১। মুক্তিযোদ্ধাদের অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে আলোচ্য বিষয় হিসেবে পাঠচক্রে অন্তর্ভুক্ত করে শিবির ও জামাত ১৯৮৯ সাল থেকে
২। শিবিরের পাঠচক্র বিষয়টিকে তখন থেকেই মৌলিক আলোচ্য বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করে
৩। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী সমর্থিত ১৫ দল ও বিএনপি সমর্থিত ৭ দল এবং পৃথকভাবে জামাত ১ দফার আন্দোলনে অংশ নিয়ে এরশাদের পতন পরবর্তী নির্বাচনে ১০ টি আসন লাভ করে সংসদে বিরোধীদলের শরীক হিসেবে অবস্থান নেয়।
৪। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে জামাত বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে অসহোযোগ আন্দোলনে অংশ নেয় এবং বিএনপির পতন পরবর্তী নির্বাচনে ২৮টি আসন পায়।
৫। এ সময় থেকেই জামাত-শিবির এর মাস্টার মাইন্ডরা মওদুদী নির্দেশিত তথাকথিত ইসলামী বিপ্লবের সফলতার প্রধান নিয়ামক হিসেবে ছাত্র সমাজকে অগ্রগামী স্পর্শকাতর হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক গুরুত্ব দিয়ে মওদুদী ফাউন্ডেশনের সিংহভাগ বাজেট ছাত্র অর্গানাইজে ব্যায় করা শুরু করে। এ সময় কোটা ব্যবস্থাকে তারা বেকারত্বের মুল কারন ( ? ) হিসেবে চিহ্নিত করে ছাত্রদের মধ্যে মগজ ধোলাইও শুরু করে। কৌশল হিসেবে পরিবেশ বুঝে কখনো কখনো এটাকে বন্ধ ও চালু রাখার পদ্ধতি গ্রহন করে এবং বিষয়টিকে নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে।
৬। ৪ দলীয় জোট ২০০১ সালে বিজয়ী হলে জামাত-শিবিরের তথাকথিত ইসলামী বিপ্লবের চিন্তাধারা সুপার-বুষ্টিং লাভ করে এবং বিএনপি (বিশেষ করে ছাত্রদল) কে প্রকার গিলেই ফেলে। এ সময় ২০০৭ সালের ১৫ দলের মুভমেন্টে ৪ দলীয় জোটের পতন হলে বিএনপি পুরোপুরি জামাত নির্ভর হয়ে পড়ে এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
৭। তথাকথিত ইসলামী বিপ্লবের চুড়ান্ত পর্যায় হিসেবে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দিয়ে এবং সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়ে বিএন-আওয়ামীলীগ উভয় দলকে ক্রমাগত দুর্বল করার পলিসিতে জামাত-শিবির তাদের সাংগঠঠনিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখে। এ সময় বিএনপি হামলা-মামলায়-দলীয় কোন্দলে এবং আওয়ামীলীগ অনুপ্রবেশ-দুর্নীতি-দলীয় কোন্দলে দুর্বল হতে থাকে।
৮। সুযোগ বুঝে জামাত-শিবির কতিপয় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পিছনে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিবির কর্মীদের লিপ্ত করে দিয়ে কোটা আন্দোলনের সুচনা করে। এটা অব্যার্থ অস্ত্র ।
৯। সবকিছু আঁচ করতে পেরে শেখ হাসিনা সরকার ২০১৮ সালে প্রজ্ঞাপন জারী করে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ষড়যন্ত্র ব্যার্থ করে দেয়।
সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে কোটার পক্ষে আদালতে যায় অতিতের কোটাসুবিধা প্রাপ্তরা।
১০। ২০২৪ সালে আদালত সরকারের ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত ঘোষনা করে। ফলে কোটা আবার চালু হয়। সরকার আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং ছাত্রদের ধৈর্য ধারন করার আহব্বান জানায়। আদালত অবমাননার দায় এড়াতে সরকার নতুন প্রজ্ঞাপন দেয়া থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ষড়যন্ত্র সময় দিতে নারাজ। কারনঃ সাধারন শিক্ষার্থীরা মুল ঘটনা জানতে পারলে ভেস্তে যাবে সব ষড়যন্ত্র।
১১। অস্ত্র ও গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা তারেক রহমান, ট্র্যাক্স ও শ্রম আদালতের সাজাপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ডঃ ইউনুস, মামলা-হামলায় কোনঠাসা বিএনপি নেতা-কর্মীরা, সুবিধা বন্চিত আওয়ামী নেতা, সুবিধা বন্চিত বামপন্থীরা,অর্থপাচার ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তরা এবং তথাকথিত ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়ন প্রত্যাশিতদের সর্বশেষ চাওয়া-পাওয়া এক হয়ে যায় অবলীলায়। ব্যাপক অর্থায়নের মাধ্যমে দ্রুত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে থাকে একের পর এক ।
১২। অবশেষে জামাত-শিবিরের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ।
কেঊ লাভবান হলো না। মাঝখান থেকে দেশ পিছিয়ে গেল। জন নিরাপত্তা, মানবতা ভুলুন্ঠিত হলো, দুর্নীতিবাজরা তথাকথিত সমন্বয়কদের মোটা অংকের অর্থায়ন করে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করলো। সর্বপরি একটি প্রজন্মকে অভ্যস্ত করা হলো অনৈতিকতায়, বিবেকহীনতায়, অমানবিকতায়, হিংস্রতায়, মিথ্যাচারে,গুজব রটনায়। যদিও ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে কোন সাধারন শিক্ষার্থী রাস্তায় যায়নি।
১৩। ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত যারা সাধারন শিক্ষার্থী পরিচয়ে হত্যা,লুট,অগ্নিসংযোগ,দখলবাজি,সংখ্যালঘু নির্যাতন চালাচ্ছে তারা শিবির,ছাত্রদল, তথাকথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন(জামাত-শিবিরের প্রশিক্ষিত), বিএনপির একটি গ্রুপ, কিছু বাম সংগঠন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৪৫