আমার আজকের লেখা নাস্তিকতা নিয়ে। পৃথিবীতে মাত্র ২ ধরনের ধর্ম আছে। আস্তিক ও নাস্তিক। আস্তিক ধর্মের মধ্যে পড়ে ইসলাম, হিন্দু, খ্রিশ্চিয়ান ইত্যাদি। এসবের বাইরে যারা ঈশ্বরেই বিশ্বাস করেনা, যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব ছাড়াই এই পৃথিবীর কর্ম নিয়ে চিন্তিত, পরকালের ভয় নেই, তবে বর্তমান সময় নিয়ে চিন্তাশীল, তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। সক্রেটিসকে বিষ পান করে মেরে ফেলা হলেও তাকে আস্তিকরা মাথা নত করাতে পারেনি। যুগযুগ ধরে আস্তিক ও নাস্তিকদের আলচোনা-সমালোচনা চলে আসছে।
এবার একটা কথায় আসি। কিছু লোক নিজ ধর্মের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে সেই নিজ ধর্মকে গালাগালি করে, আর গালাগালির কারন জিঙ্গেস করলে নিজদেরে ঢাকতে বা কখনো স্টাইল করে নিজেকে নাস্তিক দাবি করে বসে। তারা জানেও না নাস্তিকতা কি! কোন নাস্তিক নিজেকে নাস্তিক দাবি করে চিংকার চেৎচামেচিৎ করে না। নাস্তিকদের পরিচয় জিঙ্গাসা করা হলে সে নিজেকে মানুষ বলে দাবী করে, নাস্তিক বলে নয়। যার মধ্যে মানবতার গুন নেয়, সে কিভাবে নাস্তিক হল, বোধগম্য নয়। এই শব্দটার অপব্যবহার বন্ধ করা উচিত।
"কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদুর!, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক, মানুষেতে সুরাসুর"
"হিন্দু না মুসলিম?, ওই জিঙ্গাসে কোন জন?, কান্ডারী, বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার"
যারা নাস্তিক, তাদের মতবাদ/স্লোগান এগুলো। তারা কোন জিঙ্গাসে যায়না কে কোন ধর্মের, গায়ের রঙ কি, তারা পুরুষ না মহিলা। তাহলে, যারা ধর্মের প্রতি ঘৃণা দেখায়, তারা নাস্তিক হয় কিভাবে?
লোক দেখানো, না জেনে চিলের পিছনে কান পাবার আশায় দৌড়ের কারন টা কি? ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কি হতে পারে? যখন কোন দেশে ঘূর্ণিঝড়, দুর্যোগ, যুদ্ধ হয়, তখন কিছু সংস্থা, মানুষ সেসব অসহায় মানুষের পাশে দাড়ায়, তারা একবারও জিঙ্গেস করে না, ধর্ম কি, কোন দেশের, কালো না সাদা, পুরুষ না মহিলা! আফগানিস্তান, ইরাক এমনকি ফিলিস্তিনে যে সংস্থা গুলো সাহায্য দিয়েছে বা দিচ্ছে, সেগুলোর কোনটি মুসলিম সংস্থা? বা এর মত সংস্থা গুলো মানবতার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, কোন ধর্মের লোকটি তাদের সংগঠনে অনুদান দিয়েছে? মুসলিম কোন বড় নেতাটি কত টাকা দিয়েছে? নাকি হিন্দু নেতা দিয়েছে? নাকি কোন রাজনৈতিক নেতার নাম বলুন, যে অর্থ সাহায্য দিয়েছে? তাহলে কে দিচ্ছে? কেন দিচ্ছে? ভেবে দেখার বিষয় নয় কি?
অযথা না বুঝে বোকার মত "ইসলাম-বিদ্বেষীদের" নাস্তিক বলা থেকে বিরত হন। নাস্তিকরা আপনার কোন ক্ষতি করেনি, এবং করবেওনা। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি আপনাকে। আপনারা শিক্ষিত মানুষ। নাপিত-ডাক্তারের গল্প শুনে থাকবেন, যে ডাক্তারি বিদ্যা জানার পর আর অপারেশন করতে পারেনি। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেনা, তারা পাপ-পূণ্যের হিসাব খুব ভালমত জানে, আপনাদের আর সবার চেয়ে। আর তাই, তার দ্বারা কোন অন্যায় হবার কোন চান্স-ই নেই। যারা নাস্তিক, তারা জন্মায় ওই নাপিত-ডাক্তারের মত, কিন্তু যখন জানতে পারে ডাক্তারি বিদ্যার রহস্য, তখন সে আর কোন ক্ষতিই করতে পারেনা। ছোট একটা ভূল কাজ করতেও তার হাত কাপেৎ, যা ওই "ইসলাম-বিদ্বেষীরা" বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করেনা।
আশা করি, "ইসলাম-বিদ্বেষী" ও নাস্তিকতা কি, আপনি এখন জানেন।
এবার আসুন, এই মুখোশ-ওয়ালা কিছু চেহারা দেখি। ফেসবুকে লিখে সার্চ করুন, যে পেজটি পাবেন, সেটি আসলে "খ্রিশ্চিয়ান-বিদ্বেষী", আর আপনার আশে-পাশে যাদের নাস্তিক হিসেবে পাচ্ছেন, তারা "ইসলাম-বিদ্বেষী", ভারতেও এমন কিছু গ্রুপ আছে, যাদের সাথে আমার চ্যাট হয়েছে, যারা "হিন্দু-বিদ্বেষী"। এরা যদি নিজেদের পরিচয় কিছু দেয়, আপনি তাকে সে পরিচয়ে ডাকবেন কেন? আপনি কি তাদের মুখোশ-গুলো দেখতে পাননা? তাদের চিনতে পারেন না? এদের থেকে সাবধান থাকুন, অন্যকেও সাবধান করুন। যেই ইসলাম বিরোধী কথা বলবে তাকে "ইসলাম-বিদ্বেষী" বলে চিহ্নিত করবেন, নাস্তিক বলে নয়।
আর লিখতে পারছিনা এখন, উঠতে হবে। ভাল থাকবেন। লেখার ভূল-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।