তবে প্রফেসর ইউনুসও অতি ঘোড়েল লোক। যদিও ইতিমধ্যে তাঁকে সমালোচনা করার পথ বন্ধ করার প্রচেষ্টা চোখে পড়ছে।
প্রফেসর সাহেবের একটা গল্প শোনাই আপনাদের। অনেকদিন আগে পড়েছিলাম ওঁরই লেখা ‘গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার জীবন’ নামের বইতে।
ইউনুস সাহেবের বয়স তখন বছর বারো। বাবা মায়ের সাথে থাকেন চট্টগ্রামের ২০, বক্সির হাট রোডে। বই পড়তে পছন্দ করেন। কিন্তু সেই ৫ এর দশকে বাংলা বই খুব অপ্রতুল। সেসময় কলকাতা থেকে ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘শুকতারা’ প্রকাশিত হত। ইউনুস সাহেব ভাবছিলেন, কিভাবে এই পত্রিকা ফ্রি পাওয়া যায়।
সেসময় পত্রিকা ফ্রি পাওয়ার একটাই উপায় ছিল। বিভিন্ন পত্রিকা তার পাঠকদের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। আগের সংখ্যার বিজয়ী প্রতিযোগীর নাম ঠিকানা পত্রিকা পরের সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এবং পুরষ্কার হিসাবে পত্রিকা বিশেষ ছয় মাস বা ১ বছরের ফ্রি সাবস্ক্রিপশন প্রদান করা হয়। এইসব আমরা এখনও দেখি। সেই ৫ এর দশকেও সেই সুযোগ ছিল।
এই পর্যন্ত পড়ে আপনি হয়তো ভাবছেন, ইউনুস এমন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন? তাঁতে কি সমস্যা? মেধাবী মানুষ, হতেই পারেন।
কিন্তু বিষয়টা তেমন নয়। ইউনুস সাহেব এক অভিনব পন্থা আবিষ্কার করেছিলেন। আমার ধারণা আজ ৭০ বছরও পরও সেই পন্থা কাজ করবে।
তিনি যেটা করেছিলেন, পূর্ববর্তী সংখ্যায় প্রকাশিত একজন বিজয়ীর নাম বেছে নেন। এবং সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছিলেন, ‘মাননীয় সম্পাদক, আমি অমুক, একজন বিজয়ী প্রতিযোগী। আমার ঠিকানা বদল হয়েছে। এখন থেকে আমার বিনামূল্যে প্রাপ্য সংখ্যা বক্সির হাট রোডের অমুক ঠিকানায় পাঠাবেন।…’
তাঁর এই আইডিয়া অব্যার্থ ছিল। পরের মাস থেকে তিনি ফ্রি পত্রিকা পেতে থাকেন। কিন্তু তিনি ভাবেননি তিনি সত্যিকার বিজয়ীকে বঞ্চিত করেছেন।
অন্য মানুষের বিজয়কে নিজের নামে শিফট করে বেনিফিটেড হওয়ার কার্যকর পদ্ধতি, ইউনুস সাহেব ১২ বছর বয়সেই আবিষ্কার করেছিলেন।
এই ঘোড়েল লোকের সাথে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। এবং তাঁর কর্মকাণ্ডের সমালোচনা বন্ধ করার সামাজিক প্রয়াস লক্ষণীয় ভাবে চোখে পড়ছে। তাঁকে মহামানব বানানোরও। হাসিনাকেও মা মা ডেকে তাঁরে পদতলে চুম্মাচাট্টি দিয়ে তাঁকে স্বৈরাচার বানানো হয়েছিল।
কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ লিখেছিলেন, যাদের স্বভাব দাস হওয়া, তারা শুধু প্রভু বদলাবে, স্বভাব বদলাবে না।
সুতরাং চোখ কান খোলা রাখছি।
©মামুন ভাই
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭