ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পুরোপুরি ছাত্রলীগের দখলে। এখানে এতো বড় রকমের একটি কুকর্ম ছাত্রলীগের কর্মী বাদে কারো পক্ষে ঘটানো সম্ভব না। সাধারনত এধরনের কুকর্মে গ্রুপের কিছু অংশ বহিরাগত, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাশীন দলের ছাত্রদের সাথে ক্যাম্পাস আসে, তারাও জড়িত থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বিএনপি-আওমিলীগ-বিএনপি- এর আমল দেখেছি। সে থেকে বলতে পারি আওমিলীগ আমলে সাংস্ক্রিতিক অনু্স্ঠান বেশি হয় এবং এই আওমিলীগ আমলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিতে হাজার মানুষের মধ্যে মেয়েদের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে প্রথম ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে। এই দিন বাধন নামে এক মেয়ের কাপড় তার পরিচিত জনদের সামনেই টেনে ছিড়ে ফেলা হয়। পত্রিকাতে যে ছবি প্রকাশ পায় তাতে পরিস্কার দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের হাত দিয়ে সেই মেয়েটির কাপড় টানছে। ১৬ বছর আগের সেই ঘটনায় ঘটনায় দায়ের করা মামলা ১১ বছর চলার পর ২০১০ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর তিন আসামি, ফজলুল হক রাসেল, খান মেজবাউল আলম টুটুল ও চন্দন কুমার ঘোষ ওরফে প্রকাশ খালাস পেয়ে যান।
এই ছবিতে রাসেলের পিছনে থাকা একজনকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি, আমার বিভাগের জুনি্যর ছেলে, ছাত্রলীগ কর্মি। এদের ক্ষমতা এতোই ছিলো যে first year, 2nd year-এর কোনো subject-এ পাশ না করেও এই ছেলে 3rd year (honours final) exam দিতে পেরেছিলো এবং তার হাতের মোটা ফাইলের কাগজপত্রে দেখলাম প্রতি yearই ভিসি আজাদ চৌধুরি তাকে special permission দিয়েছিলো exam দেবার জন্য।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পুর্ন দলিয় করনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন আওমিলীগের তল্পিবাহক। তাই ছাত্রলীগ কর্মীদের কুকাম আড়াল তাদের পবিত্র দ্বায়িত্ব বলে তারা মনে করেন। আর যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পদে আছেন, তাদের যোগ্যতার অন্যতম হলোদলের দালালি।তাই ছাত্রলীগের বিরুদ্বে উনাদের কিছু করার ক্ষমতা নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদলোভি কিছু শিক্ষক এতো নিচে নেমে গেছেন যে পুলিশ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তল্লাসি করত, ক্ষমতাসিন দলের কর্মীদের অস্ত্রগুলি হলের এইসব শিক্ষকদের বাসায় রেখে আসা হতো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অব্স্থায় দেখেছি, ঈদে ক্ষমতািন দলের কর্মীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের থানাগুলো থেকে পান্জাবি উপহার আসতো। তাই নিষ্চিত ভাবেই বলতে পারি পুলিশ ছাত্রলীগ কর্মীদের সবাইকে ভালো করেই চিনে। তাই জনগন দুর্বৃত্তদের ধরে পুলিশে দিলেও পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশের মূল দ্বায়িত্ব ছাত্রলীগকে রক্ষা করা আর ছাত্রদলকে নিপিড়ন করা। আমজনতার বউ-মেয়ের ইজ্জত রক্ষা করার সময় বা ইচ্ছা তাদের নাই। এজন্য যৌন নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত ও আটক করার চেয়েও বস্ত্রহরণের ঘটনা ঘটেনি প্রমাণ করতে তৎপর তারা। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বস্ত্রহরণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তৎপর ঢাবি প্রশাসনও। পুলিশ ও ঢাবি কর্তৃপক্ষ ঘটনা ধামচাপা দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারীরা। পুলিশ দাবি করছে, ঘটনার পর থেকে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে বস্ত্রহরণের কোন দৃশ্য পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯