somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিহাসের পাঠ: প্রাচীন বাংলা (২য় পর্ব)

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কারা আদিঅস্ত্রাল? প্রথম পর্বের ব্যাখ্যাবিশ্লেষন।

স্বীকার করছি, প্রাগৈতিহাসিক বাংলায় আদিম মানুষ এসেছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে-এরকম একটি একপেষে মন্তব্য করা আমার ঠিক হয়নি। সৌভাগ্য এই সীমাবদ্ধ মন্তব্য শুধরে নেওয়া যায় ব্লগ-এ।
কিন্তু, আমার ওমন মনে হল কেন যে প্রাগৈতিহাসিক বাংলায় আদিম মানুষ এসেছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে?
খুলে বলছি। প্রাগৈতিহাসিক বাংলা সম্বন্ধে আমার অনুসন্ধানের শুরু প্রখ্যাত ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের একটা মন্তব্য পড়ে। নীহাররঞ্জন রায় সেই বিখ্যাত বইটায় লিখেছেন, “নিুবর্ণের বাঙালির এবং বাঙলার আদিম অধিবাসীদের ভেতর যে জনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি, নরতত্ত্ববিদেরা তাহাদের নামকরণ করিয়াছেন আদি-অষ্ট্রেলীয় বা proto-Austroloid (বাঙালির ইতিহাস । পৃষ্ঠা,৩১ )
এই আদি-অষ্ট্রেলীয় শব্দটায় আমি সচেতন হয়ে উঠি। এই আদি-অষ্ট্রেলীয় শব্দটির অন্য একটি প্রতিশব্দ আগেই জানা ছিল- আদিঅস্ত্রাল। (দ্র. কাবেদুল ইসলাম। প্রাচীন বাংলার জনপদ ও জনজাতিগোষ্ঠী। উত্তরণ। ২০০৪; পৃষ্ঠা, ১৬৭)
তো কারা এই আদি-অষ্ট্রেলিয়? ভাবতে থাকি। আদিঅস্ত্রালরা প্রাগৈতিহাসিক অস্ট্রেলিয়ার কোনও আদিম আদিবাসী কি? উইকিপিডিয়ায়Prehistory of Australia
সার্চ করে এই কথাগুলি পাওয়া গেল: The minimum widely-accepted timeframe for the arrival of humans in Australia is placed at least 40,000 years ago.অস্ট্রেলিয়া তো দ্বীপ। তো প্রাগৈতিহাসিক মানুষ ওখানে গেল কি করে? অত বছর আগে? প্লেনে নিশ্চয়ই যায়নি? নৌযোগে? তাই হবে। arrival শব্দটা খেয়াল করুন। তো প্রাচীন অস্ট্রেলিয়ায় প্রাগৈতিহাসিক মানুষ কোত্থেকে গেল? আমি ক্রমেই কৌতূহলী হয়ে উঠতে থাকি।
উইকিপিডিয়ায় Human evolution সার্চ করে পেলাম: .... .... According to the Out of Africa Model, developed by Chris Stringer and Peter Andrews, modern H. sapiens evolved in Africa 200,000 years ago. Homo sapiens began migrating from Africa between 70,000 – 50,000 years ago and would eventually replace existing hominid species in Europe and Asia.
আমি তাই ইতিহাসের পাঠ: প্রাচীন বাংলা (প্রথম পর্ব) লিখেছি- আজ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে একদল মানুষ পূর্বআফ্রিকা থেকে নৌপথে অস্ট্রেলিয়া এসেছিল ... ভেবেছিলাম, অষ্ট্রেলিয়া দ্বীপ যেহেতু। তাদের পক্ষে উড়োজাহাজে আসা তো সম্ভব ছিল না।
সূর্যর লেখা পড়ে এখন জানলাম, আধুনিক ঐতিহাসিকগন আদিম মানুষের পূর্বআফ্রিকা থেকে নৌপথে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন। তো?The minimum widely-accepted timeframe for the arrival of humans in Australia is placed at least 40,000 years ago.অস্ট্রেলিয়া তো দ্বীপ। তো প্রাগৈতিহাসিক মানুষ ওখানে গেল কি করে? অত বছর আগে?
তবুও প্রশ্নটা রয়ে যায়।
যা হোক।
আর নীহাররঞ্জন রায়ের মতে বাংলার সঙ্গে অস্ট্রেলিয় আদিবাসীদের সম্পর্ক ঘনিষ্ট। তিনি লিখেছেন, নিুবর্ণের বাঙালির এবং বাঙলার আদিম অধিবাসীদের ভেতর যে জনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি, নরতত্ত্ববিদেরা তাহাদের নামকরণ করিয়াছেন আদি-অষ্ট্রেলীয় ...
ভ্রান্তির উৎস এখানেই। আসলে, আদিম মানুষ উপমহাদেশজুড়ে আগে থেকেই ছিল। কেননা, Homo sapiens began migrating from Africa between 70,000 – 50,000 years ago and would eventually replace existing hominid species in Europe and Asia.
তা হলে? তা হলে তো আপাতত আউট অভ আফ্রিকা থিউরিটা মেনে নিতেই হয়। উপরোন্ত, The Out of Africa Model has gained support by recent research using mitochondrial DNA (mtDNA). After analysing genealogy trees constructed using 133 types of mtDNA, they concluded that all were descended from a woman from Africa, dubbed Mitochondrial Eve.(উইকিপিডিয়া)
আর ওই ‘বোঙ্গা’ দেবতার ব্যাপারটা?
কাবেদুল ইসলাম লিখেছেন: “বঙ্গ নামটির উৎপত্তির সঠিক কোনো ইতিহাস জানা যায় না। সম্ভবত, ‘অস্ট্রিক ভাষার দেবতাবোধ ক বোঙ্গা শব্দ থেকে ...বঙ্গ শব্দটির উদ্ভবের কথা অনুমান করা যেতে পারে।”
( প্রাচীন বাংলার জনপদ ও জনজাতিগোষ্ঠী। উত্তরণ। ২০০৪; পৃষ্ঠা, ১৭)
আদিঅস্ত্রালদের ভাষাই তো অস্ট্রিক। কাজেই আমি কাবেদুল ইসলামের কথার ওপর ভিত্তি করে প্রথম পর্বে লিখেছি- ...একটা দল আবার অস্ট্রেলিয়া থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছিল- যাদের আমরা বলি প্রাচীন বাংলা। তারা কথা বলত অট্রিক ভাষায়। তারা দেখতে ছিল কালো, বেঁটে। চুল কোঁকড়া। ওই ভাষী কালো বেটে মানুষগুলি প্রাচীন বাংলার উপকূলে নামল। ...ওদের দেবতার নাম ছিল বোঙ্গা। অনেকের অনুমান এই বোঙ্গা শব্দ থেকেই বঙ্গ শব্দটির উদ্ভব।
আমি লিখেছি-...ওই অস্ট্রিকভাষী কালো বেটে মানুষগুলি প্রাচীন বাংলার উপকূলে নামল। ...ওরা বাংলায় এসে কি করল? কি আর । বসবাস করতে লাগল। অনুমান করি, তখন প্রাচীন বাংলা ছিল জল ও জঙ্গলে পরিপূর্ন। তারা অরণ্যেই বসবাস করতে লাগল। ফলমূল কুড়িয়ে খেত, পশু-পাখি শিকার করত। আর উপাসনা করত।
অশোক দেব যথার্থই লিখেছেন ... মানুষ যখন ফনমূল কুড়য়িে খাচ্ছে তার আগইে তাহলে তারা এত র্দীঘ জলপথ পাড়ি দবোর মত নৌ বদ্যিা আয়ত্ত্ব করে ফলে,ে আর্শ্চয।
তাই তো? আমাও প্রশ্ন এই ...
তবে যে তখনও চাষবাদ শুরু করে তার বাড়তি থেকে নগর গড়ে ওঠেনি-তাও ঠিক। নগর গড়ে উঠেছিল আরও পরে। যিশুর জন্মের মাত্র ৬ ৭শ বছর আগে। পুন্ড্রনগর। সে উপাখ্যান পরে লিখব।
আর আহমাদ মুজতবা কামাল রেফারেন্স-এর কথা বলেছেন । কথাটা তখন মনে হয়নি বলে খারাপ লাগছে। আসলে রেফারেন্স দিলেও লাভ নেই। বিষয়টি ইতিহাস। আমাদের ৩৬ বছরের ইতিহাসই দেখুন না- কত তার পরস্পর বিরোধী ব্যাখ্যাবয়ান।
আর আমি তো লিখছি প্রাগৈতিহাসিক বাংলা!
আসলে কিছুই প্রমান করা যাবে না আরও ধোঁওয়া সৃষ্টি করা ছাড়া।
তবু ভাবনার একটি কাবিক্য কাঠামো নির্মান করতে ভালো লাগে।

... তাদেরই একটা দল আবার অস্ট্রেলিয়া থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছিল- যাদের আমরা বলি প্রাচীন বাংলা। তারা কথা বলত অট্রিক ভাষায়। তারা দেখতে ছিল কালো, বেঁটে। চুল কোঁকড়া। ওই ভাষী কালো বেটে মানুষগুলি প্রাচীন বাংলার উপকূলে নামল।

আর লিখতে ভালো লাগে-

প্রাচীন বাংলার অরণ্যে ভিজছে
আদিঅস্ত্রাল নিষাদ শিশু ...
পাতার ফাঁকে দেখছে ওকে-
শান্তশিষ্ট অবোধ পশু ...

একেই কি quasi-history বলে?

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২২
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×