somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সতর্কবানীঃ ফেসবুক সেলিব্রেটি ও তাদের মুরিদরা এই লেখা থেকে দূরে থাকুন।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ব্লগে আসা হয় না, সবাই কেমন আছেন? না কোন অজুহাতে নয়, কিছুটা ঝামেলা আর অলসতা ভর করেছে।

ঘটনা-১

তখনও ভোরের আবছা আলো, রহমান সাহেব প্রতিদিনকার অভ্যাস মত হাঁটতে বের হলেন। শীতের দিন, আজ অবশ্য কুয়াশা নেই। তবে ঠান্ডা বাতাস যে বইছে গরম কাপড় পরেও তা ভাল টের পাচ্ছেন। কিছুটা দূরে ফুটপাত ঘেঁসে কয়েকটা বাচ্চা আগুন জ্বালিয়ে শীতের হাত থেকে একটু উষ্ণতা নিতে চেষ্টা করছে। রহমান সাহেব বাচ্চা গুলোর দিকে এগিয়ে গেলেন। পকেটে থাকা দামী মোবাইল ফোনটা বের করে কয়েকটা ছবি তুলেলন।

ঘটনা-২

রহমান সাহেব প্রতিদনের নিয়ম মত অফিসে আসলেন। পিয়নকে কফি দিতে বলে রহমান সাহেব ফেসবুকে ঢুকলেন। গতকল রাতে ঘুমানোর আগে একটা ছোট্ট স্ট্যাটাস দিছেন। "বন্ধরা ঘুম আসছে"। স্ট্যাটাস স্ট্যাটাস

স্ট্যাটাসে লাইক ৭হাজার কমেন্ট ৭শ' শেয়ার হয়েছে ৯৩২বার।

ঘটনা-৩

রহমান সাহেব সকালে তুলে আনা আগুন পোহানো অসহায় শিশুদের ছবি থেকে বেছে যে ছবিটায় শিশুদের বেশি অসহায় দেখাচ্ছে সেটা ফেসবুকে দিয়ে একটা ছোট্ট স্ট্যাটাস দিলেন,

"কোথায় আজ মানবতা? একটু উষ্ণতার আশায় চেয়ে আছে নির্মল অসহায় কিছু চোখ"। তারপর

আসুন একটু উষ্ণতার হাত বাড়াই।

স্ট্যাটাসটা দেয়ার পর, রহমান সাহেব মনে মনে ভাবছেন। গতবার রানা প্লাজা ধসের পরে এমন হাত বাড়িয়ে দেয়ার একটা স্ট্যাটাস দেয়ার পর, দেশ-বিদেশ থেকে অনেক টাকা এসেছে তার ব্যাংক ও বিকাশে। সেই টাকার বড় একটা অংশ এখনো তার ব্যাংকেই আছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

ঘটনা-৪

রহমান সাহেব যে ফেসবুকে এত বড় সেলিব্রেটি তার পাড়ার কেউ জানে না। রহমান সাহেবের বাসায় ভাড়া থাকে করিম সাহেব। করিম সাহেবের বড় ছেলে ও তার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব এসেছে তার অফিসে। তারা পরশু উত্তরবঙ্গে শীতবস্র নিয়ে যাবে, উনার কাছে কিছু সহযোগিতা চাইতে এসেছে। রহমান সাহেব ছেলে গুলোকে খুব সমাদর করে কফি খাওয়ালেন। তারপর যতটা পারা যায় মুখে খুব গম্ভীর একটা ভাব ফুটিয়ে তুলে প্রচন্ড আন্তিরক গলায় বলেলন। বাবা তোমরা খুবই মহৎ কাজ করতেছ, তোমরাই পারবে আমাদের এই অভাগা দেশটাকে কিছু দিতে। আমাদের দেশের সবাই যদি তোমাদের মত করে দেশের মানুষদের নিয়ে একটু ভাবতো, দেশটা অনেক এগিয়ে যেত। বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে, আর তোমরাতো সবাই জানো দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে ব্যবসা-বানিজ্য নাই বলেলই চলে তারপরও আমি রাতে বাসায় গিয়ে তোমার চাচীর কাছ থেকে এ মাসের বাড়ী ভাড়া থেকে কিছু নিয়ে দিতে পারি কিনা।

ঘটনা-৫

করিম সাহেবের বড় ছেলে রাতে বাড়িওয়াল বিশিষ্ট ফেসবুক সেলিব্রেটি (পাড়ার কেউ জানে না উনি যে ফেসবুকের বিখ্যাত মিষ্টার ) রহমান সাহেবের কাছে গেল। রহমান সাহেব করুন কন্ঠে করিম সাহেবের বড় ছেলেকে বলেলন। বাবা বাড়ি ভাড়া যেটা তোমার চাচীর কাছে ছিল সে আমাকে না বলেই তিন মাসের বাড়ির কারেন্ট বিল দিয়ে দিছে। বাবা তোমরা কিছু মনে করো না, তবে আমি তোমাদের কথা দিচ্ছি আগামীবার আমি নিজে তোমাদের জন্য কিছু কম্বল কিনে দিব। আর হ্যাঁ তোমাদের জন্য "সেলুট"।

তোমরাই পারবে আমাদের একটি সোনার বাংলাদেশ উপহার দিতে

আমি সেলুট করি আমার সহ-ব্লগার ভাই-বোনদের। যখন যেটা দরকার সেখানে তারা সে ভাবেই হাজির হয়। যেমনটি রুশান,রানা প্লাজা, মেঘনা পাড়ের অসহায় ভূমিহীন জেলেদের ছেলে-মেয়ে, সহ এমন অসংখ্য উদাহরন তারা সৃষ্টি করেছেন যে তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় বুক ভরে উঠে। তাদের সাথে থাকতে পেরে সত্যি গর্ব হয়।

বিঃদ্রঃ ইহা একটি কাল্পনিক লেখা। কোন ফেসবুক সেলিব্রেটির সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ী নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×