আমি প্রতিনিয়ত অজস্র মানুষকে ডাস্টবিনে আবর্জনা কুড়াতে দেখি, আমি প্রতিনিয়ত কোন না কোন মানুষকে বস্তা মুরি দিয়ে ফুটপাতে শুয়ে পোকামাকরের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর সুনিপুনতা দেখি।আর প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন আমার কাছে মূল্যহীন মনে হতে থাকে। একটি প্রজাপতির ডানাভাঙা দেখ যে আমি অবিরাম কেদেছিলাম লক্ষীপেঁচার মত, আজ সে আমি একজন ছিঁচকে চোরের হাতভাঙা দেখে নির্বাক দাড়িয়ে রই হয়তোবা একটু স্বাভাবিক খারাপ লাগা নিয়েই। আমি একজন বৃদ্ধ ভিক্ষুক অথবা অদ্ভুত অবয়বের কোন পথশিশুর অসহায় দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার চিরচেনা জীবনকে চালিয়ে নেই।সকালবেলায় পত্রিকার প্রথম পাতায় বড় হরফে বর্বরতার খবর দেখেও দিনটি আমার বেশ চলে যায়।এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ার আমার কাছে প্রতারনা মনে হলেও মাঝে মাঝে নিতান্তই স্বাভাবিক মনে হয়।প্রতিনিয়ত একটু একটু করে ক্ষয় হতে থাকে জীবনের প্রতি আমার ভালোবাসা আমার মূল্যবোধ।আমার নিজের জীবনের এই অন্তহীন মরুময়তা আমাকে এখন আর অতটা দগ্ধ করেনা।হায়রে জীবন!!কৃত্রিম অনুশাসন আর স্ট্যাটাসের মত ক্ল্যাসিকাল অলংকার তোমাকে কোথাও করেছে মূল্যবান আবার কোথাওবা মূল্যহীন।আমি একটু একটু করে শিখে ফেলছি কাদের জীবন কত মূল্যবান, কাদের জীবনের নিরাপত্তা কত প্রয়োজনীয়।আমি সুনিপুন দক্ষতায় সুরম্য প্রাসাদে বাস করা জীবনগুলোর সাথে নোংরা ডাস্টবিনের পাশে শুয়ে থাকা জীবনগুলোর পার্থক্য করে ফেলি, মনে হয় পার্থক্য করার এই অধিকার বুঝি আমার জন্মগত, অন্তত মজ্জাগত!!জীবনে জীবনে তফাত করার এই মানদন্ডের প্রতি দিনে দিনে আমার আস্থা প্রবল থেকে প্রবলতর হয়। কে জানে একদিন হয়ত ব্যাভিচারের দায়ে একজন নপুংশক স্বামীর স্ত্রীকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলার দৃশ্য দেখে আমার চোখ ছলছল করবেনা, শুধু অস্ফুট উচ্চারনের নপুংশকদের দলে সামিল হব এই একজন আামিও।
The Stoning of Soraya M. (2008) নামের এই বিখ্যাত মুভিটি দেখে আমার মনে হয়েছে জীবনের বোধ হয় আরো অন্তরঙ্গ অনুভব প্রয়োজন।
See