somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ছোট গল্প,

০৭ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যবসা
লোকটাকে প্রথম দেখি বছর দু’তিনেক আগে এক সালিশি বৈঠকে। আমার তখনকার পেশার কারণে প্রায়শ এ ধরনের বৈঠকে হাজির থাকতে হতো, দেখতো হতো শত শত মানুষকে, যে কারণে নির্দিষ্ট কাউকে মনে রাখার কথা নয়। কিন্তু একে মনে ছিল, মনে ছিল তার আক্রমন্তক আচরণের কারণে। তার মত আগ্রাসী কোন ব্যক্তিকে সালিশ বৈঠকে এর আগে দেখা যায়নি। সমস্যাটি ছিল স্ত্রীর সাথে তার। আমি যখন তার বক্তব্য জানতে চাইলাম।ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলো সে। তাতে আপনার কি? আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন চেষ্টাই করলো না। বরং তার কথাবার্তায় মনে হলো তার বউকে সে মেরে ফেললেও অন্য কেউ কোন কথা বলতে পারবে না। মনে আছে, প্রথম দিনের বৈঠকটা ওখানেই শেষ করতে হয়েছিল। আর দ্বিতীয় বৈঠকে সে আরো বেশি আক্রমণাত্মক। যখন তার কর্মজীবী স্ত্রীর যাবতীয় সম্পত্তি এবং সঞ্চয় আত্মসাৎ করার কথা উঠলো, সে অস্বীকার করলো না। স্ত্রীর যাবতীয় বেতন-ভাতা হাতিয়ে নেয়ার কথা উঠলো-তাও স্বীকার করলো। যখন স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ আনা হলো, ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে নির্যাতনের মাত্রা দশগুণ বাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিল। এমন ঔদ্ধত্য সবাইকে অবাক করলো। এমনকি লোকটার সাথে যে একজন এসেছিল সহযোগী হিসেবে, বিস্ময়ের ছাপ পড়েছিল তার চোখে সুখেও।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে মীমাংসার আর কোন চেষ্টা করার কথা নয়, কিন্তু সাথে আসা লোকটার অনুরোধে তৃতীয় আর একটি তারিখ ঠিক করা হল। আর মাঝখানের একটি দিন ঠিক করে তার স্ত্রীকে আসতে বলা হল। উদ্দেশ্য তৃতীয় তারিখেও মীমাংসা না হলে মামলা মোকদ্দমা বিষয়ে তার স্ত্রী মতামত নেয়া।
মেয়েটি কিন্তু সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বললো না। মামলা করার সম্ভাবনার কথা শুনে ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ করে খানিকক্ষণ কাঁদলো। তাকে বিভিন্নভাবে করা নির্যাতনের বিভিন্ন কথা বললো ইনিয়ে বিনিয়ে।
তারপর সবকিছুর পরওতো লোকটা স্বামাই জাতীয় বিরক্তিকর কিছু কথাবার্তা বলে বিদায় নিল। মেয়েটির প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া কেউ কেউ বিরক্ত হল, আর দুয়েকজন তাকে বোঝাতে চাইল। কি বুঝলো কে জানে, সালিশের তৃতীয় বৈঠকে আর এলো না। এলো না কোন পক্ষই। কোন যোগাযোগও করেনি পরবর্তীতে। ব্যাপারটা ওখানেই চাপা পড়ে গেল।
এর মধ্যে আমার পেশা আর কাজের পরিধি দুটোই বদলে গেছে। তবুও একদিন লোকটার সাথে দেখা হয়ে গেল। দেখা হল অনেকটা আগের পরিস্থিতিতে। তবে এবারের সালিশটা ডাকা হল অন্য একজন নারীর আবেদনে। সেখানে আমার থাকার কথা ছিল না, হঠাৎ হাজির হয়ে লোকটাকে দেখলাম। একই সংগঠন না হওয়ার কারণেই হয়তো লোকটা আমাকে চিনতে পারলো না। অথবা আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য না থাকার কারণেও হতে পারে, আমার দিকে দ্বিতীয়বার তাকালো না। যেহেতু জানতাম তখন সালিশ চলছে, লোকটাকে দেখে অনুমিতভাবেই বছর দু’তিনেক আগে দেখা সেই নারীকে খুঁজলো আমার চোখ। পাওয়া গেল না। মিনিট দু’তিনেক চুপচাপ বসে থেকে অভিযুক্ত আর অভিযোগকারিনী দুজননে চেনা গেল। অভিযুক্ত সেই পুরনো জন, কিন্তু অভিযোগকারিনী আমাকে বিস্মিত করলো। বিস্ময়টা জাগলো নতুন আরেকজন নারী হওয়ার কারণে নয় বরং আগের জনের সাথে তার পার্থক্য দেখে। আগের মেয়েটি কর্মজীবী হওয়া সত্ত্বেও মুখশ্রীতে কমনীয়তা ছিল চোখে পড়ার মত, আর নম্রতাতো রীতিমত বিরক্তিকর পর্যায়ের। সবকিছু হারিয়েও স্বামীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাচ্ছিল না।
সে তুলনায় এ মেয়েটি বেশ আক্রমন্তক লোকটার কি ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত সেই মতামত জানিয়ে শুরু করলো, সেটা অবশ্যই প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার বাইরে। গলার স্বর, মেজাজ মুখশ্রী, দ্বিতীয় বধূ হওয়ার ক্ষেত্রে সবকিছু যেন অনুপযুক্ত। বয়সটাও বেশ খানিকটা বেশি মনে হল। লোকটাকে ক্রিমিনাল ভাবার চেয়ে বরং আগের মেয়েটিকে ছেড়ে এ মেয়েটিকে বিয়ে করলো কেন, ভাবনাটা আমাকে বেশ কৌতূহলী করে তুললো। এছাড়া অন্যান্য কথাবার্তা সব আগের মত। টাকা পয়সা গহনাপত্র সবকিছু আত্মসাৎ করা, কোন ধরনের ভরণ পোষণ না দেয়া ইত্যাদি। তবে শারীরিক নির্যাতনের কোন কথা উঠছে না দেখে হাসি পেল। উঠলেও খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য হতো না। পৃথিবীটাই শক্তের ভক্ত।
যেহেতু এখন বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামানোটা আমার কাজের মধ্যে পড়ে না, আমি সেখান থেকে চুপচাপ চলে এলাম। কিন্তু কৌতূহল হোক বা লোকটা দ্বিতীয়বারও অপরাধ পার করে পেয়ে যাওয়ার তালে আছে দেখে এখনো মনের কোণে বেঁচে থাকা কোন বিবেকের খোঁচায় হোক, সালিশের দায়িত্বে থাকা জনকে ফোন করে সালিশটার পর্যায় জানতে চাইলাম। জানালো সালিশ মাত্র সেদিনই শুরু, পরের তারিখও কাছাকাছি। সিদ্ধান্ত নিলাম অযাচিত হলে হবে, সেদিন সেখানে যাবো।
পরের তারিখে কিন্তু নতুন বউটা বেশ চমকে দিল। যাকে আমি লোকটার দ্বিতীয় বউ ভেবেছিলাম। সে নিজেই তার সংখ্যাগত অবস্থানটা অনিশ্চিত করে তুললো। শুরুতেই বউটা নতুন একটা কাবিননামা হাজির করলো যেখানে বউ হিসেবে আরেকজনের নাম লেখা। লোকটার পুরাতন বউটার নাম মনে নেই, কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায় কাবিননামার নামটা নয়। তাছাড়া কাবিননামা সম্পাদনের তারিখটা খুব একটা পুরনো নয়। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত লোকটা স্বীকার না করলে উভয় কাবিননামার বর যে একই ব্যক্তি বোঝা দুঃসাধ্য ছিল। নামটাই শুধু এক, নইলে পিতার নাম, ঠিকানা সবকিছু আলাদা। শুধু লোকটা নয় মোটামুটি অনেকেই হকচকিয়ে গেল, আমিতো বটেই। লোকটার সাথে আসা জন, আমিওতো এটার কথা জানতাম না বলে কাবিননামাটা বেশ কবার উল্টে পাল্টে দেখলো।
দেখেন যা হওয়ার হয়ে গেছে লোকটা গলা খাকারি দিয়ে শুরু করলো, ভুল একটা যখন করেই ফেলেছি, মীমাংসায়তো আসতেই হবে।’ ভুল কি একটা? মাঝখানে হঠাৎ করে কথাটা বললাম। এই প্রথম লোকটা আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। পরমুহূর্তে তার বদলে যাওয়া দৃষ্টি প্রমাণ করলো তার স্মৃতি শক্তির প্রখরতা। আমি আগেও লক্ষ্য করেছি বেশির ভাগ বদ লোকের স্মৃতিশক্তি ভালো হয়। এই বৈঠকে দ্বিতীয়বারের মত চমকাতে হল তাকে। আরো কোন ব্যাপার আছে নাকি? একসাথে দুজন প্রশ্নটা করলো। আমি জবাব না দিয়ে হাসলাম, ‘ব্যাপার আছে কি নেই সেটা উনি বলুক। আমি কি বলবো খেঁকিয়ে উঠলো লোকটা, ‘যত্তসব বাজে কথা। সেই আগের ভঙ্গিতে লোকটার ক্রুদ্ধ হয়ে উঠা বোঝালো সবকিছুই মনে আছে তার। সেবার আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে পার পেয়ে যাওয়ায় হয়তো পুরনো আত্মবিশ্বাস আবার জেগে উঠতে চাইছে। হয়তো মনে করেছে আবার চিল্লাচিল্লি করে কিছু হলেও হতে পারে। হয়তো জানে না যে, তার এই চেঁচামেচির জন্যই তাকে শাস্তি পাইয়ে দিতে অফিসিয়াল কাজের বাইরে গিয়েই উৎসাহী হয়ে। উঠেছিল কয়েকটা মানুষ। কিন্তু তার সেই ভালোমানুষ বউটা আর কোন যোগাযোগ না করায় তা হয়ে উঠেনি।
অনেকদিন পর এসে সেই মেয়েটার জন্য আমি মমত্ব অনুভব করলাম।
উনি কিন্তু ভালো কথা বা বাজে কথা কিছুই বলেননি, সালিশ পরিচালনা করার দায়িত্ব যার হাতে তিনি আবার ফোকাসটা তার দিকে নিয়ে গেলেন। উনি একটা প্রশ্ন করেছেন মাত্র, এবার তাকেই বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হল, সেটার জবাবটাও কিন্তু এই সালিশি বৈঠকটার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, লোকটার সাথে আসা জন এতক্ষণে কিছু বলার সুযোগ পেয়ে যেন লুফে নিল, ঝামেলা যদি কিছু থাকেও সেটা উনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে বিবাহ বিচ্ছেদ কিংবা ভরণ পোষণ সংক্রান্ত কিছুর সাথে এর সম্পর্ক নাই। আমি কিছু বললাম না। লোকটার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য সেদিকে তাকালাম। চোখ মুখ পাথরের মত শক্ত করে বসে আছে। খানিক আগের ক্ষেত্রে উঠা ভাবটা নেই, আত্মবিশ্বাসের ছিটেফোঁটাও নেই বসে থাকার ভঙ্গিতে। ধরা খাওয়া লোক দেখতে কেমন হয়, অন্যসব বাদ দিয়ে সেটা দেখতে ইচ্ছে হলো।
যেহেতু ঐ বিয়েটার কোন কাগজপত্র আমার হাতে নাই, সুতরাং এ মুহূর্তে সেটা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়। তার চেয়ে ঐ চাপে যদি এখানটাতে কোন সম্মানজনক সমাধান বেরিয়ে আসে সেটাই উভয়ের পক্ষে ভালো। সুতরাং, আমার জিজ্ঞাসা সম্পর্কে কাউকে কোন ধারণা না দিয়ে বেরিয়ে এলাম। এখানকার সবাই আমার পরিচিত, আমি আরেকটা ঘরে গিয়ে আড্ডা জমালাম।
প্রায় আধঘণ্টা পর যখন বেরুলাম ততক্ষণে সালিশ শেষ। সাথে আসা লোকজনসহ মহিলাটা তখনো বসে। আমাকে দেখামাত্র যে ভাবে সোজা হয়ে বসলো বোঝা গেল কোন আমার জন্য অপেক্ষা করছিল তারা। কাছাকাছি এসে দাঁড়ালাম কিছু বলবেন?
আপনি কি উনার পূর্ববর্তী কোন বিয়ের খবর জানেন? সরাসরি প্রশ্ন করলো বউটা, কেন বলুনতো? প্রকৃত অর্থেই বিস্মিত আমি। দুনিয়ার কথা থাকতে হঠাৎ করে লোকটার আগের কোন বিয়ের কথা আসলো কিভাবে? এ ব্যাডা বউত বিয়া বইছে, দুইডা জানছি আগে, কাইল হনছি আরেকটা আমি শিউর তার আরো কেইস আছে।
ইতিমধ্যে চারটা নিশ্চিত। আমার বেকুব অবস্থা তখন। আমার কাহিনীটা তখন আমার কাছেই গুরুত্ব হারিয়েছে। মহিলাকেও তেমন প্রভাবিত করলো না। পুরোটা শোনার পর শুধু দেখা অবস্থা বলে মন্তব্য করলো।
হয়তো এ ধরনের কিছু শুনবে বলে মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েছিল, যে কারণে বিস্মিত হয়নি। কিন্তু আমার জন্য প্রকৃত বিস্ময়টা অপেক্ষা করছিল অফিসটির সীমানার বাইরে। আমি কম্পাউন্ডার বাইরে আসার সাথে সাথে বিনীত স্বরের সালাম শুনে ফিরতে হলো, সঙ্গীসহ লোকটা। আমাকে তাকাতে দেখে মধুর করে হাসলো, আপনার সাথে কিছু কথা ছিল। আমার সাথে কথা! আমি কৌতৃহলী হলাম, বলন।কোথাও বসে বললে হয় না লোকটা আশপাশে তাকালো, খানিকটা দূরের রেস্টুরেন্টটা আবিষ্কার করে ফেলেছে ততক্ষণে, চলুন ঐখানটাতে বসি, ‘বেশ চলুন।’
আপনি কি আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন জানতে চাইলাম। জ্বী। সংক্ষিপ্ততম উত্তর। কি ব্যাপার বলেন তো, এবার কিন্তু সহজে জবাব পাওয়া গেল না। ধীরে সুস্থে চায়ের কাপে চুমুক দিতে লাগলো, বেশ কেতাবা কায়দায়। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। মিনিট দুয়েক পর মুখ খুললো সে, এখনতো আপনি ইয়ে, মানে এখানকার সাথে আপনার সম্পর্ক নাই।
তবু সালিশে আসলেন কেন?
ঘটনাচক্র বলতে পারেন, এসেছিলাম অন্য কাজে। এসে আপনাদের ব্যাপারটা দেখলাম আর কি। লোকটার দিকে তাকালাম, দৃষ্টিটা সহজ বলে মনে হলো না। ‘কি বলবেন বলেছিলেন যেন’, ব্যসত্মতা বোঝাতে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালাম। এটা এখন আপনার ডিউটিতে পড়ে না, আপনি অফ যান। সরাসরি নির্দেশের মত শোনাল তার কথা। লোকটা বলে কি! পেশাগত কারণে প্রথমবার তার ঔদ্ধত্য মেনে নেয়া হয়েছিল। যদিও আমি নিশ্চিত তার ব্যবহারের কারণেই এখনো কয়েকজন মানুষ তাকে ভুলতে পারেনি। সে সময় আমারও দায়িত্বের কারণে ব্যক্তিগতভাবে নেয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু এখন আমি আপনাদের সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। যতটা ঠাণ্ডা রাখা যায় ততটা ঠাণ্ডা গলায় বললাম। সাথে সাথে ডিগবাজি দিল তার সঙ্গী, না না, ওভাবে দেখছেন কেন। ব্যাপারটা ব্যক্তিগত না। মানে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলা হচ্ছে না।
এ ধরনের লোকগুলোর চরিত্র আমার জানা হয়ে গেছে। নরম গলায় কথা বললে মাথায় উঠতে চায়, আর কড়া চোখে তাকালে কেঁচো হয়ে যায়। লোকটা মাথা নীচু করলো, আর লোকটার যে সঙ্গী, মনে হয় তুলনামূলকভাবে কিছুটা ঠাণ্ডা মাথার, সে বিগলিতভাবে হাসতে লাগলো। সত্যি কথা বলতে এটা রুটি রুজির বিষয়তা তাই ও এভাবে বলছে, লোকটার দিকে ইঙ্গিত করলো তার সঙ্গী নইলে ও এতক্ষণ আপনার খুব প্রশংসা করছিল।
মেজাজ খারাপের কিছু আর বাকি থাকলো না, এ বদমাশটা আমার প্রশংসা করা মানে আমি নিজের কাছে অপরাধী। অনেক বেশী বলতে চাওয়ার কারণেও হতে পারে, আমি নির্বাক হয়ে গেলাম। একেবারে নিথর হয়ে তাকিয়ে রইলাম তাদের দিকে।
সঙ্গীকে আর গুরুত্ব দিল না লোকটি, আসল কথা শোনেন, আবার আগের মেজাজ ফিরে পেতে চাইল যেন, ‘এটা আমার সাত নম্বর বিয়া। এই হারামজাদীর আগে অত ঘাঁটাঘাঁটি কেউ করে নাই।”
সাত নম্বর! অন্য সময় হলে হয়তো আকাশ থেকে পড়তাম। কিন্তু ঘটনার পারম্পর্য আমাকে স্থির রাখলো। কি অবলীলায় স্বীকার করলো সাত নাম্বার বিয়া! লোকটাকে নিয়ে কৌতূহল বেড়ে গেল। আগেও লক্ষ্য করেছিলাম, আজও দেখলাম লোকটার কথাবার্তায় তেমন একটা আঞ্চলিকতার টান নেই। প্রায় ক্ষেত্রে পরিষ্কার বাংলা। বিষয়টা স্বাভাবিক নয়, বিশেষত লোকটা যে শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করছে বলে অনুমান করছি, তাদের জন্য নয়। আর এখন সাত নাম্বার বিয়ে করার ঘোষণা দিচ্ছে রাখ ঢাক না করে। ব্যাপারটা ভড়ংও হতে পারে। কিন্তু এর মূল কি, শিকড়টাইবা কোথায়?
প্রকাশিত হল আমার প্রশ্নে। আর তাতেই আমার সামনে প্রথমবারের মত অপ্রস্তুত হল লোকটা নার্ভাস হেসে সঙ্গীর সাথে দৃষ্টিবিনিময় করলো, আর মিনিটখানেক পর স্বাভাবিক হয়ে সঙ্গীর দিকে তাকিয়ে বেপরোয়া হল, একে গুরুত্ব দেয়ার কোন কারণ নেই।
অ; আমি উঠে দাঁড়ালাম, ‘গুরুত্ব না দিলে বলার দরকার কি। না না, বসেন, সঙ্গীটি আবার মধুর হাসলো, রুটি রুজির কথা বললাম না! ওখানেই তার রহস্য।
‘মানেটা কি দাঁড়ালো’ অপমানবোধ গিলে আমি আবার বসলাম। আসলে বিয়েটাই এখানে রুটি রুজির একমাত্র ব্যবস্থা; হাসি হাসি ভাবটা ফেলে সিরিয়াস হলো সঙ্গীটি, ‘বউগুলো সব আলাদা আলাদা থাকবে। কেউ কারো কথা জানবে না বরং মাস শেষে সবাই ঠিক করে দেয়া একটা অংক দিবে। আসলে ও বোকা হওয়ায় সমস্যাটা হলো। কই আমারতো কোন সমস্যা নাই; সঙ্গীটি বিতৃষ্ণ চোখে তাকাল লোকটার দিকে।

# অনেক আগে লেখা
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ২:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×