somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামপাল বন্ধে সূজনের দাবী- ক্ষতির সহজ হিসাব; সকল সত্য অস্বীকার করে উল্টোপথযাত্রা কেন?????

০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকল দেশপ্রেমিক এবং শুভবুদ্ধি সম্পন্ন আমজনতার মনের দাবীই ফুটে উঠেছে সূজনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের দাবীতে।

গতকাল রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ এবং সুন্দরবন এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।



সূজন নেতৃবৃন্দ বলেন- দেশের সচেতন নাগরিক, পরিবেশবাদী, দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী ও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সকল ধরনের যুক্তি, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ইত্যাদিকে উপেক্ষা করে










সরকার বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য গত ১২ জুলাই রাজধানীর একটি হোটেলে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএ) ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারত হেভি ইলেকট্রিক লিমিটেড (বিএইচএল)-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।




খুব সহজ এবং সরল ভাবেই এটি বন্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে সূজন। আমজনতার তথ্য সূত্র হিসাবে এবং সামুর পাঠকদের পুন:স্মরনে এবং রামপালের ভয়াবহতা উপলদ্ধির জন্য দেশবাসীর করকমলে উপস্থাপন করা হল:

এক. প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত স্থানটির সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটারেরও কম। বাফার জোন ধরলে যা নয় কিলোমিটারেরও কম। অথচ ভারতের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় প্রণীত পরিবেশ সমীক্ষা (ইআইএ) গাইডলাইন ম্যানুয়াল: ২০১২ অনুযায়ী, বনাঞ্চল, বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য, জীববৈচিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান, জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি এলাকার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা যায় না।



দুই. প্রকল্পের জন্য বিদেশ থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে নদীপথে প্রতিবছর ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা আসবে। পরিবহনকালে এই কয়লার গুড়ো বা ক্ষুদ্র কণা উড়ে পানিতে মিশবে। ফলে পানি দূষিত হবে, যার প্রভাব জলজ প্রাণী ও পরিবেশের ওপর গিয়ে পড়বে।

তিন. এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইড নির্গত হবে, যা সহনশীল পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি এবং এর মারাত্মক প্রভাব বনাঞ্চল ও প্রাণিজগতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

চার. ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি থেকে নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্যের তাপমাত্রা হবে ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বাতাসের তাপমাত্রার ওপর এর প্রভাব প্রাণী ও পরিবেশের ক্ষতি করবে।



পাঁচ. এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে বছরে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন ফ্লাইএ্যাশ ও দুই লাখ টন বটম অ্যাশ উৎপন্ন হবে। এই ছাই সিমেন্ট কোম্পানিগুলোকে সরবরাহ করা হবে। এই ছাই বাতাসে উড়ে গিয়ে গাছপালা ও পশুপাখির ক্ষতি করবে।





ছয়. বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য প্রতিঘণ্টায় পশুর নদী থেকে নয় হাজার ১৫০ ঘন মিটার পানি প্রত্যাহার করা হবে এবং ব্যবহারের পর পাঁচ হাজার ১৫০ ঘনমিটার পানি নদীতে ফেরত যাবে। এতে পানিপ্রবাহ কমতে থাকবে এবং পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাবে; যার ক্ষতিকর প্রভাব গিয়ে পড়বে জলজপ্রাণীর ওপর।



সাত. জাহাজ চলাচল এবং টারবাইন, কম্প্রেসর ও পাম্প ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে শব্দদূষণ ও বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পাবে।

আট. প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ১৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ করে মোট ৩০ শতাংশ অর্থের যোগান দেবে পিডিবি ও এনটিপিসি। অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ টাকা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করা হবে; যার সিংহভাগই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৪ শতাংশ হারে চড়া সুদে গ্রহণ করা হবে।

সুজন আরো জানায়, এই প্রকল্প হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী। এতে শুধুমাত্র বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনই ধ্বংস হবে না, বিপর্যস্ত হবে জীব-বৈচিত্র্য, দুষিত হবে নদ-নদী এবং কর্ম হারাবে লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক মানুষ। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রকাশিত আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ীও এই প্রকল্প লাভজনক নয়।

এছাড়া বিকল্প ধারণাগুলো যেমন, বায়ুচালিত বিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, এমনকি বর্জ্য পদার্থ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় সুজন।

সুজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদেশের সঙ্গে সম্পাদিত যেকোনো চুক্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জাতীয় সংসদে আলোচনা করার ব্যাপারে আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া জনস্বার্থে এ ধরনের চুক্তি নিয়ে গণশুনানি করা আবশ্যক।

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটি-সহ ৫৩টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের লক্ষ্যে যে আন্দোলন করছে তাতে সুজন-এর পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করা হয়।

আমরাও সূজনের সাথে একমত।

দেশ জনতা এবং বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট রক্ষায় সত্ত্বর এই প্রকল্প বন্ধ করা হোক। বিশ্ব যেখানে সবুজায়নের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার প্রযুক্তির আবিস্কারে যখন সবাই সচেষ্ট-তখন প্রকৃতির এক বিশাল সম্পদ ধ্বংসের ই্ আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত ইতিহাসে কালো অক্ষরেই লিপিবদ্ধ থাকবে।

রামপাল সংক্রান্ত উইিকপিডিয়াতেও এই তথ্যের সম্পূরক তথ্যই আমরা দেখতে পাই।
Environmental issues

This project violates the environmental impact assessment guidelines for coal-based thermal power plants.[2]

On August 1, 2013, Department of Energy of Bangladesh approved construction, but then changed its stance and set 50 preconditions for the project.[9] But the location of the plant, 14 kilometers from the Sundarbans, violates one of the basic preconditions which says such projects must be outside a 25-kilometer radius from the outer periphery of an ecologically sensitive area.[2]

Environmental activists contend that the proposed location of the Rampal Station would violate provisions of the Ramsar Convention. The Ramsar Convention, to which Bangladesh is a signatory, is an international environmental treaty for the conservation of wetlands. The Sundarbans are on Ramsar's list of wetlands of international importance.[10][11]

The plant will need to import 4.72 million tons of coal per year. This massive freight will need about 59 ships each having 80,000-ton capacity that would be taken to the port on the bank of Poshur river. The 40 kilometers from the port to the plant cuts through the Sundarbans and it includes the river flow path. Environmentalists say these coal-carrying vehicles are not often covered as they scatter large amounts of fly ash, coal dust and sulfur, and other toxic chemicals are released throughout the life of the project.

The predictions made by environment and ecology experts are that the plant will release toxic gases such as carbon monoxide, oxides of nitrogen and sulphur dioxide, thereby putting the surrounding areas and, most importantly, Sundarban at grave risk.[12]

According to a report published in New Age, in past few years the Indian central and state authorities which deal with environmental concerns in India denied the proposal of NTPC to set up a similar coal-fired thermal power plant at Gajmara in Gadarwara of Madhya Pradesh over a number of points. NTPC failed to get approval of the Indian Central Green Panel (Green Tribunal) in 2010 for the construction of that coal-fired thermal power plant because a vast portion of double-crop agricultural land reportedly comprised the site, a similar situation to Rampal.[12]

সকল পরিবেশ বিদ, বিশ্বমত, বিশেষজ্ঞ মত এবং দেশের আমজনতার মতের চাওয়ার দাবীর বিপরীতে এই একঘুয়ে চলা কার স্বার্থে?




তথ্য কৃতজ্ঞতা : সূজন, যুগান্তর, উইিক।
ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৭
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×