেখেছিল সরকারী মহল নইলে এতো তরতাজা লোকটি হঠাৎ এ ভাবে মারা গেল?
উপস্থিতদের মধ্যে থেকে তার এ কথার উপর কথা কাটল অন্য আরেক জন।
-আপনি কি নিশ্চিৎ যে সরকারের কারনেই আনিসুল হক মৃত্যু বরণ করেছেন?কি প্রুভ আছে আপনার হাতে?
লোকটি আমতা আমতা করতে লাগলেন।
-না মানে…শুনা কথা আর কি!
-প্রুভহীন এমন শুনা কথা মজলিসে বলতে নেই।এই আপনাদের মতন লোকের জন্যই জাতীয় নির্বাচনে ভাল লোকেরা নির্বাচীত হতে পারে না আর দেশ ও দশেরও কোন পরিবর্তন হয় না,বুঝলেন।
লোকটি লজ্জায় মাথা নত করে রাখেন।
কথা তাদের শেষ হয়নি।কথার ছলে চলছে কথা।রেষ্টুরেন্টের তদারকারীরা তাদের উপর বেশ বিরক্ত তবুও কিছুই বলার নেই কারন তারা সবাই লোকাল এই আস পাশ এলাকার।এদিকে সূর্য ও নন্দিনী হালকা খাবার খাচ্ছেন আর ইচ্ছে না থাকলেও তাদের কথা গুলো শুনতে হচ্ছে।এর মধ্যে বাড়ী থেকে মায়ের ফোন আসে।সূর্য ফোনটা রিসিভ করে এক প্রকার তরিগরি করে বিল চুকিয়ে বাহিরে চলে এসে একটি সিএনজিতে উঠেন।সিএনজি এসে থামে নিদিষ্ট গন্তব্যস্থানে।তাদের পাশ দিয়েই চলছে বিশাল মিছিল যেখানে সাইনবোর্ড ব্যানারে লেখা ছিলো আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে কটাক্ষ করে লেখা বিভিন্ন ক্ষোভের শ্লোগান।বেশ কয়েক দিন যাবৎ চলছে মিটিং সমাবেশ।কারন মুসলমানদের পবিত্র ভুমি জেরুজালেমকে ট্রাম্প ইজরাইলের রজধানী ঘোষনা দিয়েছেন।এ পরিপেক্ষিতে সারা মুসলিম জাহানেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এ থেকে বাংলাদেশও বাদ যায়নি।

সূর্য ও নন্দিনী বাসায় প্রবেশ করে আগত অতিথীদের সাথে পরিচিত হন।কিছু ক্ষণ ঘরে অবস্থান করেই সূর্য বেরিয়ে পড়ে তার সাংগঠনিক কিছু কাজ বাকী ছিল তা সমাধানে।এবারের বিজয় দিবসেও থাকছে এলাকা বাসীর জন্য চমক।দেশের বিভিন্ন স্থান হতে বেচে থাকা ’৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রে সংবর্ধনা দিবেন।এ সব মুক্তিযোদ্ধাদের লিষ্ট সরকারী ঘরে ছিলো না সূর্য তাদের নাম সরকারের খাতায় অন্তভুক্ত করান।নাম অন্ত ভুক্ত করার সময় রাষ্ট্রের অবহেলিত এক পঙ্গু(যুদ্ধে) মুক্তিযোদ্ধার আহাজারি শুনে সূর্যরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
-কি আর অবে বলো বাবারা এই সব নাম লিখিয়ে!বাচুম আর কয়দিন?অনেক স্বপ্ন ছিলো ‘৭১এ…দেশ স্বাধীন অবে মোরা একটা স্বাধীন দেশ পাবো যেহানে আমাগো নতুন প্রজন্মরা বাস করবে রাষ্ট্রের হগল মৌলিক অধিকারগুলান ভোগ করে।কৈ আমরা কি তা দিতে পারছি?স্বাধীনতার জন্যে আমার জীবন যৌবন সব কিছুই হারালাম সব আত্মীয় স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব আমি একা এক পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা।যুদ্ধে পা হারিয়ে বেচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াটাই বেশ ভাল ছিল…অন্তত নামের শেষে শহীদ মুক্তিযুদ্ধা কেউ না কেউ নামটি ধরে বলত।অথচ বেচে থাকতে কেউ খোজঁ রাখেনি।যুদ্ধের পর পরই দেশের অবস্থা দেখে আমি আচ করতে পেরেছিলাম আমাদের মানে মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে আরো দুঃখ আছে।পুরোপুরি বুঝতে পারি ১৯৭৫ এ যখন বঙ্গ বন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করল আমাদের কিছু সৈনিক মুক্তিযোদ্ধারা তখন অবস্থা এমন ছিলো যে শোষকের ভয়ে কেউ মৃত বঙ্গবন্ধুকে দেখাতো দূরে থাক জয় বাংলার নামটিও কেউ মুখে উচ্চারণ করতে পারত না।এমনি অকৃজ্ঞ জাতী কি আর দিতে পারবে আমাগো!।আমি সে দিন থেকেই “মুক্তিযোদ্ধা আমি” বলতে ভুলে গেছি।বলতে বলতে চোখ দিয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়ছিল তার অমুল্য জল তার কিছুটা সূর্যের হাতের তালুতে নিয়ে উপস্থিত সবার উদ্দ্যেশে শপথ করলেন।
-আর নয় কান্না এবার জেগেছে এ নতুন প্রজন্ম।আপনাদের প্রতিদানের যে সূর্য উদিত হয়েছে তা রক্ষা করার দায়ীত্ব মাথায় তুলে নিলাম।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×