somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

একজন জাপানী মায়ের লড়াই

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বি:দ্র: এডিটেড

আজকে বাইরের তাপমাত্রা মাইনাস ৩৫। এ ঠান্ডায় মেজাজ ঠান্ডার পরিবর্তে গরম হয়ে যাচ্ছে খবরটা দেখে। বেশ অনেকদিন থেকেই নিউজটা ফলো করি আর নিজের মনে গালি দেই। কাকে???

খুব সাধারন ঘটনাকে আমরা অসাধারন করে তুলেছি আমাদের স্বভাবসুলভ কুটিলতায়। জাপানীজ নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশী ইমরান শরিফের ডিভোর্সের পর তিন মেয়ের অভিভাবকত্ব নিয়ে লড়াই শুরু হয়। জাপানী আদালতে অভিভাবকত্ব নিয়ে মামলা চলাকালীন সময়ে বয়স বিবেচনায় মায়ের কাছেই ছিল তিন সন্তান। এ অবস্থায় বাবা ইমরান শরিফ বাংলাদেশী পাসপোর্ট বানিয়ে একদিন স্কুল থেকে বড় দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে ২০২১ ফেব্রুয়ারীতে। এর পরই শুরু হয় মেয়েদেরকে ফিরে পেতে মায়ের যুদ্ধ। আদালত চত্বর, জাপান, বাংলাদেশ, এয়ারপোর্ট, দালাল, মিডিয়ায় ছুটতে ছুটতে মায়ের জীবন শেষ।

বাবার করা প্রথম মামলায় হেরে যান মা এরিকো, বাবার পক্ষে রায় দেয় আমাদের মহামান্য আদালত!! হাইকোর্টে ছুটে যান মা। শেষ পর্যন্ত গত পাঁচদিন আগে রায় আসে মায়ের পক্ষে।

তো পাঠক, আপনারা ভাবছেন ঘটনা এখানেই শেষ!!! না শেষ নয়......।

মা তাদের বাচ্চাদেরকে জাপানে ফিরে যেতে এয়ারপোর্টে গেলে বাবা তার দলবল নিয়ে বাধাঁ দেয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে ছোট মেয়েকে নেয়া হয় ভিকটিম সেন্টারে। মহামান্য বাবা বাংলাদেশের দুই নাম্বারী পথ গলিয়ে ভিকটিম সেন্টার থেকে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় আদালতের রায় উপেক্ষা করে। আর মা............. আবার ছুটোছুটি শুরু করেন প্রথম থেকে।

এবার গালি দিতেও ঘৃনা হচ্ছে এমন বাবার প্রতি।

স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে বাচ্চাদেরকে ইউজ করার এরকম নোংরা কাজ মনে আমাদের মতো মানসিকতার পুরুষগুলো ছাড়া আর কেউ করে কিনা জানা নেই। পৃথিবীর কোন সভ্য সমাজ মা এর থেকে বাচ্চাদের আলাদা করার রায় দেয় কিনা সন্দেহ। পৃথিবীর কোন শিক্ষিত সমাজ স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে এভাবে বাচ্চাদের এতোটা মানসিক, শারিরীক কষ্ট দেয় কিনা সন্দেহ।

৯/১০ মাস নয়, পেটের উপর এক কেজি ইট রেখে তারপর একদিন ঘুমায়ে দেখিস কেমন কষ্ট তাতে। এরকম কষ্ট একজন মা করে বিনা অভিযোগে করে দিন রাত, রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে থাকে সন্তানের জন্য, নিজের সুখ আনন্দ সব ছেড়ে সন্তানকে আগলিয়ে রাখে..............। কোন পুরুষের একজন মায়ের এক বিন্দু কষ্ট বোঝার ক্ষমতা কখনই হবে না, কখনই না।

ক্ষমা চাচ্ছি ইরিকো। তুমি চেনোনি বাংলাদেশি স্বামীদের, কিংবা তাদের ক্ষমতার দাপট।

ভালো থাকুক মা এরিকো। সকল কষ্টের সমাধান হোক এ প্রত্যাশায়।

সোহানী
ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বি:দ্র: যে সব পাঠক এখনো বুঝতে পারছেন না ইমরান নামক লোকটির অপরাধ কি তাদের জন্য এ অংশটুকু। মি: ইমরান সাহেবের অপরাধের কিছু তালিকা দিলাম;

১) বাচ্চােরে কাস্টডি নিয়ে জাপানে মামলা চলাকালীন আদালতকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশে পলায়ন।
২) মা কিংবা আদালত এর সাথে কোন পরামর্শ ছাড়া বাচ্চাদেরকে নিয়ে আসাটা এবডাকশান পর্যায়ের অপরাধ।
৩) মায়ের অনুমতি ছাড়া তাদের বাংলাদেশী পার্সপোট বানিয়েছে যেখানে তারা জন্মসূত্রে জাপানী নাগরিক।
৪) যেখানে তারা জন্মসূত্রে জাপানী নাগরিক তাদের বিচার ব্যাবস্থা সেখানেই হওয়া স্বাভাবিক।
৫) জাপানী বিয়ে করেছে, জাপানী স্ত্রী কিন্তু বাচ্চাদের ভাগাভাগির সময়ে বাংলাদেশের আইনের দারস্থ হওয়া মানেই এ স্ত্রীকে ভোগানোর প্রচেস্টা। এটা মানসিক অর্থনৈতিক হয়রানী।
৬) মা বাংলাদেশে এসে বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে চাইলে তাকে চোখ বন্ধ করে নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে।
৭) বাচ্চাদেরকে মিডিয়া আদালতের সামনে কখনই আনা হয় না পৃথিবীর কোন রাস্ট্রে। কিন্তু এ লোক তা করেছে দেশের মানুষের সিম্পেথি পাওয়ার জন্য। বাচ্চাদের মানসিক শারীরিক হয়রানী একবারও চিন্তা করেনি।
৮) জাপানে জন্ম জাপানে বড় হওয়া এ বাচ্চাগুলোর উপর নতুন পরিবেশে জোর করে এনে কি পরিমান মানসিক টর্চার করেছে তার জন্য এ লোকের জেল হওয়ার কথা।

যাহোক, এ লোক যদি আমেরিকা বা কানাডায় থাকতো তাহলে তার জায়গা হতো জেলে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৪৫
৯০টি মন্তব্য ৭৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×