টানা সতের দিন বিছানায়। পক্সের সংক্রমনে সারা দেহ প্রিন্টেড শাড়ীর মতো ফোসকায় ভরে ছিল। ডান থেকে বামে কাত হ্ওয়া যেত না। বাম থেকে ডানে যেতে গেলেও ব্যাথায় ত্রাহি চিৎকার! চরম ভোগান্তি শেষে উনারা বিদায় নিলেন। রেখে গেলেন গা ভরা চিকেন স্পট!তখন একটু একটু হাটাচলা করতে পারি
সেদিন সন্ধ্যা থেকে আকাশ কালো করে প্রচন্ড কালেবোশেখির ঘনঘটা। দমকা বাতাস ক্ষনে ক্ষনে। বাসা তখন গুলবাগে। সন্ধ্যার পর থেকেই বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। সবাই বেশ আগে ভাগেই খেয়ে দেয়ে শোয়ার আয়োজনে ব্যাস্ত। আমি একা একা টিভিতে চোখ রেখে বসে আছি আনমনে।
রাত সাড়ে দশটার ঘন্টাটা বেজে থেমেছে কেবল। টিভিটা বন্ধ করে আমি ধীরে ধীরে বারান্দায় এসে দাড়ালাম। একটু পর পর ঝড় পূর্ব শীতল বাতাসের হালকা দমকা ঝটকায় বেশ আরাম বোধ হচ্ছিল। রাস্তায় লোকচলাচলও কমে এসেছে। আশেপাশের বাসায়ও দু এক রুমে মিটমিটে আলো। অনেকদিন বিছানায় থাকায় পরিবেশটা দারুন এন্জয় করছিলাম।
হঠাৎ আমার বোনের কন্ঠ শুনে চমকে গেলাম। বেশ জোরে জোরে বলছে- এখানে দাড়িয়ে আছিস! মরার ভয় নাই? কিছু একটা হলেতো আমাদেরই কাঁদতে হবে।
আমার মনে হলো আম্মা বুঝি বাইরে দাড়িয়ে হাওয়া খাচ্ছে। আর বোন তাকে ঘরে নেবার জন্য এমন কথা বলছে। আমার খুব রাগ হলো। আমারও যেহেতু খুবই ভাললাগছিল বাতাস খেতে! মায়েরও ভাল লাগতেই পারে। রাগে বেশ দ্রুত হেটে গেলাম । বোনকে বকা দেব ভেবে। একটু বাইরে দাড়ালে কি অমন মহাক্ষতি হয়ে যাবে। যে মাকে অমন করে বকতে হবে?
অমা! বাইরের খোলা ঝুল বারান্দার দরজাটা বন্ধ। নেড়ে চেড়ে দেখলাম। নাহ। ছিটকিনি শক্ত করেই লাগানো। ঘুরে গেলাম ভেতরের রুমের দিকে। ভাইরা সব ঘুমিয়ে মশারীও টাইট করে গোঁজা। মায়ের রুমে গেলাম। মা বোন দুজনেই অঘোর ঘুমুচ্ছে। মশারী চেক করলাম- উঠা নামার কোন চিহ্ণ আছে কিনা? নাই!!! এবার সত্যি চমকে গেলাম। তাহলে কথা বললো কে? কাজের মেয়েটাকে ডেকে তুললাম। তোর খালা নানী কেউ বাইরে গেছিল? বললো- নাতো।
এবার আমার চমক বিস্ময়ে বদলে গেল। গা শিরশির করে উঠলো। স্পষ্ট শোনা। কথাগুলো পরিষ্কার। কোন দ্বিধা নেই। অথচ তারা ঘুমুচ্ছে। তাহলে কথা গুলো বললো কে?
# অতিপ্রাকৃত ঘটনা সিরিজ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৮