somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ও বাঙ্গালীর ইতিহাস (আদিম যুগের বই রূপে)

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রাচীন ইতিহাস
আগে এদেশের সভ্যতাকে অনেকেই অর্বাচিন বলে মনে করলেও বঙ্গদেশে চার হাজারেরো বেশি প্রাচীন তাম্রাশ্ম যুগের সভ্যতার নির্দশন পাওয়া গেছে যেখানে দ্রাবিড়, তিব্বতী-বর্মী ও অস্ট্রো-এশীয় নরসম্প্রদায়ের বাস ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বঙ্গ বা বাংলা শব্দটির সঠিক বুৎপত্তি জানা নেই তবে অনেকে মনে করেন এই নামটি এসে থাকতে পারে দ্রাবিড় ভাষী বং নামক একটি গোষ্ঠী থেকে যারা এই অঞ্চলে আনুমানিক ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বসবাস করত। ডঃ অতুল সুরের মতে "বয়াংসি" অর্থাৎ পক্ষী এদের টোটেম ছিল। আর্যদের আগমনের পর বাংলা ও বিহার অঞ্চল জুড়ে মগধ রাজ্য সংগঠিত হয় খ্রীশষ্টপূর্ব সপ্তম শতকে। বুদ্ধের সময় মগধ ছিল ভারত উপমহাদেশের চারটি মহাশক্তিশালী রজত্বের অন্যতম ও ষোড়শ মহাজনপদের একটি। বংশের চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বের সময় মগধের বিস্তার হয় দক্ষিণ এশিয়ার এক বিশাল অঞ্চলে। খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে সম্রাট অশোকের সময় আফগানিস্তান ও পারস্যের কিছু অংশও মগধের অধিকারভুক্ত ছিল। বৈদেশিক রচনায় বাংলার প্রথম উল্লেখ দেখা যায় গ্রিকদের লেখায় ১০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি। তাতে বর্ণিত আছে গাঙ্গেয় সমতলভুমিতে বাসকারী গঙ্গাঋদ্ধি নামে জাতির শৌর্যবীর্যের কথা যা শুনে মহাবীর আলেক্সান্ডার তাঁর বিশ্ববিজয় অসম্পূর্ণ রেখে বিপাশার পশ্চিম তীর থেকেই প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। গঙ্গারিডি শব্দটি হয়ত গ্রিক Gangahrd (গঙ্গাহৃৎ) থেকে এসে থাকবে— গঙ্গা-হৃৎ অর্থাৎ গঙ্গা হৃদয়ে যে ভুমির। খ্রীষ্টীয় তৃতীয় শতকে মগধে গুপ্ত রাজবংশের পত্তন হয়।

বাঙালি জাতি হল বঙ্গদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী মানব সম্প্রদায় যাদের ইতিহাস অন্ততঃ চার হাজার বছর পুরোনো। এদের মাতৃভাষা বাংলা। এই নৃগোষ্ঠীর সর্বাধিক ঘনত্ব দেখা যায় অধুনা বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। তবে এছাড়াও অনেক বাঙালি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভারতের আরো নানা রাজ্যে, যেমনঃ ত্রিপুরা, আসাম, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উড়িষ্যা, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, দিল্লী, কর্ণাটক এবং ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্তের রাজ্যগুলিতে (অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড)। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য, জাপান, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি সহ সারাবিশ্বে অনেক প্রবাসী বাঙালি আছেন।

বাঙালিরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে খুবই মূল্যবান ভূমিকা পালন করে। বাঙ্গালি মুসলমানরা সর্বপ্রথম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সচূনা করে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদৌল্লার পরাজয়ের ফলে শাসন ক্ষমতা যে এদেশীয়দের কাছ থেকে বিদেশিদের হাতে চলে গিয়েছিল, এটা বুঝতে এখানকার জনগণের বেশ সময় লেগেছিল। ১৭৬০ খৃস্টাব্দে চট্টগ্রামের এবং ১৭৬৫ খৃস্টাব্দে বাংলার দেওয়ানি লাভের সাথে শাসন ক্ষমতাও তারা কুক্ষিগত করতে অগ্রসর হয়। পলাশীর যুদ্ধের পর এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তন জনমনে বিশেষ রেখাপাত করেনি।

দেরিতে হলেও এদেশীয়রা ইংরেজদের অভিসন্ধি যখন বুঝতে পারলো, তখনই তারা রাজস্ব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ইংরেজদের দেওয়ানি রাজস্ব দিতে প্রথম অস্বীকৃতি জানায় পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা জনগোষ্ঠী। ১৭৭২ সাল থেকে ১৭৯৮ সাল পর্যন্ত তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে। অবশেষে ইংরেজরা তাদের সেনাবাহিনী দিয়ে প্রতিরোধ করে। তারপর দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে চেয়ার বিদ্রোহ হয় ১৭৯৯ সালে, তাও সেনাবাহিনীর সাহায্যে দমন করা হয়।

মুসলিম জনগোষ্ঠীর ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের উজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা হয় ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ১৭৬০-১৮০০। সময়মত খাজনা দিতে না পারায় জমি থেকে উৎখাতকৃত কৃষকেরা তাদের সাথে যোগ দিয়ে সন্ন্যাসী বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহের রুপদান করেছিলেন। ইংরেজ কর্তৃপক্ষ ফকির সম্প্রদায়কে ডাকাত আখ্যায়িত করে তাদের সংগ্রামকে দমিয়ে দেয়। এই আন্দোলন প্রশমণ হওয়ার পূর্বেই সৈয়দ আহমদের নেতৃত্বে উত্তর পশ্চিম ভারতে দুর্নিবার ধর্মভিত্তিক ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু হলে ইংরেজদের বেকাদায় পড়তে হয়। তাই ইংরেজরা কৌশল অবলম্বন করে মুসলমানদের সাথে শিখদের সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দেয়। এতে করে এই আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ওয়াহাবি আন্দোলনের পরপরই আরম্ভ হয় তিতুমীরের নেতৃত্বে মুসলিম সাধারণ সমাজ বিশেষ করে রায়তের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ১৮৩০-৩২। মক্কায় তিতুমীর হজ্ব করতে গেলে সেখানে তিনি সৈয়দ আহমদের সংস্পর্শে আসেন। উত্তর চব্বিশ পরগনায় অবস্থিত নারকেল বেড়িয়ায় তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা নামে একটি দেশীয় দুর্গ নির্মাণ করেই ইংরেজদের আক্রমণ প্রতিরোধ করেছিলো। শেষ পর্যন্ত তিতুমীর নিহত হলে তাদের দলের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। প্রায় একই সময়ে আরম্ভ হয়েছিল দক্ষিণ-মধ্য বঙ্গে ফরায়েজি আন্দোলন। এই আন্দোলনও ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের রূপ পরিগ্রহ করেছিলো। হাজী শরিয়ত উল্লাহ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্র দুদু মিঞা পরবর্তীতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৭৯৩ সালে কর্নওয়ালিস প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল ছিলো চাষিদের নিকট ভয়ংকর। জমিদারদের অন্যায় কর আদায়ের ব্যাপারে জমিদারদের পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিলো। বাংলার জমিদারদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু আর চাষি বা রায়তদারের অধিকাংশই ছিল মুসলমান, যে কারণে সাম্প্রদায়িকতার মনোভাব দেখা দেয়। ইংরেজ দ্বারা সৃষ্ট চিরস্থায়ী বন্দোবস্তই এই বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার বীজ রোপণ করেছিল তা অস্বীকার করা যায় না।

ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে সর্বশেষে এবং সর্বাপেক্ষা রক্তক্ষয়ী প্রয়াস ছিল সিপাহি বিদ্রোহ ১৮৫৭। উত্তর ভারতের প্রায় সমস্ত বড় বড় শহরে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। বিদ্রোহের লক্ষ্য ছিল শ্রেতাঙ্গরা। সিপাহি বিদ্রোহ অনেকটা আকস্মিক ছিল, ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠীর এই বিদ্রোহে অংশ গ্রহণের সুযোগ ছিল না। এই সীমাবদ্ধতা যদি না থাকতো, তবে নিঃসন্দেহে এর ফলাফল অন্যরূপ হতো।

সিপাহি বিদ্রোহের ১৮ বছর পর বাংলার মুসলিম সমাজের জাগরণের ইতিহাসে যে সকল কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছিলো, তন্মধ্যে অন্যতম ছিলেন- মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী। ১৮৭৫ সালে চন্দনাইশ সাবেক পটিয়া থানার আডালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯৩ সালে তিনি হুগলি, মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাস করেন। ১৮৯৮ সালে তিনি বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কয়েকটি সংগঠন মুসলিম সমাজে এক পরিবর্তনের সূচনা করে। এই সংগঠন সমূহ ছিল মো েম কনফারেন্স, ইসলাম মিশন, মো েম শিক্ষা সমিতি। ১৯০২ সালে কিংবা এর নিকটবর্তী সময় বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী এই সংগঠন সমূহের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। কংগ্রেসের আহবানে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে মুসলিম জাতীয়তাবাদী শক্তি এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। মৌলানা জামাল উদ্দিন আফগানী প্রচারিত প্যান ইসলামিক আন্দোলন প্রগতিশীল মুসলিম সমাজে জাতীয় চেতনার সৃষ্টি করে। এই চেতনাকে ভিত্তি করেই মুসলিম জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সামগ্রিক অর্থে বাঙালি জাতীয়তাবোধের দৃঢ় ভিত্তি রচনা হয় মুসলিম সমাজে তখন থেকে।

সত্য বার্তা পত্রিকা লিখে ছিলোণ্ড কর্মবীর মাওলানা সাহেব ১৯০৬ সালের বঙ্গভঙ্গ রহিত আন্দোলনে যোগ দিয়া উক্ত সাপ্তাহিক ছোলতানে আন্দোলনের বহু প্রবন্ধ ও ব্যক্তিগত মন্তব্য প্রকাশ করেন। সরকার প্রবর্তিত ভার্নাকুলার প্রেস আইনের কারণে নির্ভীক কোন রচনা প্রকাশ করা যেত না। এতদসত্ত্বেও জনমত সংগঠনে ‘ছোলতান’ পত্রিকার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। উপমহাদেশে মুসলিম সমাজ তুরস্কে খলিফার পক্ষ নিয়ে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনায় মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ছিলেন প্রধান সংগঠকদের মধ্যে অন্যতম। ১৯২০ সালের প্রথম দিকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক খিলাফত কমিটি গঠিত হয়। সভাপতি ছিলেন-মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী। চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন শেখ-এ-চাট্‌গাম কাজেম আলী মাস্টার। ১৯২০ সালের ৩ মার্চ ঢাকার আহসান মঞ্জিলের খেলাফত কনফারেন্সে মৌলানা ইসলামাবাদী বলেছিলেন পাশ্চাত্যের দেশসমূহের ষড়যন্ত্রের ফলে তুরস্কের স্বাধীনতা লোপ পেলে এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহের স্বাধীনতাও বিপন্ন হয়ে পড়বে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামও অর্থহীন হয়ে পড়বে। এ বছরেই তিনি চট্টগ্রামের জে. এম. সেন হলের খিলাফত জনসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন।

মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী মনে করতেন খিলাফত ও অসহযোগ উভয়েই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। একটিকে ছাড়া অন্যটি দিয়ে লক্ষ অর্জন সম্ভব হবে না। আর আল ইসলাম পত্রিকায় একটি প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন- “খেলাফত লইয়া আজ এছলাম জগৎ যুদ্ধ ও বিচলিত, কিন্তু প্রতিকারের উপায় একমাত্র অসহযোগিতা। এই অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্যে দুইটি খেলাফত সমস্যার সমাধান, তুরস্কের সোলতান-এর হৃতরাজ্য সমূহের পুনরুদ্ধার। এছলাম জগতের খলিফার পদমর্যাদা রক্ষা করা ভারতে স্বরাজ লাভ”। আল এছলাম পত্রিকায় খিলাফত শীর্ষক আর এক প্রবন্ধে মুসলিম সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছিলেন “এছলাম রক্ষা করিতে হইলে-মোছলমান নামে অভিহিত হইতে হইলে, শেষ প্রেরিত মহাপুরুষ হযরত মোহাম্মদের উম্মতের মধ্যে গণ্য হইয়া থাকিতে হইলে, খলিফাকে রক্ষা করা, খলিফার রাজ্য, তাহার ক্ষমতা ও পদমর্যাদা রক্ষা করা প্রত্যেক মোছলমানের ফরজ।” খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল মুসলিম আন্দোলনকারীরা হিন্দু আন্দোলনকারীদের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা করা। প্রকৃতপক্ষে উভয় সম্প্রদায়ের লক্ষ্য ছিল অভিন্ন। ড. অমলেশ ত্রিপাটি এ বিষয়ের উপর বলেছিলেন-জামাল উদ্দীন আফগানি ইসলাম ও ইহুদীদের মৈত্রীর উপর জোর দিয়েছিলেন, তেমনি মৌলানা আজাদ, মৌলানা মোহাম্মদ আলী, শওকত আলী, মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী হিন্দু মুসলিম মৈত্রীর উপর। ত্রিপাটি আরও লিখেছিলেন, মৌলানা মুহাম্মদ আলীরা মনে করতেন, ভারত স্বাধীন হলে তুরস্কের স্বাধীনতা আনতে সাহায্য করবে।

স্বাধীনতা সংগ্রামকে মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ধর্মীয় কর্তব্য বলে মনে করতেন “কুরআন স্বাধীনতাকে কত উচ্চে স্থান দিয়েছেন এবং কাপুরুষতা ও পরাধীনতাকে কিরূপ ঘৃণিত পদার্থ ও অভিশপ্ত বস্তু রূপে ব্যাখ্যা করিয়াছে, তাহা সুষ্ঠুভাবে চিন্তা করিয়া দেখিলে রাজনৈতিক জগতেও স্বাধীনতার ইতিহাসে ইহা এক অমূল্য সম্পত্তি বলিয়া নির্দিষ্ট হইবে।” মৌলানা ইসলামাবাদী “পরাধীনতাকে আল্লাহর অভিসম্পাত বলে মনে করেন”। তিনি লিখেছে যে, “স্বাধীনতা আল্লাহর দান ও পরাধীনতাকে আল্লাহর কঠিন আজাব ও গজব বলিয়া কুরআন পুনঃ পুনঃ ঘোষণা করিয়াছেন। সেই অভিশাপ হইতে উদ্ধার চাওয়ার চেষ্টা করা কি অনিবার্য কর্তব্য নহে? এই কর্তব্য পালনে শৈথিল্য করিলে যে তজ্জন্য শুধু পরকালে নহে, ইহকালেও আল্লাহর গজবে পড়িতে হয়”।

মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীরা ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে মুসলিম জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবোধের দৃঢ় ভিত্তি রচনা করেছিলেন। মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ৭৫ বছর বয়সে ২৪ অক্টোবর ১৯৫০ সালে ইন্তেকাল করেন।

ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত করেন কিছু শিক্ষিত বাঙালি বুদ্ধিজীবী, যাঁদের পুরোধা ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস, সত্যেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় ইত্যাদি নরমপন্থীরা, এবং পরবর্তীতে বিপ্লবাত্মক ভূমিকায় ঋষি অরবিন্দ ঘোষ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসু, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, সূর্য সেন প্রমুখ বীর বিপ্লবীবর্গ।(সংগ্রহীত)
বাংলা ও বাঙ্গালীর ইতিহাস বই গুলি ডাউনলোড করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×