somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" আল কোরআন " মানব জাতির মুক্তির আলোকবর্তিকা । (আল কোরআনের উপদেশাবলী - পর্ব - ২)।

৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - shadow.com.bd

"পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পড়ো ! আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। আর শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না"।( সূরা আলাক,আয়াত - ১-৫) এই আয়াত দিয়েই কোরআন নাজিলের সূচনা

শুরুতেই কোরআন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে পড়তে ও জানতে। কোরআন অজ্ঞতাকে অভিহিত করেছে মহাপাপ রূপে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে। এমনকি বিশ্বাসের স্তরে পৌঁছার জন্যেও মানুষের সহজাত বিচারবুদ্ধির প্রয়োগকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে কোরআন। বৈষয়িক ও আত্মিক জীবনকেও একই সূত্রে গেঁথেছে কোরআন। সুস্পষ্টভাবেই বলেছে, আল্লাহর বিধান অনুসরণ করো। দুনিয়া ও আখেরাতে তুমি সম্মানিত হবে।

আল কোরআন স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত এক কিতাব, যেখানে মানবজাতীর জন্য রয়েছে সংবিধান ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ বানী মানবজাতীর হেদায়েত স্বরুপ এবং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের জীবনে যা কিছু প্রয়োজন তার সব কিছুর দিকনির্দেশনা আল কোরআনে রয়েছে।মানুষের এক জীবনে যা দরকার, তার সবই সাজানো রয়েছে কোরআনের পরতে পরতে। সুস্থ সুন্দর সুখী পরিতৃপ্ত জীবনের জন্যে যা প্রয়োজন, আল কোরআনের পাতায় পাতায় রয়েছে তারই দিক-নির্দেশনা।


ছবি - sangbadchorcha.com

পবিত্র কোরআনে মানব জীবনের সব দিকনির্দেশনার বর্ণনার পাশাপাশি মানবজাতীর প্রতি উপদেশ স্বরুপ বেশ কিছু আয়াত আছে।আসুন আমরা সেগুলো সম্পর্কে জানি -

১।তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিওনা ।

"তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না"। (সুরা বাকারা - আয়াত - ৪২)।

২।সৎকার্য নিজে সম্পাদন করার পর অন্যদের করতে বলো ।

"তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভুলে যাও,অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ৪৪) ।

৩।পৃথিবীতে বিবাদ বিশৃংখলা সৃষ্টি করোনা ।

"যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ।তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস"।(সুরা রাদ, আয়াত - ২৫)।

"আর স্মরণ কর, যখন মূসা তার জাতির জন্য পানি চাইলেন। আমরা বললাম, ‘আপনার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত করুন’। ফলে তা হতে বারোটি প্রস্রবণ প্রবাহিত হলো। প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ পানি গ্রহণের স্থান জেনে নিলো। (বললাম), ‘আল্লাহ্‌র দেয়া জীবিকা হতে তোমরা খাও, পান কর এবং যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ৬০)।

৪।কারো মসজিদে যাওয়ার পথে বাঁধা সৃষ্টি করোনা।

"আর তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহ্‌র মসজিদগুলোতে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাঁধা দেয় এবং এগুলো বিরাণ করার চেষ্টা করে? অথচ ভীত-সন্ত্রস্ত না হয়ে তাদের জন্য সেগুলোতে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও আখেরাতে রয়েছে মহাশাস্তি "।(সুরা বাকারা - আয়াত - ১১৪) ।

৫।কারো অন্ধ অনুসরন করোনা।

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর’, তারা বলে, ‘না, বরং আমরা অনুসরণ করবো তার, যার উপর আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে পেয়েছি’। যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছু বুঝতো না এবং তারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না, তবুও কি"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ১৭০) ।


ছবি - samakal.com

আমরা কেন মেনে চলব ,বিশ্বাস করব কোরআন আল্লাহর কালাম ? কেন বিশ্বাস করব কোরআন মানুষের রচনা নয় ? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন অনুসরণ করলে আমি ভালো থাকব ? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন আমাকে পার্থিব জীবনেও সুখী ও প্রাচুর্যবান করতে পারে ?

আল কোরআনকে আমরা বিশ্বাস করবো,কারন - কোরআন সব সন্দেহের ঊর্ধ্বে।আর তাইতো আল্লাহ পাক আল কোরআনে ইরশাদ করেন, "এই কিতাব বিশ্ব পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই "।(সুরা সাজদা, আয়াত - ২)।

অবশ্যই বিশ্বাস করার আগে প্রশ্ন করতে হবে। সবদিক থেকে খতিয়ে দেখতে হবে। জানতে হবে। বিশ্লেষণ করতে হবে। ভাবতে হবে। বিষয়ের গভীরে ডুবে যেতে হবে। বিচার করতে হবে মুক্তমন নিয়ে, বস্তুনিষ্ঠভাবে। তাহলেই আপনি-আমি সত্যে উপনীত হতে পারবো।


আল্লাহ পাক আমাদেরকে সত্যে উপনীত হবার,সত্য বুঝার এবং আল কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার তওফিক দান করুন ।

চলবে -

===============================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

আল কোরআনের উপদেশাবলী - পর্ব - ১ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:০৬
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×