somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পতিতারা যখন মানব পাচার মামলার আসামী!

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশী ভাষায় পতিতাদের ডাকা হয় ২৯০ বলে। পতিতাবৃত্তি বিরুদ্ধে যে আইন, তা ২৯০ ধারায় হওয়ার কারণে পুলিশ ২৯০ বলে পতিতাদের ডাকে। কিন্তু, বাস্তবতা হলো, বর্তমানে কোন পতিতাকে গ্রেফতার করা হলে, ২৯০ ধারায় চালান না দিয়ে মানব পাচার আইনে চালান দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য, ২৯০ ধারায় চালান দিলে জরিমানা দিয়ে পরের দিনই কোর্ট থেকে ছাড়া পায়। কিন্তু, মানব পাচার ধারায় চালান দিলে তারা দ্রুত ছাড়া পায়না।
পতিতাবৃত্তি নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পেশা৷ কিন্তু কোনো যুগে, কোনো দেশেই মানুষ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেনি, আজও করে না৷ তবে বিশ্বের বহু দেশেই পতিতাবৃত্তি বৈধ এবং সেখানে যৌনকর্মীরা নিয়মিত আয়করও দেন৷
ইউরোপের সব দেশেই পতিতাবৃত্তি আইনত বৈধ৷ তবে আইন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশভেদে একটু হলেও অন্যরকম৷ যেমন স্পেন এবং পর্তুগালেও দেহব্যবসা বৈধ৷ কিন্তু স্পেনে কাউকে জোর করে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনকর্মী বানানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷
কিন্তু, উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে কোন মেয়ে নিজের ইচ্ছায় এই পেশা গ্রহণ করার উদাহরণ খুবই কম। সাধারণত: প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, কোন মানব পাচারকারীর পাল্লায় পরে, নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে বাধ্য হয়ে একটি মেয়েকে এই পেশা গ্রহণ করতে হয়। পেশাটি অবৈধ জেনেও নানা কারণে এই পেশায় আসতে বাধ্য হচ্ছে মেয়েরা।
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গ্রাম থেকে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে অথবা বিয়ে বা প্রেমের কথা বলে মানব পাচারকারীরা তাদের বিভিন্ন পতিতা পল্লীতে বিক্রি করে দেয়। এক্ষেত্রে সন্দেহ নেই, মানব পাচারকারীরা সমাজের একটি ঘৃণ্য কীট।
হঠাৎ পুলিশের পতিতাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কারণে লাভ হচ্ছে মানব পাচারকারীদের। কেননা, মানব পাচারকারীদের উকিলরা বিচারকদের বুঝাতে সক্ষম হচ্ছে এখন পুলিশ দেহ ব্যবসা করা সকলকে এই ধারায় মামলা দিচ্ছে। ফলে সহজেই জাবিন পাচ্ছে মানব পাচারকারীরা। অন্যদিকে নানা প্রতারণার স্বীকার হয়ে যারা বাধ্য হয়েছে এই ব্যবসায় নামতে, তারা এই ধারায় মামলার কারণে সহজে মুক্তি পাচ্ছেনা। কেননা, তাদের জন্য উকিল ধরার কেউ নেই। যদিওবা ধরে, সেক্ষেত্রে তারা সেই মানব পাচারকারী চক্র!
পুলিশকে সাধারণতঃ দেখা যায়, যারা টাকা দিচ্ছে, তাদের দিচ্ছে ২৯০ ধারায় মামলা। অন্যদিকে যারা টাকা দিতে পারছেনা, তাদের দিচ্ছে মানব পাচারকারী ধারায় মামলা! এতে দেখা যায়, প্রকৃত মানব পাচারকারীরা রক্ষা পাচ্ছে পুলিশকে টাকা দিয়ে। অন্যদিকে যারা পেটের দায়ে অথবা নানা কারণে বাধ্য হয়েছে এই পেশায় আসতে তাদের দিচ্ছে মানব পাচারকারী ধারায় মামলা।
এই বিষয়ে সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, আমি একটি পতিতাকে সহ সিএনজিতে করে আসছিলাম, এই সময় এক চেকপোষ্টে পুলিশ দাড়া করায়। পুলিশ আগেই সেই মেয়েকে চিনত। তাই, আমাদের ধরে মানব পাচার ধারায় মামলা দিবে বলে জানায়। পরবর্তীতে আমি ১৮ হাজার টাকা দিলে, আমাকে ও মেয়েটিকে ২৯০ ধারায় চালান দেয়।আমি যখন জানতে চাইলাম, টাকা দেওয়ার পরও কেন মামলা দেওয়া হয়েছে, তখন আমাকে জানান হয়, ২৯০ ধারায় মামলা দিয়েছি। জরিমানা দিয়ে কালই মুক্তি পাবি। টাকা না দিলে তো মানব পাচার ধারায় মামলা দিতাম। মামলা দেওয়ার প্রয়োজন কি, জানতে চাইলে জানান হয়, মামলা না দিলে টাকা যে দিয়েছিস, তার ক্লেইম করলে আমি ফেসে যাব। অন্যদিকে মামলা দিয়ে দিলে, তুই যতোই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিস না কেন, কোন লাভ হবেনা। আমি যেহেতু মামলা দিয়েছি, আমার উপরের কর্মকর্তারা কখনও বিশ্বাস করবে না, আমি ঘুষ নিয়েছি!
তাই মানব পাচার কারী ধারায় মামলায় লাভবান শুধু প্রকৃত মানব পাচারকারী নয়, সেই সাথে লাভবান হচ্ছে পুলিশের কতিপয় দূর্ণিতিগ্রস্ত কর্মকর্তারাও।
এই বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রফেসর নজরুল ইসলাম তামিজী জানান, পুলিশের পতিতাদের মানব পাচারকারী সাজান, মানবাধীকারের চরম লঙ্ঘন। এই জাতীয় কর্মকান্ডের কারণে, প্রকৃত মানব পাচারকারীরা সহজে জাবিন পাচ্ছে। পুলিশের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের উচিৎ এখনই এই বিষয়ে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করা।
সূত্র: পতিতারা যখন মানব পাচার মামলার আসামী!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×