দেশে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈরী মনোভাবে মুষড়ে পড়েছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গত ৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদের ৭ম অধিবেশনের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাবের কথা জানতে পারেন তিনি। তবে হতাশ হয়ে পড়লেও সাবেক এ রাষ্ট্রপ্রধান প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের দাবিতেই অনড় থাকবেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, গত ১৩ মার্চ রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে সেমিনার আয়োজন করে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। অবশ্য তার আগে থেকেই প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সক্রিয় ছিলেন জাপা চেয়ারম্যান ও তার দল। ওই প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আগেই প্রাদেশিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করে তারা। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতার আলোকে এ কমিটির নেতৃবৃন্দই প্রাদেশিক সরকার বাস্তবায়ন প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। পরবর্তীতে নিজেদের প্রস্তাবিত ৮ প্রদেশে প্রাদেশিক ব্যবস্থা বাস্তবায়নে প্রতিটিতেই আলাদা কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি প্রাদেশিক সরকারের পক্ষে জনতম গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় শুরু করে। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও চট্টগামে এধরনের দুটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভায় এরশাদ নিজে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দলীয়সহ বিভিন্ন ফোরামের সভা-সেমিনারে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষে বক্তব্য দিয়েও জনমত গঠনের চেষ্টা করেছেন এরশাদ। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রীকে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা কায়েম করে যেতে পারলে এ দেশের মানুষ আপনাকে (শেখ হাসিনা) যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এরশাদ তাকে লক্ষ্য করে আরও বলেন, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হলে রাজধানী ঢাকার উপর চাপও কমবে। নয়ত এই শহরটি বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে ধীরে ধীরে। এছাড়া প্রাদেশিক সরকারের আরও কিছু সুবিধা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন তিনি। কিন্তু সমাপনী ভাষণে এরশাদকে হতাশায় নিমজ্জিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রদেশ গঠন না করে প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। কারণ, প্রদেশ করে কোন লাভ নেই। বরং সরকারের খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নে অফিস আদালত আরও বাড়াতে হবে। এতে প্রশাসনের মাথাভারি হওয়ার সাথে সাথে জায়গাও অপচয় হবে অনেক। তাই প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা কায়েম নয়, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে উপজেলার মত জেলা পরিষদকেও সক্রিয় করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি আদায়ের ব্যাপারে এরশাদকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে এরশাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানায়, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের দাবিকে আরও জোরালোভাবে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপনের জন্য করণীয় সম্পর্কে দলের সিনিয়র নেতাসহ নিজের পরামর্শকদের সাথে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে প্রাদেশিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও এরশাদের প্রেস সচিব সুনীল শুভরায় শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, প্রাদেশিক সরকার প্রণয়ন হলে প্রশাসনের মাথাভারি হওয়ার সাথে সাথে এ সেক্টরে আরও গতি আসবে। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা এটা বোঝানোর চেষ্টা করবো। আশা করি তিনি বুঝবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাদেশিক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের এ দাবিটি জাপার সংস্কার কর্মসূচির অংশ। তাই এ দাবি থেকে সরে দাঁড়ানোর কোন সুযোগ নেই।
শরীফ খিয়াম, ১৪ ডিসেম্বর (শীর্ষ নিউজ ডটকম)
প্রাদেশিক সরকারে হাসিনার অনীহায় হতাশ এরশাদ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।