লতা,
জানিস,আমি আর সেই অবাধ্য একগুঁয়ে ছেলেটি নই;
কত বদলে গেছি আমি,তুই আমাকে দেখলে এখন আর চিনতেই পারবি না।
জানিস,আমি এখন আর বুক বরে সিগারেটের ধোঁয়া পান করি না;
নিকোটিনের বিষে দূষিত করিনা আমার ফুসফুসকে;
তার বদলে দু’চোখ ভরে পান করি প্রভাতবেলার আমৃত সৌন্দর্য;
প্রাণভরে গ্রহণ করি স্নিগ্ধ সকালের শিশির ভেজা ভোরের বাতাস।
কত বদলে গেছি আমি,কত ভদ্র হয়ে গেছি ,তাই না?
তবুও পেলাম না,তবুও পেলাম না তোর দেখা,
তাই আজ আমি হয়ে গেছি একা,বড় একা।
লতা,
জানিস,আমি আর আগের মত সেই অগোছালো,আউলা ঝউলা নোংরা ছেলেটি নই;
কত বদলে গেছি আমি,তুই আমাকে দেখলে এখন আর চিনতেই পারবি না।
জানিস,আমি আগের মত সেই জোড়াতালি দেয়া পুরনো স্যান্ডেল পায়ে আর ঘুরি না;
অনেক দিনের পরিষ্কার না করা ঘামের গন্ধ ছড়ানো ময়লা জামা আর পরি না;
এখন আমি অনেক পরিপাটি করে গোছানো আর ছিমছাম স্মার্ট একটা ছেলে,
হাল ফ্যাশানের সদ্য প্রস্তুতকৃত চপ্পল পায়ে ঘুরি,
আইরন করে ভাজ না ভাঙা পরিষ্কার জামা পরি,
তবুও পেলাম না, তবুও পেলাম না তোর দেখা,
তাই আজও আমি পথে পথে ঘুরি একা একা।
লতা,
জানিস,আমি আর সেই আগের মত নেই;
আগের মত পাঁচদিনের না কামানো দেবদাস মার্কা দাঁড়ি মুখে থাকি না,
সময়মত স্নান না করা যত্নহীন আর অপরিষ্কার উষ্কোখুষ্কো চুলে বাইরে বের হই না,
আউলা ঝাউলা না আঁচড়ানো লম্বা চুল মাথায় নিয়ে ঘুরি না;
এখন আমি পুরোপুরি বদলে গেছি,
একটা রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে গেছে আমার।
এখন আমি সময়মত যত্নকরে দাঁড়ি কামায়,
নিয়মিত মাথা পরিষ্কার করি,শ্যাম্পু করি,
তোর পছন্দ অনুযায়ী ছোট করে চুল ছাঁটায়।
পরিপাটি করে চুল আঁচড়িয়ে বাইরে যায়।
তবুও পেলাম না,তবুও পেলাম না তোর দেখা,
তাই আজও আমি রয়েগেছি একা।
লতা,
জানিস,এই ঢাকা শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে,
প্রতিটা রাস্তাতে ফুটপাতে আমি তোকে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি,
বিজ্ঞ শল্য চিকিৎসকের মত ময়নাতদন্তের ধারালো ছুরি চালিয়েছি আমি
এই নিষ্টুর হৃদয়হীন নির্মম ঢাকা শহরের বুকে,
তোকে অবিরাম খুঁজে ফিরেছি আমি এই মায়া-মমতাহীন,
সহানুভূতিহীন ইট-কাঠের জঙ্গলে;
তবুও পেলাম না,তবুও পেলাম না তোর দেখা,
তাই আজও আমি বেঁচে আছি একা একা।