somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহেশখালী ভ্রমণ :)

০১ লা মার্চ, ২০১৯ ভোর ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ঘুরে এলাম #মহেশখালী :) । এটাকে মিনি সেন্টমার্টিন বললেও বেশ মানাবে B-)


সাগর পথের স্পিডবোর্ট বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা মনে গেঁথে থাকবে অনেক দিন। বিশেষত দু'পাশের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও জেলেদের ট্রলার এই অঞ্চলকে করেছে অপূর্ব।



এটি কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এই অঞ্চলটি কক্সবাজারের একটি বাটি অঞ্চল দ্বীপ রুপেও পরিবেশিত এবং এটি বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়িয়া দ্বীপ। এটি মহেশখালী দ্বীপ নামেও পরিচিত।


্দ্বীপে ঢুকামাত্র আপনাকে স্বাগত জানাবে এমন লম্বা জেটি। মন খারাপ বা ভালো যেটাই থাকুক, এখানে ০৫মিনিট বসে থাকলে দুই পাশের সুন্দরী গাছের বাতাস আপনার মনকে ফুরফুরা করার জন্য যথেষ্ট B:-/
ঘুরেছি - #মৈনাক_পাহাড়, #আদিনাথ_মন্দির, #স্বর্ণ_মন্দির ও #বৌদ্ধ_বিহার। পাহাড়ী দ্বীপ হবার কারণে এটা একটু অন্যরকম সৌন্দর্যমন্ডিত। সমুদ্রের মধ্যে মৈনাক পর্বতের অবস্থান বলে রামায়নে উল্লেখ আছে।
এছাড়াও আছে লবণ উৎপাদনের মাঠ ও পানের বাগান।


মৈনাক পাহাড় ও আদিনাথ মন্দির
আদিনাথ মন্দির বাংলাদেশের বিখ্যাত অন্যতম হিন্দু মন্দির। এটি বাংলাদেশের উপকূলীয় শহর কক্সবাজার থেকে ১২ কিমি দূরের বঙ্গোপসাগরের মধ্যে দ্বীপ মহেশখালীতে অবস্থিত। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রামে এই মন্দিরটি অবস্থিত, যা সমুদ্র-সমতল থেকে প্রায় ৮৫.৩ মিটার উঁচুতে। এই মন্দিরটি মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত, যা সমতল থেকে ৬৯টি সিঁড়ি ভেঙে ঊঠতে হয়।


লোককাহিনী অনুসারে মহেশখালীর মৈনাক পাহাড়ে শিবের আবির্ভাব ঘটে ত্রেতাযুগে। রাম-রাবনের যুদ্ধের সময় শিবের আশির্বাদ লাভের জন্য রাক্ষসরাজ রাবন কৈলাশে যান শিবকে আনার জন্য। দেবতাদের অনুরোধে শিব রাবনকে শর্ত দেন যে, বিরতিহীনভাবে নিয়ে যেতে পারলে শিব লংকায় যেতে রাজি আছেন। শর্ত মেনে শিবকে মাথায় নিয়ে রাবন যাত্রা শুরু করে। কিন্তু প্রস্রাবের জন্য মৈনাক পাহাড়ে রাবনের যাত্রাবিরতি ঘটে। এতে শর্তভঙ্গ হওয়ায় শিব, মৈনাক পাহাড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। লোককাহিনী মতে, একদিন স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে এক নাগা সন্ন্যাসীর সহায়তায় নেপাল থেকে পাথরের অষ্টভূজা দুর্গামূর্তি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সমুদ্রের মধ্যে মৈনাক পর্বতের অবস্থান বলে রামায়নে উল্লেখ আছে। মহেশখালী দ্বীপ এবং সমুদ্রের মাঝখানে আদিনাথ পাহাড়টির নাম মৈনাক পাহাড়। আদিনাথ মন্দিরটি সমুদ্রস্তর থেকে ২৮৮ ফুট উঁচু মৈনাক পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত।


নাথ সম্প্রদায়ের ইতিহাস থেকে জানা যায় হিন্দু-মুসলমানদের সেতুবন্ধন হিসেবে মন্দিরটি ইতিহাসের স্বাক্ষী। উপমহাদেশের আদি তীর্থস্থান হিসেবে প্রত্যেক হিন্দু এখানে পূজা করে। তাই মন্দিরের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মন্দির কমপ্লেক্সে আছে একটি মসজিদ ও একটি রাখাইন বৌদ্ধ বিহার। তাই অনেকে মন্দিরটিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক মনে করেন। প্রতিবছর শিব চতুর্দশী উপলক্ষে হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এ মন্দিরে। এ উপলক্ষে ১০/১৫ দিন মেলা বসে। প্রাকৃতিক পরিবেশে মন্দিরটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। মন্দিরের তিনদিকেই সমুদ্র।
স্বর্ণ মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারঃ


এই দ্বীপে আছে রাখাইনদের স্বর্ন মন্দির। নাম স্বর্ণ মন্দির হলেও ওখানে কোনো স্বর্ণের মূর্তি নেই। তবে সোনালী রঙ এর বড় ০২টি মূর্তি হয়েছে। এছাড়াও আছে ছোটো অনেকগুলো মূর্তি ও আশ্রম। এখানে ঢুকতে হলে অবধ্যই দরজার পাশেই জুতা খুলে যেতে হবে। বোঝা-ই গেলো এটি অনেক পবিত্র স্থান তাদের কাছে।


আমরা গিয়েছি কক্সবাজারের ৬নং ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত ওয়াটার বাসে করে। প্রায় ৪০ মিনিট যাবার পর পাই জেটি। এটি যে কতটা সুন্দর সে বিষয়ে কোনো স্বন্দেহ নাই। দুই পাশে অনেক সুন্দরী গাছ, আর মাঝখানে ঘাট। এরপর যাই আদিনাথ মন্দির। মাঝে মিষ্টি ডাব খেতে ভুলিনি :D । এরপর আদিনাথ মন্দির হয়ে যাই মহেশখালী বাজার। তারপর বৌদ্ধ মন্দির ঘুরে আবার স্পিডবোটের জেটি হয়ে ফিরি কক্সবাজারে।


আর হ্যা এখানে সমুদ্র নিকটবর্তি হবার জন্য জেটি খুব লম্বা। চলে গিয়েছে সমুদ্রের অনেকটা ভিতরে। মনোরম জেটি দেখতে ভুলবেন না যেন :) । আর ভুলে গেলেই বা কি ! আসা-যাওয়ার সময় দুই বার এইজেটির দেখা পাবেনই ;)
সুযোগ পেলে পরের বার আবারো যেতে মিস হবেনা ইনশা-আল্লাহ :)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১৯ ভোর ৫:০২
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×