দুর্লভ ছবিঃ সকল আন্দোলন সংগ্রামে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ একাত্ম হয়েও জামায়াত আজ দেশ বিরোধী
স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রামে জামায়াত ও আওয়ামী লীগের দাবী এক হয়েও জামায়াত আজ দেশ বিরোধী। অথচ ষাট হতে সত্তরের দশকের প্রায় প্রতিটি আন্দোলনে জামায়াত আওয়ামী লীগের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছে। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে অবিসম্বাদী জয়ের পর যখন পাকিস্থানী শাসক গোষ্ঠি যখন টালবাহানায় লিপ্ত ছিল, তখন বারংবার জামায়াতের পক্ষ থেকে বিজয়ী শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পনের জোর দাবী জানানো হয়েছে। কেননা সকলেই জানতেন এর অন্যথা হলে দেশ অবশ্যম্ভাবী বিভক্তির দিকে এগিয়ে যাবে, যা আওয়ামী লীগ নিজেও চাইত না।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পুর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে বিজয়ী দল আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে না দেয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এমন এক অবস্থায় ১৯৭১ সালে ৭মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার মাঝে শেখ মুজিব এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন-
'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।'
ওই ভাষণে শেখ মুজিব যে চারটি দাবী জানান সেগুলো হলো-
১.সামরিক আইন মার্শাল 'ল' তুলে নিতে হবে।
৩.সমস্ত সেনাবাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে।
৩. যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে।
৪.আর জন প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
কেউ কেউ দাবি করেন মার্চের ভাষণে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু কথা হল, তিনি যদি সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণাই দেবেন তাহলে পাকিস্তানী সরকারের উদ্দেশ্যে দাবী-দাওয়া পেশ করলেন কেন? এমনকি ভাষনের শেষে তিনি 'পাকিস্থান জিন্দাবাদ' বলে ভাষন সমাপ্ত করেন।এসব দাবী পর্যালোচনা করেই অনেকে বলে থাকেন যে, শেখ মুজিব ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। কারণ ১৩ মার্চের পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়ার সাথে ঢাকা বৈঠকে সমঝোতা যদি সফল হত, শেখ মুজিবুর রহমানই হতেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আদৌ কোন সম্ভাবনা ছিল না। শেখ মুজিব স্বাধীনতার চিন্তা করেননি, তা ২৪শে মার্চে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রদত্ত বক্তব্য থেকে প্রমাণ মেলে। সেদিন তিনি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলেন,
"আমার ম্যান্ডেট স্বায়ত্ত্বশাসনের জন্য, স্বাধীনতার জন্য নয়।"
(সাংবাদিক আশরাফের প্রতি কৃতজ্ঞতা)
২৫ মার্চের আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টা ছিল দেশের অখন্ডতার পক্ষে। এ কারনে বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে চেষ্টা করেছেন পাকিস্থানী ম্বেরাচার শাসকদের কাছ থেকে অধিকার টুকু আদায় করতে। এমনকি ২৫ মার্চ রাতেরও গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে তিনি দেশকে বিভক্ত করার পক্ষে ছিলেন না।
''একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত স্বাধীনতার কোনো ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেননি। তাজউদ্দীন আহমদ ওই রাতেই স্বাধীনতার ঘোষণার ছোট্ট একটি খসড়া তৈরি করে টেপরেকর্ডারে ধারণ করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে পড়তে দেন। বঙ্গবন্ধু খসড়াটি পড়ে নিরুত্তর থাকেন এবং এড়িয়ে যান। তাজউদ্দীন আহমদ ঘোষণাটি দিতে অনুরোধ জানালে বঙ্গবন্ধু উত্তর দেন,
''এটা আমার বিরুদ্ধে একটি দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্য পাকিস্তানিরা আমাকে দেশদ্রোহের জন্য বিচার করতে পারবে।''
ইপিআর সিগন্যালসের মাধ্যমে শেখ সাহেব স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন সেটাও বোধহয় অবাস্তব কথা। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরীর কাছে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন বলে যে কথা বলা হয়, তাও সঠিক নয়। ভারত সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার সময় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও অন্য প্রধান নেতাদের জিজ্ঞাসা করেছে যে, স্বাধীনতার ঘোষণার ব্যাপারে শেখ মুজিবুর রহমান কাউকে কিছু বলে গেছেন কিনা। এর মধ্যে জহুর আহমদ চৌধুরীও ছিলেন। ভারত সরকারকে প্রত্যেকেই বলেছেন, কাউকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণার কথা বলে যাননি। জহুর আহমদ চৌধুরী নিজে তাজউদ্দীনকে বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণার ব্যাপারে তাকে কিছুই বলা হয়নি।'' (আমার দেশ এবং প্রিয় ডটকম http://priyo.com/forum/2010/mar/25/37599.html)
কিন্তু এত সবের পরেও আজ সত্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষক, আওয়ামী লীগ স্বাধীসতার সোল এজেন্ট আর দীর্ঘ আন্দোলনে পাশে থেকেও জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী। ভাষা আন্দোলনের ইশতেহার পাঠকারী অধ্যাপক গোলাম আযম দেশদ্রোহী। ছবি নাকি ইতিহাসের কথা বলে। বহু বচর আহে ছাপা হওয়া একটি বইয়ের দুর্লভ কিছু ফটো পেয়ে গেলাম। রীতিমতো চমকে দেবার মতো। দেখা যাক ইতিহাস কি বলে।
স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আগাগোড়া সব কিছুর সাক্ষী। বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর হতে ১৫ আগস্ট মুত্যুর আগ পর্যন্ত অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোন কথা বলেননি। চ্যালেঞ্জ রইল যদি কেউ প্রমাণ দেখাতে পারেন, আমার এই মন্তব্য ডিলিট করে দেব।
View this link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




