বি:দ্র: এডিটেড
আজকে বাইরের তাপমাত্রা মাইনাস ৩৫। এ ঠান্ডায় মেজাজ ঠান্ডার পরিবর্তে গরম হয়ে যাচ্ছে খবরটা দেখে। বেশ অনেকদিন থেকেই নিউজটা ফলো করি আর নিজের মনে গালি দেই। কাকে???
খুব সাধারন ঘটনাকে আমরা অসাধারন করে তুলেছি আমাদের স্বভাবসুলভ কুটিলতায়। জাপানীজ নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশী ইমরান শরিফের ডিভোর্সের পর তিন মেয়ের অভিভাবকত্ব নিয়ে লড়াই শুরু হয়। জাপানী আদালতে অভিভাবকত্ব নিয়ে মামলা চলাকালীন সময়ে বয়স বিবেচনায় মায়ের কাছেই ছিল তিন সন্তান। এ অবস্থায় বাবা ইমরান শরিফ বাংলাদেশী পাসপোর্ট বানিয়ে একদিন স্কুল থেকে বড় দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে ২০২১ ফেব্রুয়ারীতে। এর পরই শুরু হয় মেয়েদেরকে ফিরে পেতে মায়ের যুদ্ধ। আদালত চত্বর, জাপান, বাংলাদেশ, এয়ারপোর্ট, দালাল, মিডিয়ায় ছুটতে ছুটতে মায়ের জীবন শেষ।
বাবার করা প্রথম মামলায় হেরে যান মা এরিকো, বাবার পক্ষে রায় দেয় আমাদের মহামান্য আদালত!! হাইকোর্টে ছুটে যান মা। শেষ পর্যন্ত গত পাঁচদিন আগে রায় আসে মায়ের পক্ষে।
তো পাঠক, আপনারা ভাবছেন ঘটনা এখানেই শেষ!!! না শেষ নয়......।
মা তাদের বাচ্চাদেরকে জাপানে ফিরে যেতে এয়ারপোর্টে গেলে বাবা তার দলবল নিয়ে বাধাঁ দেয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে ছোট মেয়েকে নেয়া হয় ভিকটিম সেন্টারে। মহামান্য বাবা বাংলাদেশের দুই নাম্বারী পথ গলিয়ে ভিকটিম সেন্টার থেকে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় আদালতের রায় উপেক্ষা করে। আর মা............. আবার ছুটোছুটি শুরু করেন প্রথম থেকে।
এবার গালি দিতেও ঘৃনা হচ্ছে এমন বাবার প্রতি।
স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে বাচ্চাদেরকে ইউজ করার এরকম নোংরা কাজ মনে আমাদের মতো মানসিকতার পুরুষগুলো ছাড়া আর কেউ করে কিনা জানা নেই। পৃথিবীর কোন সভ্য সমাজ মা এর থেকে বাচ্চাদের আলাদা করার রায় দেয় কিনা সন্দেহ। পৃথিবীর কোন শিক্ষিত সমাজ স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে এভাবে বাচ্চাদের এতোটা মানসিক, শারিরীক কষ্ট দেয় কিনা সন্দেহ।
৯/১০ মাস নয়, পেটের উপর এক কেজি ইট রেখে তারপর একদিন ঘুমায়ে দেখিস কেমন কষ্ট তাতে। এরকম কষ্ট একজন মা করে বিনা অভিযোগে করে দিন রাত, রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে থাকে সন্তানের জন্য, নিজের সুখ আনন্দ সব ছেড়ে সন্তানকে আগলিয়ে রাখে..............। কোন পুরুষের একজন মায়ের এক বিন্দু কষ্ট বোঝার ক্ষমতা কখনই হবে না, কখনই না।
ক্ষমা চাচ্ছি ইরিকো। তুমি চেনোনি বাংলাদেশি স্বামীদের, কিংবা তাদের ক্ষমতার দাপট।
ভালো থাকুক মা এরিকো। সকল কষ্টের সমাধান হোক এ প্রত্যাশায়।
সোহানী
ফেব্রুয়ারী ২০২৩
বি:দ্র: যে সব পাঠক এখনো বুঝতে পারছেন না ইমরান নামক লোকটির অপরাধ কি তাদের জন্য এ অংশটুকু। মি: ইমরান সাহেবের অপরাধের কিছু তালিকা দিলাম;
১) বাচ্চােরে কাস্টডি নিয়ে জাপানে মামলা চলাকালীন আদালতকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশে পলায়ন।
২) মা কিংবা আদালত এর সাথে কোন পরামর্শ ছাড়া বাচ্চাদেরকে নিয়ে আসাটা এবডাকশান পর্যায়ের অপরাধ।
৩) মায়ের অনুমতি ছাড়া তাদের বাংলাদেশী পার্সপোট বানিয়েছে যেখানে তারা জন্মসূত্রে জাপানী নাগরিক।
৪) যেখানে তারা জন্মসূত্রে জাপানী নাগরিক তাদের বিচার ব্যাবস্থা সেখানেই হওয়া স্বাভাবিক।
৫) জাপানী বিয়ে করেছে, জাপানী স্ত্রী কিন্তু বাচ্চাদের ভাগাভাগির সময়ে বাংলাদেশের আইনের দারস্থ হওয়া মানেই এ স্ত্রীকে ভোগানোর প্রচেস্টা। এটা মানসিক অর্থনৈতিক হয়রানী।
৬) মা বাংলাদেশে এসে বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে চাইলে তাকে চোখ বন্ধ করে নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে।
৭) বাচ্চাদেরকে মিডিয়া আদালতের সামনে কখনই আনা হয় না পৃথিবীর কোন রাস্ট্রে। কিন্তু এ লোক তা করেছে দেশের মানুষের সিম্পেথি পাওয়ার জন্য। বাচ্চাদের মানসিক শারীরিক হয়রানী একবারও চিন্তা করেনি।
৮) জাপানে জন্ম জাপানে বড় হওয়া এ বাচ্চাগুলোর উপর নতুন পরিবেশে জোর করে এনে কি পরিমান মানসিক টর্চার করেছে তার জন্য এ লোকের জেল হওয়ার কথা।
যাহোক, এ লোক যদি আমেরিকা বা কানাডায় থাকতো তাহলে তার জায়গা হতো জেলে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৪৫