somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকা : স্বপ্নের যেখানে কোনো সীমা নেই। পর্ব-১

২৭ শে মে, ২০১১ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ টুলস ডেভেলপমেন্ট এবং প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য একটা সুযোগ পেয়েছিলাম, সারা বিশ্ব থেকে ৬ জন এর একটা টীম করেছিল এই গবেষনা প্রজেক্ট! ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে, লন্ডনের হিথ্রো হয়ে সরাসরি সিয়াটল! টানা ২৩-২৬ ঘন্টার জার্নি! সাথে বিশাল ট্রলি, এই ট্রলি তে আমি -ই আস্ত প্যাক হয়ে যেতে পারবো! :P হাতে ল্যাপ্টপ আর আরেকটা ব্যাগ, ক্যামেরা এবং কাগজপত্র, পাসপোর্ট আর ভিসার জন্য! বুঝতেই পারছেন! নিজে হাঁটবো না দৌড়াবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না! :|

তবুও বিসমিল্লাহ বলে রওয়ানা দিলাম! যা আছে কপালে! প্রথমে ভাবছিলাম, বাসা থেকে অনুমতি দিবে না! আব্বা পারমিশন না দিলে যাওয়া মুশকিল! এত দূর যাত্রা। সাথে ভাই বোন নাই! অবিবাহিত মেয়েকে বাবা যেতে দিবে না এইটাই তো সত্য! কি ভরসা আছে!

যাই হউক ! আমার কপাল ভালো বাংলাদেশের একজন পেলুম! ডাক্তার সেই ভাইয়া আমাদের টীমের সাথে যাবেন! বাবা ফোন করে উনার সাথে কথা বলে, আমাকে দেখাশোনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেন!

বাবা নিশ্চিন্ত হন নি আমি জানি, মা-ও না! আমার মনের জোর ভীষন! আমি জানি নিজে ঠিক তো দুনিয়া ঠিক! ইংরেজিতে একটা কথা আছে---নো অয়ান কেন মেইক ইউ ইনফেরিওর---উইদাওউট ইউওর পারমিশন---!

ব্যাস! আর কে ঠেকায়! ঢাকা থেকে প্লেইন এ তুলে দিল . ছোট ভাই। ভোর ৫টায় প্লেইন ফ্লাই করলো!

রান-ওয়ের লাইটগুলো জ্বলছিলো মঙ্গল প্রদীপের মতো! মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম আলো দিয়ে সাজানো বিমানের সেই পথ! আমরা যাচ্ছি---ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজে করে!

বিশাল বিমান, ঊড়াল দেয়ার সময় খেয়াল করলুম কান বন্ধ হয়ে গেছে--মাথা ভোঁ ভোঁ করছে--নিজেকে ওজনশূণ্য আর অস্থির লাগছে!

সাথে সাথে বাদাম চিবুতে শুরু করলাম! বিমান শূণ্যে ঊঠার পর চুইংগাম চিবালাম অনেকক্ষন! ২০ মিনিটের মাথায় নিজেকে স্বাভাবিক মনে হলো! জীবনের প্রথম বিমানে চড়ায় আমার অনেক কৌতুহল ছিলো--মোবাইল ফোন রেখে আসায় মা-কে আর সেই বিমান ছাড়ার সময় গুডবাই বলা হয় নি!

সিলেট থেকে ঢাকা, তারপর ঢাকা থেকে আবার দম বন্ধ বিমানে লং জার্নি, বেশ ক্লান্তি তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না! ঘুম ভাংলো সুন্দরী এক ম্যাডামের ডাকে! " 'এক্সকিউজ মি' হোয়াট ইউ লাইক টু হ্যাভ ফর ইউওর ব্রেকফাস্ট?"

তাকিয়ে দেখি---সবার খাওয়া দাওয়া চলছে জম্পেশ! স্যান্ডুইচ আর জ্যুস খেয়ে আবার দিলাম ঘুম!

যখন ঘুম ভাংলো---দেখি মেঘের রাজ্যে ভাসছি---







অনেক দিনের সখ ছিলো---পৃথিবীর এমন কোনো জায়গায় যাবো, যেখান থেকে আমি দু-হাত দিয়ে মেঘ ছুঁতে পারবো! নিজেকে এতো এক্সাইটেড লাগছিলো! হাঁ---সত্যি-ই তাই! কিন্তু আমি তো মেঘ ছুঁতে পারছিলাম না! বিমানের কেনো জানালা খোলা যায় না--তাই, ভীষণ মন খারাপ লাগছিলো!:|

মেঘ যদি ছুঁতে নাই পারলাম , তো আকাশে ঊড়ে লাভ কী?? শুধু শুধু!
রাগে ফঁস ফুঁস করতে করতে হেলান দিলাম সিটে! ২ মিনিট চোখ বন্ধ করে রেখে আবার তাকালাম---কেনো জানিনা!

তারপর যা দেখলাম--ভাষায় প্রকাশ করার মতো না! চারপাশে শুধু মেঘের ভেলা--সাদা মেঘের উপড়ে স্থানে স্থানে উপচে পড়ছে সুর্যের সোনালি আলো! সকাল বেলার সেই রোদে সোনালি রঙের সাথে মিশে আছে গোলাপী রঙ! হলুদ চ্ছটায় ভাসছে মেঘ---এখন আর নিচে তাকালেও দেখছি না কিছু--যেমনটি দেখেছিলাম ভারতের কিছু অংশ আর পাকিস্তানের তীর ঘেসে আসার সময়! এখন আর নীচে কিছু নেই---চার পাশে মেঘ --রঙ্গিন মেঘের সাথে এইখানে চলছে সুর্যের সাত রঙের হলি খেলা!

এই বুঝি দশ খন্ড মেঘ মিলে বানালো একটা মিনার--অথবা বড় রাজ প্রাসাদ অথবা এই বুঝি চারটা .পরী ...গল্প করে করে ঊড়ে চলে গেলো জানালার পাশ দিয়ে! এই বুঝি কিছু মেঘ রঙ নিয়ে হয়ে গেল ফুল---রঙ্গিন প্রজাপতি!

মেঘেদের সাথে খেলা হলো কি না জানি না--শুধু জানি, জীবনের প্রথম মেঘের দেশে গিয়েছহিলাম---হুম.--সত্যি-ই তাই! স্বপ্ন নয়---অথবা নয় স্বপ্নের ঘোরে কোন বাস্তব কল্পনা! -------চলবে----
















সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:১৩
১৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×