somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতটির কথা ও সুর যে কারণে অবিকল রবীন্দ্রনাথের ...

১৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৫:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শ্রীলঙ্কা। এবারের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা অনেকেরই ভালো লেগেছে। ভাষা অন্যরকম হলেও সুর যেন চেনা চেনা মনে হয়েছে। যা হোক। বিশ্বকাপ উপলক্ষেই শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতটি মন দিয়ে শোনা হল। এবং বেশ বিস্মিত হলাম। তার কারণ - শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতটি সুর অবিকল রাবীন্দ্রিক মনে হল । মনে হল যেন অন্য ভাষায় রবীন্দ্রনাথেরই কোনও গান শুনছি। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে ভারি বিস্মিতও হলাম ...

শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের কথা লিখেছেন শ্রীলঙ্কার প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক ও কবি আনন্দ সামারাকুন। সুরও তিনিই করেছেন। গানটি ‘নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা’ বা ‘মা শ্রীলঙ্কা আমরা তোমায় প্রণাম করি।’ নামে পরিচিত। সামারাকুন ১৯৪০ সালে গানটি রচনা করেন এবং ১৯৪৬ সালে সেটি রেকর্ড করা হয়।
১৯৫১ সালে গানটি শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতরূপে গ্রহন করা হয়।



আনন্দ সামারাকুন (জন্ম জানুয়ারি ১৩,১৯১১-মৃত্যু এপ্রিল ৫, ১৯৬২) আধুনিক সিংহলী সংগীতের জনক এবং আধুনিক শ্রীলঙ্কার গীতসাহিত্যের প্রতিষ্ঠাতা ।

আনন্দ সামারাকুন জন্মসূত্রে ছিলেন খ্রিস্টান। তাঁর পুরো নাম ইগোডাহাঞ্জ জর্জ উইলফ্রেড আল উইস সামারাকুন। পড়াশোনা করেছেন কোটির (তৎকালীন শ্রীলঙ্কার রাজধানী) খ্রিস্টান কলেজে। পরে ওই কলেজেই সংগীত ও চিত্রকলার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ছবিও আঁকতেন সামারাকুন। রবীন্দ্রনাথের টানে ভারতে এসেছিলেন। মাস ছয়েক শান্তিনিকেতনে পড়েছেনও। পরে আবার শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসেন। বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেন এবং পূর্বেকার নাম বদলে রাখেন আনন্দ সামারাকুন। ...এসব ঘটনা ১৯৩৮ সালের আগে। কাজেই অনুমান করা যায় শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথকে দেখেছিলেন। আগেই বলেছি ... বিশ্বকাপ উপলক্ষেই শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতটি মন দিয়ে শোনা হল। বেশ বিস্মিত হলাম। তার কারণ - শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতটি সুর অবিকল রাবীন্দ্রিক মনে হল । মনে হল যেন অন্য ভাষায় রবীন্দ্রনাথেরই কোনও গান শুনছি। ... এ প্রসঙ্গে জনৈক ইতিহাসবিদ লিখেছেন ... He (আনন্দ সামারাকুন) was very much influenced by Rabindranath Tagore while in India and his fascination and the desire to imitate the great Indian musician would go on to take him in the direction of creating a musical tradition for the Sri Lankan people.



আনন্দ সামারাকুন। ইনি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রসান্নিধ্যে এসেছিলেন। গ্রহন করেছিলেন বৌদ্ধধর্ম ...

ব্যাক্তিজীবনে অসুখী ছিলেন সামারাকুন। ১৯৪৫ সালে মাত্র ৫ বছর বয়েসে একমাত্র ছেলে মারা গেলে তিনি শ্রীলঙ্কা ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। এবং ছবি এঁকে বিষাদিত সময় অতিক্রম করেন।
মন শান্ত হলে ১৯৫১ সালে আবার মাতৃভূমিতে ফিরে যান।

সিংহলী ভাষায় ‘নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা’ গানটির ইংরেজি অনুবাদ

Mother Lanka - we salute Thee!
Plenteous in prosperity, Thou,
Beauteous in grace and love,
Laden with corn and luscious fruit
And fragrant flowers of radiant hue,

(এই জায়গায় রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা গানটির কথা মনে পড়ে যায়।)

Giver of life and all good things,
Our land of joy and victory,
Receive our grateful praise sublime,
Lanka! we worship Thee.

Thou gavest us Knowledge and Truth,
Thou art our strength and inward faith,

(এখানেও রবীন্দ্রপ্রভাব স্পস্ট)

Our light divine and sentient being,
Breath of life and liberation.
Grant us, bondage free, inspiration.
Inspire us for ever.
In wisdom and strength renewed,
Ill-will, hatred, strife all ended,
In love enfolded, a mighty nation
Marching onward, all as one,
Lead us, Mother, to fullest freedom.

গানটির তামিল ভার্সানও রয়েছে। শ্রীলঙ্কার তামিল মাধ্যম স্কুলে এবং তামিল অধ্যূষিত অঞ্চলে সরকারী অনুষ্ঠানে সেটি গাওয়া হয়।
আনন্দ সামারাকুন গানটির ভেতর আজও বেঁচে আছেন। ভারি অভিমানী ছিলেন সামারাকুন। ৫১ বছর বয়েসে অতিরিক্তমাত্রা ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
কারণ?
তাঁর অনুমতি না নিয়েই তাঁর একটি কম্পোজিশনের কথা পরিবর্তন করা হয়েছিল!

ভিডিও



এমপি থ্রি ডাউনলোড লিঙ্ক

http://www.mediafire.com/?083becruybor5mz

তথ্যসূত্র:

http://www.lankalibrary.com/pro/national anthem.htm

http://en.wikipedia.org/wiki/Sri_Lanka_Matha

http://en.wikipedia.org/wiki/Ananda_Samarakoon
৩৫টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×