১. চিন্তা করে দেখুন, একই বয়সের একদল ছাত্র প্রায় একই বয়সের আরেক দল ছাত্রের উপর দাদাগিরি করছে। মিছিলে না যাওয়ার জন্য বকা দিচ্ছে, দল না করলে হলে উঠতে দিচ্ছে না, নতুন ছাত্রদের উপর র্যাগিং করছে। কতটা অসহায় ঐ ছাত্রদের ও তাদের পরিবারের মানসিক অবস্থা হয় কখনো কি ভেবে দেখেছেন?
২. যে কোন মৃত্যুই দুঃখজনক। আর তা যদি হয় শিক্ষাঙ্গনে তা আরও মর্মান্তিক। অতীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হত্যার পর ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে। কিন্তু রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ ও জ্ঞানপাপী শিক্ষকদের জন্য কখনোই তা বাস্তবায়ন করেনি কেউ। শেষমেষ আবরার ফাহাদের মৃত্যুর পর বুয়েট শিক্ষার্থীরা (পাশাপাশি সমাজের প্রতিষ্ঠিত বুয়েটিয়ানদের সহমত) এমন আন্দোলন করে বোধহয় স্বয়ং শেখ হাসিনাও মনে মনে চেয়েছেন বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক…
৩. ছাত্ররাজনীতি নিষেদ্ধের পর মাঝে একবার ছাত্রদল রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিল, তবে তা পাত্তা পায়নি। আর গোপনে ছাত্রলীগ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল কার্য্যক্রম শুরু করতে কিন্তু প্রতিবারই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পিছু হঠেছে। তবে এবার মনে হচ্ছে ছাত্রলীগ পেছন থেকে সাপোর্ট পাচ্ছে। আওয়ামী ফেসবুকাররাও উস্কানি দিচ্ছে রাজনীতি করার অধিকার দিতে হবে নাহলে বুয়েট নাকি মাদ্রাসা হয়ে যাবে। এর মধ্যে উপাচার্য্যও আমতা আমতা করে অনুমতি দিতে চাইছে (যদি সবাই রাজি হয় আর কি!)। শিক্ষামন্ত্রী ও ডিবি হারুনও এ ব্যপারে মন্তব্য করেছে। সব দেখে মনে হচ্ছে বুয়েটে আবার ছাত্ররাজনীতির অনুমতি দিতে পারে…
৪. ছাত্ররা রাজনীতি করতে চাইলে করুক ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে মূল দলের সাথে। ক্যাম্পাসে কেন তারা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শাসন করবে? উপাচার্যকে চোখ রাঙানি দিবে? হলে তালা দিবে? হল কি তাদের বাপের? কোন পিতামাতার বৈধ সন্তান হয়ে এমন কাজ কীভাবে করতে পারে কেউ? কিসের দেশের সেবা? কিসের ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ তৈরি? বিশ্বের কোন দেশে আছে এই ছাত্র রাজনীতি? কোন সুশীল, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদের ছেলে ছাত্ররাজনীতি করে? এমনিতেই রাজনীতিবিদ, জনগণ, সিস্টেম-এর কারণে এই দেশ নিয়ে তেমন আশা ভরসা নেই, বুয়েটে যদি আবার ছাত্র রাজনীতি চালু হয় তাহলে আর কিছু বলার নেই…
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫৭