মিলনময় দাস। একজন কবি। সারাদিন নিজের দোকানে তিনি চা-সিগারেট বিক্রি করেন। আর অবসর সময়ে লিখেন কবিতা। অসাধারন প্রতিভাধর এই কবি মুন্সীগঞ্জ সদরে বসবাস করেন। একজন সাধারন চা বিক্রেতা হলেও তার লেখনী অত্যন্ত ভাবগম্ভীর্যপূর্ন ও মানসম্মত।
তিনি ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী এগারো দফা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতার আন্দোলন তাকে প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে তৈরি করে। অন্যায়ের প্রতিবাদ হিসেবে তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন।
কবি মিলনময় দাসের বাবা ছিলেন একজন কীর্তন সঙ্গীত শিল্পী। তিনি মহাভারত রামায়নসহ বিভিন্ন পুথি মুখস্থ বলতে পারতেন। বাবার ব্যক্তিত্ব তাকে প্রভাবিত করে। তিনি পরিবারের অভাব অনটনের মধ্যেই বড় হন। আর এ কারনে তার বেশিরভাগ কবিতায় অভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে। জীবনটা অভাব অনটনের মধ্য কাটলেও কলম তার হাত থেকে ছুটে যায়নি। প্রতিনিয়ত লিখে চলেছেন। চা বিক্রি করে কোটিপতি হওয়া কিংবা চা বিক্রেতা থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার সফল মানুষের জীবনী আমরা জানি। যদিও মিলন দাস সফল হননি। তবুও তিনি আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।
১৯৭৩ সালে সৃজনী লেখক শিল্প গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন। বেশ কয়েকটি গ্রন্থ ও অনেক কবিতা লিখেছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে তিনি সেগুলো প্রকাশ করতে পারেন নি কখনো। তিনি কিছু কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। তার কবিতাগুলো ব্যতিক্রম কিছু প্রকাশ করে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কবিতার প্রভাব আছে তার কবিতায়। তিনি একজন জীবন্ত অনুপ্রেরণামূলক গল্প।
মুন্সীগঞ্জে সাহিত্য চর্চা সম্পর্কে তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জে এখন ভালো সাহিত্য চর্চা হচ্ছে। সাহিত্য চর্চার মাধ্যমেই তরুন প্রজন্ম সঠিক পথে এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, লেখালেখির চর্চাটা এককভাবে হয় না। এজন্য কোন সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা উচিত। প্রত্যেকের মধ্যেই সৃজনী ক্ষমতা আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা চর্চার মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।