somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী জাতি পুরুষেরই অংশ ও তার অনগুত :

০১ লা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সিজদা অনুষ্ঠানের পর আল্লাহ আদমের জুড়ি হিসাবে তার অবয়ব হতে
একাংশ নিয়ে অর্থাৎ তার পাঁজর হতে তার স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করলেন মাটি
থেকে সৃষ্ট হওয়া আদমের নাম হল ‘আদম’ এবং জীবন্ত আদমের পাঁজর
হতে সৃষ্ট হওয়ায় তাঁর স্ত্রীর নাম হল ‘হাওয়া’ (করুতুবী)। অতঃপর তাদের
উদ্দেশ্যে আল্লাহ বললেন, ‘তোমরা দু’জন জান্নাতে বসবাস কর ও সেখান
থেকে যা খুশী খেয়ে বেড়াও। তবে সাবধান! এই গাছটির নিকটে যেয়ো না।
তাহ’লে তোমরা সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’ (বাকা¡ রাহ ২/৩৫)।
এতে বুঝা যায় যে, ফেরেশতাগণের সিজদা কেবল আদমের জন্য ছিল,
হাওয়ার জন্য নয়। দ্বিতীয়তঃ সিজদা অনুষ্ঠানের পরে আদমের অবয়ব থেকে
হাওয়াকে সৃষ্টি করা হয়, পূবের্ নয়। তিনি পৃথক কোন সৃষ্টি ছিলেন না। এতে
পুরুষের প্রতি নারীর অনুগামী হওয়া প্রমাণিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘পুরুষেরা
নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল’ (নিসা ৪/৩৪)। অতঃপর বহিষ্কৃত ইবলীস তার
প্রথম টার্গেট হিসাবে আদম ও হাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতারণার জাল নিক্ষেপ
করল। সেমতে সে প্রথমে তাদের খুব আপনজন বনে গেল এবং নানা কথায়
তাদের ভুলাতে লাগল। এক পর্যায়ে সে বলল, ‘আল্লাহ যে তোমাদেরকে ঐ
গাছটির নিকটে যেতে নিষেধ করেছেন, তার কারণ হল এই যে, তোমরা
তাহলে ফেরেশতা হয়ে যাবে কিংবা তোমরা এখানে চিরস্থায়ী বাসিন্দা হয়ে
যাবে’ (আ‘রাফ ৭/২০)। সে অতঃপর কসম খেয়ে বলল যে, আমি অবশ্যই
তোমাদের হিতাকাংখী’ (আ‘রাফ ৭/২১)। ‘এভাবেই সে আদম ও হাওয়াকে সম্মত
করে ফেলল এবং তার প্রতারণার জালে আটকে গিয়ে তারা উক্ত নিষিদ্ধ
বৃক্ষের ফল আস্বাদন করল। ফলে সাথে সাথে তাদের গুপ্তাঙ্গ প্রকাশিত হয়ে
পড়ল এবং তারা তড়িঘড়ি গাছের পাতা সমূহ দিয়ে তা ঢাকতে লাগল।

আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে
নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“? (আ‘রাফ ৭/২২) তখন তারা অনুতপ্ত হয়ে বলল, ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা
নিজেদের উপর যুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন, তবে
অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’ (আ‘রাফ ৭/২৩)। ‘আল্লাহ তখন
বললেন, তোমরা (জান্নাত থেকে) নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্র“।
তোমাদের অবস্থান হবে পৃথিবীতে এবং সেখানেই তোমরা একটি নির্দিষ্ট
মেয়াদ পর্যন্ত সম্পদরাজি ভোগ করবে’ (আ‘রাফ ৭/২৪)। তিনি আরও বললেন যে,
‘তোমরা পৃথিবীতেই জীবনযাপন করবে, সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং
সেখান থেকেই তোমরা পুনরুত্থিত হবে’ (আ‘রাফ ৭/২৫)।
এখানে একটি বিষয় উল্ল্যেখ করা যেতে পারে যে, ইবলীসের কথায় সর্বপ্রথম
হাওয়া প্রতারিত হন। অতঃপর তার মাধ্যমে আদম প্রতারিত হন বলে যে
কথা চালু আছে কুরআনে এর কোন সমর্থন নেই। ছহীহ হাদীছেও স্পষ্ট কিছু
নেই। এ বিষয়ে তাফসীরে ইবনু জারীরে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে যে বর্ণনা
এসেছে, তা যঈফ। দ্বিতীয়তঃ জান্নাত থেকে অবতরণের নির্দেশ তাদের
অপরাধের শাস্তি স্বরূপ ছিলনা। কেননা এটা ছিল তওবা কবুলের পরের
ঘটনা। অতএব এটা ছিল হয়তবা তাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দানের জন্য। বরং
সঠিক কথা এই যে, এটা ছিল আল্লাহর পূর্ব নির্ধারিত ও দূরদর্শী পরিকল্পনারই
অংশ। কেননা জান্নাত হল কর্মফল লাভের স্থান, কর্মের স্থান নয়। তাছাড়া
জান্নাতে মানুষের বংশ বৃদ্ধির সুযোগ নেই। এজন্য দুনিয়ায় নামিয়ে দেওয়া
যরূরী ছিল।
প্রথম বার আদেশ দানের পরে পুনরায় স্নেহ ও অনুগ্রহ মিশ্রিত আদেশ দিয়ে
বললেন, ‘তোমরা সবাই নেমে যাও’। অতঃপর পৃথিবীতে আল্লাহ খলীফা
হওয়ার (বাকা¡ রাহ ২/৩০; ফাত্বির ৩৫/৩৯) মহান মর্যাদা প্রদান করে বললেন,
‘তোমাদের নিকটে আমার পক্ষ থেকে হেদায়াত অবতীণর্ হবে। যারা তার
অনুসরণ করবে, তাদের জন্য কোন ভয় বা চিন্তার কারণ থাকবে না। কিন্তু
যারা তা প্রত্যাখ্যান করবে ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে, তারা হবে জাহান্নামের
অধিবাসী এবং সেখানে তারা অনন্তকাল ধরে অবস্থান করবে’ (বাকা¡ রাহ ২/৩৮-
৩৯)। উল্ল্যেখ যে, নবীগণ ছিলেন নিষ্পাপ এবং হযরত আদম (আঃ) ছিলেন
নিঃসন্দেহে নিষ্পাপ। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ভুল করেননি। বরং
শয়তানের প্ররোচনায় প্রতারিত হয়ে তিনি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ বৃক্ষের
নিকটবতীর্ হওয়ার নিষেধাজ্ঞার কথাটি ভুলে গিয়েছিলেন। যেমন অন্য
আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘অতঃপর আদম ভুলে গেল
এবং আমি তার মধ্যে (সংকল্পের) দৃঢ়তা পাইনি’ (তো¡ য়াহা ২০/১১৫)। তাছাড়া
উক্ত ঘটনার সময় তিনি নবী হননি বরং পদস্খলনের ঘটনার পরে আল্লাহ
তাকে নবী মনোনীত করে দুনিয়ায় পাঠান ও হেদায়াত প্রদান করেন’ (আ‘রাফ
৭/১২২)।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, ইবলীসের ক্ষেত্রে আল্লাহ বললেন, ‘তুমি জান্নাত থেকে বেরিয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি
অভিশপ্ত’ (হিজর ১৫/৩৪; আ‘রাফ ৭/১৮)। অন্যদিকে আদম ও হাওয়ার ক্ষেত্রে
বললেন, ‘ তোমরা নেমে যাও’ (বাকা¡ রাহ ২/৩৬, ৩৮; আ‘রাফ
৭/২৪)। এতে ইঙ্গিত রয়েছে যে, ইবলীস কখনোই আর জান্নাতে ফিরে
আসতে পারবে না। কিন্তু‘ বনি আদমের ঈমানদারগণ পুনরায় ফিরে আসতে
পারবে ইনশাআল্লাহ।

*** নবীদের কাহিনী***
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×